দস্যু মুক্ত ঘোষণার চার বছর পর নতুন করে সুন্দরবনে জেলেদের অপহরণ শুরু করা বনদস্যু ‘নয়ন বাহিনী’র সেকেন্ড ইন কমান্ডার মাসুম ফরাজীসহ তিন বনদস্যুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
রোববার দিবাগত ভোর রাতে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের জয়মনিরঘোল সংলগ্ন মৃগামারি খাল থেকে এই পুলিশ তিন বনদস্যুকে গ্রেপ্তার করে। এসময়ে বনদস্যু নয়ন বাহিনীর তিন সদস্যের কাছ থেকে একটি দেশি একনলা বন্দুক ও কয়েকটি রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন, বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার খুড়িয়াখালী গ্রামে বনদস্যু নয়ন বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ডার মাসুম ফরাজী (৩৫) ও হাসান কবিরাজ (৩০) ও বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার চরদুয়ানি গ্রামে মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন হাওলাদার (৫০)।
এলিট ফোর্স র্যাবের অভিযানে একের পর এক বনদস্যু বাহিনীগুলো আত্মসমর্পণে পর ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করেন। এরপর ৪ বছর ধরে শান্ত ছিল সুন্দরবনের পরিবেশ। গত দু’সপ্তাহ ধরে ‘নয়ন বাহিনী’র পরিচয়ের বনদস্যুরা মুক্তিপণের দাবিতে সুন্দরবনে একের পর এক জেলেদের অপহরণ শুরু করে।
গত ১৫ ডিসেম্বর রাতে নয়ন বাহিনীর সদস্যরা সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের বেড়ীর খাল ও হরমাল খাল এলাকা থেকে কাঁকড়া ও মাছ আহরণে থাকা ১৫ জেলেকে মুক্তিপণের দাবিতে অপহরণ করে। অপহরণের ৬ দিন পর মুক্তিপণ দিয়ে দস্যুদের কবল থেকে অপহৃত জেলেরা ছাড়া পায়। বিষয়টি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তৎপর হয়ে ওঠে।
সুন্দরবনে নতুন করে দস্যুতা চালানো নয়ন বাহিনীর সদস্যদের গ্রেপ্তারে বিশেষ অভিযান শুরু করে র্যাব, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা। এরই ধারাবাহিকতায় বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক বিশেষ অভিযান শুরু করেন। রোববার দিবাগত রাতে মোংলা ও রামপাল সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসিফ ইকবালের নেতৃত্বে সুন্দরবনে অভিযানে নামে।
ভোরে পুলিশের এই অভিযানিক দলটি তথ্য প্রযুক্তির সহয়তা নিয়ে বনদস্যু নয়ন বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ডার মাসুম ফরাজীসহ ৩ বনদস্যুকে গ্রেপ্তার ও তাদের কাছ থেকে একটি দেশি একনলা বন্দুক ও কয়েকটি রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে।
সোমবার দুপুরে বাগেরহাট পুলিশ অফিসে এক প্রেস ব্রিফিংএ কে এম আরিফুল হক এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, গ্রেপ্তার এই ৩ বনদস্যুর বিরুদ্ধে জেলেদের অপহরণ ও অস্ত্র আইনে দুইটি মামলা করা হয়েছে। নয়ন বাহিনীর আরও ১০ জন বনদস্যুকে গ্রেপ্তারে পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।
