'ঘোষিত সময়ের আগেই সবার ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে'

গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা

'ঘোষিত সময়ের আগেই সবার ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে'

নিউজ টোয়েন্টিফোর অনলাইন

বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম ২০২১ সালে সবার ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিবো। ইতোমধ্যে ৯২ শতাংশ জনগণ বিদ্যুতের আওতায় চলে এসেছে। আশা করছি ঘোষিত সময়ের আগেই সবার ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে।

শনিবার ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেডের (ইডব্লিউএমডিজিএল) কনফারেন্স রুমে ডেইলি সান আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন।


প্রতিমন্ত্রী বলেন, এই মুহূর্তে সাশ্রয়ী মূল্যে ও মানসম্মত বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রধান চ্যালেঞ্জ। পিক আওয়ার, অফ পিক আওয়ারের মধ্যে বিদ্যুৎ চাহিদার ব্যবধান অনেক বেশি। এটা কমিয়ে আনা জরুরি। এজন্য দিনের বেলায় বিদ্যুতের ব্যবহার বাড়িয়ে রাতে কমিয়ে দিতে হবে।
বিশ্বের অনেক দেশেই সন্ধ্যা ৭টা-৮টার মধ্যে দোকানপাট- শপিং মল বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু আমাদের সন্ধ্যার পর বিদ্যুৎ চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। দুই সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ চাহিদা ১০ হাজার মেগাওয়াট হয়ে গেলে তা ম্যানেজ করা জটিল। অফ পিকেও তখন অনেক প্লান্ট চালু রাখতে হয়। আমাদের অফিস টাইম এগিয়ে আনা যায় কি না সেটা ভেবে দেখার সময় হয়েছে।

সেমিনারে বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস বলেন, আমরা অনেক এগিয়ে আছি এ কথা বলতে পারি। এক সময় বলা হতো কুইক রেন্টাল দেশকে দেউলিয়া করবে। কিন্তু না কিছুই হয়নি। দেশ বরং এগিয়ে গেছে।

আলোচনা আসা লোডশেডিংয়ের জবাবে সচিব বলেন, রংপুর-রাজশাহী অঞ্চলে একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ থাকায় কিছুটা লোডশেডিং হচ্ছে। এটা আমরা স্বীকার করছি। অন্য কোথাও লোডশেডিং নেই। তবে কোথাও কোথায় বিতরণ ত্রুটির কারণে বিঘ্ন হচ্ছে। অনেকে এটাকে লোডশেডিং বলে, আমরা এটাকে লোডশেডিং বলতে পারছি না।

পাওয়ার সেলের ডিজি মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ২০২১ সালের যে রূপকল্প ঘোষণা করা হয় তার অনেক কাছে পৌঁছে গেছি। আমরা এখন ২০৪১ সালের নতুন লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ শুরু করেছি। ২০৪১ সালে ৪৮ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন হলেও আমরা ৬০ হাজারের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছি। এতে প্রায় ৮২ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন হবে। আমরা মনে করছি এটা পারবো। আমাদের  এখন চ্যালেঞ্জ সঞ্চালন ও বিতরণ লাইন। আমরা সে বিষয়ে কাজ শুরু করেছি। এতে কিছুটা সময় লাগছে বলে মন্তব্য করে মোহাম্মদ হোসেন।

পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মঈন উদ্দিন বলেন, আমরা ৯০ শতাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণের দায়িত্বে রয়েছি। ২০১৯ সালের মধ্যে শতভাগ বিদ্যুতায়নে সক্ষম হবো। হবে মানসম্মত বিদ্যুৎ সরবরাহে আরও কিছুটা সময় দিতে হবে।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম. তামিম বলেন, এক সময় ৮৫ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন হতো গ্যাসে। এখন মাত্র ৪৯ শতাংশ গ্যাসে উৎপাদন হচ্ছে। এখন এলএনজি আনা হচ্ছে। এতে বিদ্যুতের দাম বেড়ে যাবে। এখন ৬টাকার মতো দাম, আমার মনে হচ্ছে তিন-চার বছরের মধ্যে ৮ টাকায় চলে যাবে। এটা কীভাবে সামাল দিবে এখনই ভাবা দরকার।

ম. তামিম বলেন, খারাপ ওয়েদারের কারণে অনেক সময়ে ভাসমান এলএনজি স্টেশন থেকে সরবরাহ বিঘ্ন হতে পারে। অবশ্যই ল্যান্ডবেজড এলএনজি স্টেশনের দিকে যেতে হবে। না হলে ঝুঁকি থেকেই যাবে। বড় বড় কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র হচ্ছে। কিন্তু সে তুলনায় দক্ষ প্রকৌশলী রেডি হচ্ছে বলেও সমালোচনা করেন ম. তামিম।

প্রফেসর ইজাজ হোসেন বলেন, আমরা মেগাওয়ার্ট গেমে অনেক সফল। এখন গেমস শিফট করতে হবে। এখানে অনেক ঘাটতি রয়েছে। লোডশেডিং হচ্ছে কিন্তু কেনো স্বীকার করা হয় না। এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ইজাজ হোসেন।

ডেইলি সানের সম্পাদক এনামুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে গোলটেবিল আলোচনায় অন্যদের মধ্যে অংশ নেন, বাংলাদেশ প্রতিদিন’র নির্বাহী সম্পাদক পীর হাবিবুর রহমান, নিউজটোয়েন্টিফোরের নির্বাহী সম্পাদক হাসনাইন খুরশিদ, কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির এমডি গোলাম কিবরিয়া, বিজিএমইএ’র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান, সামিট পাওয়ারের এমডি আব্দুল ওয়াহেদ প্রমুখ।

সম্পর্কিত খবর