বৈশ্বিক ইতিহাসে পঞ্চম উষ্ণ বছর ছিল ২০২২

তীব্র তাপে শুকিয়ে গেছে সূর্যমুখী গাছ (ছবি: গেটি ইমেজ)

বৈশ্বিক ইতিহাসে পঞ্চম উষ্ণ বছর ছিল ২০২২

অনলাইন ডেস্ক

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়েছে গোটা বিশ্বেই। তবে গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে আবহাওয়ার এক ভিন্ন রূপ দেখেছে ইউরোপের মানুষজন। তীব্র তাপপ্রবাহের সঙ্গে সঙ্গে শুকিয়ে গিয়েছিল অঞ্চলটির বেশিরভাগ নদী। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবেই প্রকৃতির এমন আচরণ, দাবি বিশেষজ্ঞদের।

গত বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে সর্বকালের সবচেয়ে উষ্ণ গ্রীষ্ম রেকর্ড করেছে ইউরোপ। বৈশ্বিক ইতিহাসে পঞ্চমতম উষ্ণ বছরও ছিল এটি। উষ্ণায়নের রেকর্ডের বছরে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে মেরু অঞ্চল ও ইউরোপে। মহাদেশটির ১২টি দেশে মাসিক তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙেছে।

এক সমীক্ষার বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের জলবায়ু পর্যবেক্ষণ সংস্থা কোপার্নিকাস এ সমীক্ষা চালিয়েছে।

বিবিসি বলছে, গত বছর ইউরোপ তার উষ্ণতম গ্রীষ্মের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। গত তিন দশকে ইউরোপের তাপমাত্রা গড়ে দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে, যা অন্যসব মহাদেশের তুলনায় অনেক বেশি। গত আট বছর এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা সবচেয়ে উষ্ণ আট বছর।

কোপার্নিকাসের বিজ্ঞানীরা বলছেন, গত বছর বিশ্ব উষ্ণায়নের একটি ধারাবাহিকতা দেখেছি আমরা। এই পরিবর্তন স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। সমুদ্র থেকে স্থলে তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণ বেশি।

গবেষকরা বলছেন, গত বছর বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১ দশমিক ২ সেলসিয়াসের কাছাকাছি বেড়েছিল। বিশ্বব্যাপী শিল্পায়নের সূচনা হিসেবে দেখা ১৮৫০-১৯০০ সাল পর্যন্ত তাপমাত্রার বাড়ার এ প্রবণতা দেখা দিয়েছিল।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গ্রীষ্মকালীন তাপপ্রবাহ ও তীব্র খরার কারণে যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিম ইউরোপের অনেক দেশে তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙে গেছে। অক্টোবরে আগের বছরগুলো থেকে গড় তাপমাত্রা বেশি ছিল ২ সেলসিয়াস। মাসটিতে অন্যান্য সময়ে শীতল তাপমাত্রা থাকলেও এবার ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। পশ্চিম ইউরোপে তাপমাত্রা বাড়লে উল্টোটা ঘটেছে উত্তর-পূর্ব দেশগুলোতে। এই অঞ্চলের দেশগুলোতে শীতলতা দেখা গিয়েছে।

কোপার্নিকাসের সহকারী পরিচালক সামান্থা বুরগ্রেস বলেন, ‘গ্রীষ্মে আমরা যে তাপপ্রবাহ দেখেছি একই রকম দেখা যাচ্ছে শীত ও শরতে। নতুন বছরের সময়কালেও আমরা যে অবস্থা দেখেছি তা অনেকেই দীর্ঘদিন মনে রাখবে। ’

ইউরোপ ছাড়াও মধ্যপ্রাচ্য, চীন পাকিস্তান এবং ভারতের কিছু অংশে তাপমাত্রা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে বলে কোপার্নিকাসের সমীক্ষায় বলা হয়। এমনকি সাইবেরিয়াতে গড় তাপমাত্রা বেড়েছে ৩ সেলসিয়াস পর্যন্ত। গত সেপ্টেম্বরে গ্রিনল্যান্ডের সাধারণ গড়ের চেয়ে ৮ সেলসিয়াস বেশি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। অন্যদিকে অ্যান্টার্কটিকার বোস্টকে ৬৫ বছরের ইতিহাস ভেঙে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা মাইনাস ১৭ দশমিক ৭ সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।

news24bd.tv/মামুন