আল-আকসা চত্বরে ইসরায়েলের কট্টরপন্থী মন্ত্রী

সংগৃহীত ছবি

আল-আকসা চত্বরে ইসরায়েলের কট্টরপন্থী মন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক

ইসরায়েলের উগ্রপন্থী জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার-বেন-গেভির পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত মুসলমান ধর্মালম্ভীদের পবিত্র আল-আকসা মসজিদের চত্বরে প্রবেশ করেছেন। মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) ব্যাপক নিরাপত্তার মধ্যে দখলদারি রাষ্ট্রের এই মন্ত্রী মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্রতম স্থানে যান। এ ঘটনা দৃশ্যত ফিলিস্তিনিদের প্রতি নজিরবিহীন উসকানি বলে মনে করা হচ্ছে। খবর আল-জাজিরার।

গেভির এই সফরটি তাদের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সরাসরি সংঘর্ষ আরও বেগবান করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বেন-গেভির এই সফরকে ঘিরে আগেই একটি বিবৃতি দিয়েছে হামাস। গেভির এই সফর রেড লাইন অতিক্রম করবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। আর আল-আকসা সফরের পর এক বিবৃতিতে গেভির বলেন, ‘আমাদের সরকার হামাসের হুমকির কাছে আত্মসমর্পণ করবে না।

’ একইসঙ্গে আল-আকসায় ইহুদিদের প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

সফরের পর এক টুইট বার্তায় গেভির বলেন, ‘পবিত্র এই স্থান সবার জন্য উন্মুক্ত। যদি হামাস মনে করে, আমাকে হুমকি দিয়ে থামানো যাবে তাহলে তারা ভুল করছে। তাদের বুঝা উচিত সময়ের অনেক পরিবর্তন হয়েছে। ’

দীর্ঘদিন ধরে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর আরবি-ভাষার মুখপাত্র হিসেবে কাজ করেছেন ওফির গেন্ডেলম্যান। তিনি বলেন, ‘বেন-গেভির প্রস্থানের পরও পবিত্র স্থানের পরিস্থিতি একদম শান্ত ছিল। ’

সোমবার আল-আকসা পরিদর্শনে যাওয়ার কথা ছিল বেন-গেভির। তবে এ খবরে মুসলমানদের পবিত্র স্থানে জড়ো হয় ফিলিস্তিনিরা। এর জেরে সফর বাতিল করে গেভির। সোমবারের পরিবর্তে মঙ্গলবার খুব ভোরে আল-আকসায় যান ইসরায়েলের এই কট্টরপন্থী মন্ত্রী।

উগ্রপন্থী মন্ত্রী গেভির এই সফরের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এটিকে নজিরবিহীন উসকানি ও সংঘাতের একটি বিপজ্জনক বৃদ্ধি হিসেবে দেখছে তারা।

গেভির সফরকে নিয়ে সোমবারই উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইসরায়েলের বিরোধীদলীয় নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইয়ার লাপিদ। তিনি বলেছিলেন, ‘এই সফর সহিংসতার দিকে দুদেশকে ঠেলে দিবে। এটি একটি ইচ্ছাকৃত উসকানি যা জীবনকে বিপদে ফেলবে। ’

পবিত্র নগরী মক্কা ও মদিনার পর আল-আকসা মসজিদকে ইসলামের তৃতীয় সর্বোচ্চ পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী, আল-আকসায় শুধুমাত্র মুসলিমরা ইবাদত করতে পারবেন। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে সেখানে জোর করে ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের উপাসনা করার সুযোগ দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে অবৈধ ইসরায়েলি দখলদাররা। এছাড়া আল-আকসার পাশে নিজেদের উপাসনালয়ও বানাতে চায় তারা।

ফিলিস্তিনিদের ভয়, এর মাধ্যমে তাদের সঙ্গে হওয়া চুক্তি লঙ্ঘন করতে চাইছে ইসরায়েলিরা। উগ্রপন্থী বেন-গিভির আল-আকসা চত্বরে উপাসনা করেছেন কি না এটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

সর্বশেষ ২০০০ সালে ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল শ্যারন আল-আকসা মসজিদে প্রবেশ করেছিলেন। তার সেই সফরের জেরে ফিলিস্তিনে দ্বিতীয় ইন্তিফাদা বা বিদ্রোহ দেখা দেয়। বেন-গেভিরের উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড আবারও বিদ্রোহের শঙ্কা তৈরি করেছে।

হামাসের মুখপাত্র হাজেম কাসেম আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘বেন-গেভিরের পদক্ষেপ আমাদের পবিত্রতার বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী দখলদারিত্বের আগ্রাসন। আল-আকসা মসজিদ ফিলিস্তিনি, আরব ও ইসলামের সম্পত্তি ছিল এবং থাকবে। কোনো ফ্যাসিবাদী শক্তি বা ব্যক্তি এই সত্যকে পরিবর্তন করতে পারবে না। ’

news24bd.tv/মামুন