বসুন্ধরা পেপার মিলসের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা

বসুন্ধরা পেপার মিলসের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বসুন্ধরা পেপার মিলস লিমিটেডের ২৯তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়। মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় বসুন্ধরা ইন্ডাস্ট্রিয়াল হেডকোয়ার্টার-২ এ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এই লভ্যাংশ অনুমোদন করা হয়।

ভার্চুয়াল সভায় সভাপতির বক্তব্যে কোম্পানির উপদেষ্টা ও বিকল্প পরিচালক এ আর রশীদি বলেন, বর্তমানে কাগজ ও কাগজজাত পণ্যের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৮ লাখ ৯৬ হাজার মেট্রিক টন বসুন্ধরা পেপার মিলস লিমিটেডের এদেশের কাগজ ও কাগজজাত পণ্য নির্ভর খাতের প্রায় ৩০ শতাংশ মার্কেট শেয়ার তীব্র প্রতিযোগিতার মধ্যেও ধরে রেখেছে।

একই সঙ্গে দেশে বর্তমান টিস্যু পণ্যের বাৎসরিক চাহিদা প্রায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন, এক্ষেত্রে বসুন্ধরা পেপার মিলের অবদান মোট চাহিদার প্রায় ৭৫ শতাংশ।

তিনি বলেন, মহামারি করোনা ভাইরাসের ধকল বৈশ্বিক অর্থনীতিকে দ্বিগুণ মাত্রায় শ্লথ করেছে। এরই মধ্যে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে অর্থনৈতিক সংকট। এর বিরূপ প্রভাব দেশের অন্যান্য শিল্পের মতো কাগজশিল্পেও পড়েছে।

তা সত্ত্বেও বিগত বছরের তুলনায় কর পরবর্তী নিট মুনাফা ৯ কোটি ৬৬ লাখ টাকা যোগ করে ২৩ দশমিক ৫০ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে রপ্তানি আয় আগের বছরের তুলনায় ১৮৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকা যোগ করে প্রায় ১৮ দশমিক ৩১ শতাংশ বেড়েছে। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে ওই কোম্পানি প্রায় ১ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয় করেছে আলোচ্য বছরে। এবছর কোম্পানির পণ্য ‘বসুন্ধরা টিস্যু’ পরপর চারবার ‘বেস্ট ব্রান্ড অ্যাওয়ার্ড’ খেতাব এবং মিডিয়া ক্যাটাগরির সবচেয়ে সৃজনশীল ব্যবহারের জন্য ‘বেস্ট কমিউনিকেশন অ্যাওয়ার্ড-২০২২’ অর্জন করেছে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারের দূরদর্শিতা, সুযোগ্য নেতৃত্ব ও দক্ষ রাষ্ট্র পরিচালনায় আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সব সূচকেই বাংলাদেশের দৃশ্যমান ঈর্ষণীয় অগ্রগতি, আজ বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, জীবনযাত্রার মান উন্নয়নসহ সারাদেশে প্রতিটি খাতে, প্রতিটি জনপদে উন্নয়নের যে মহাসোপান রচিত হয়েছে তা বিশ্বে বিরল। শেয়ার বাজারে নিবন্ধিত হওয়ার পর অর্থাৎ বিগত পাঁচ বছরে ৩ হাজার ৬৭০ জন কর্মী বাহিনীর সমন্বয়ে পরিচালিত আপনাদের এই কোম্পানি আলোচ্য বছরের ১৩০ কোটি ৯৬ লাখ টাকাসহ আয়কর, আবগারি শুল্ক, সম্পূরক শুল্ক, নিয়ন্ত্রক শুল্ক ও মূল্য সংযোজন কর বাবদ মোট ৪৪৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে পরিশোধ করে সরকারের মিলিনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল ২০৪১ বাস্তবায়নের অগ্রযাত্রায় শামিল হয়েছে।

এ আর রশীদি বলেন, মানুষ তার স্বপ্নের চেয়েও বড়। সবার আন্তরিক সহযোগিতা বিগত দিনের মতো অব্যাহত থাকলে, সক্ষমতার পথে দূর্বার গতিতে এগিয়ে চলা বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার হয়ে কোম্পানির স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা সম্ভব। ওই কোম্পানির উৎপাদিত পণ্য পৌঁছে দিতে চান বিশ্বের প্রতিটি নগর, বন্দর ও জনপদে। মহান বিজয়ের এই মাসে উৎপাদনশীলতার সঙ্গে সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকারবদ্ধ হয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানচ্ছি।

সাধারণ সভায় সংযুক্ত শেয়ারহোল্ডাররা কোম্পানির সার্বিক কর্মকাণ্ড ও বিনিয়োগকারীর স্বার্থ রক্ষা অক্ষুণ্ণ রাখায় পরিচালকমণ্ডলী ও পরিচালনা পর্ষদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও সন্তোষ প্রকাশ এবং সঠিক সময়ে বিধি অনুযায়ী সব তথ্য পাঠানোয় কোম্পানি সচিবকে ধন্যবাদ জানান ।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী, এই সভায় প্রয়োজনীয় বিধি-বিধান সুষ্ঠুভাবে প্রতিপালন করায় নিরপেক্ষ মূল্যায়নকারী হিসেবে মাহাম্মদউল্লাহ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস, চার্টার্ড সেক্রেটারিজ অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কনসালটেন্ট এই কোম্পানিকে প্রত্যয়নপত্র দেওয়া হয়।

সভায় পরিচালকমণ্ডলীর পক্ষে মো. ইমরুল হাসান, মো. নাজমুল আলম ভূঁইয়া, নিরপেক্ষ পরিচালক খাজা আহমেদুর রহমান সভায় সংযুক্ত ছিলেন।  

সভায় আরও সংযুক্ত ছিলেন মো. মুস্তাফিজুর রহমান, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মির্জা মুজাহিদুল ইসলাম, চিফ অপারেটিং অফিসার মো. কামরুল হাসান, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা, বিধিবদ্ধ নিরীক্ষকরা এবং কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সাধারণ সভাটি সঞ্চালনা করেন কোম্পানি সচিব এম মাজেদুল ইসলাম।

উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শেয়ারহোল্ডাররা বার্ষিক এ সভায় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সংযুক্ত থেকে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর মতামত প্রেরণ করে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। বার্ষিক সাধারণ সভায় ৩০ জুনে সমাপ্ত আর্থিক বৎসরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনঃ সব শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ১০ শতাংশ হারে নগদ লভ্যাংশ, পরিচালকদের পুনঃনির্বাচনসহ কোম্পানির ২০২২-২৩ আর্থিক বছরের জন্য বিধিবদ্ধ নিরীক্ষকরা নিয়োগ বিষয়ক আলোচ্যসূচিগুলো সর্ব সম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়।