জমি নিয়ে বিরোধের জেরে গাছের সঙ্গে বেঁধে শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার সুফিয়া বেগমের। বুধবার সকাল ৭টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন। এই ঘটনায় ওই নারীর দেবর লিয়াকত মোল্লাকে গ্রেপ্তার করছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার (১০ জানুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে কাশিয়ানী উপজেলার সাজাইল ইউনিয়নের বাঘঝাপা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য ইউসুফ আলী মোল্লার স্ত্রী সুফিয়া বেগমের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অগ্নিদগ্ধ সুফিয়া বেগম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, স্বামীর পৈত্রিক সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই দেবর লিয়াকত মোল্লার সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল। লিয়াকতও অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য। তিনি তার সম্পত্তির অংশ বিক্রি করে গ্রাম থেকে চলে গেছেন। কিন্তু এখনও সম্পত্তি দাবি করছেন।
সুফি বেগম আরও বলেন, ‘সকালে লিয়াকত মোল্লা ও আমার আরেক দেবর আব্দুর রহমানের ছেলে সোহেল বাড়িতে আসে। এ সময় আমি বাড়িতে একা ছিলাম। তারা আমাকে বসতঘর থেকে টেনে-হিঁচড়ে বাইরে বের করে এবং উঠানের পেয়ারা গাছের সঙ্গে আমার হাত-পা বেঁধে ফেলে। পরে আমার গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। আমি চিৎকার করলে প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসে। তারা আমাকে কাশিয়ানী হাসপাতালে নিয়ে আসে। আমার সারা শরীর পুড়ে গেছে। ’
এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে ওই নারীর ভাই আখতার হোসেন বাদী হয়ে কাশিয়ানী থানায় লিয়াকতসহ দুই জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও দুই-তিন জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
এদিকে এ ঘটনায় ওই নারীর দেবর অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য লিয়াকত মোল্লাকে (৫০) মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ঢাকার কদমতলা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে কাশিয়ানী থানা পুলিশ।
ওসি ফিরোজ আলম বলেন, ‘এ ঘটনার পরপরই কাশিয়ানী থানা পুলিশ লিয়াকতকে গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। গোপালগঞ্জের পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকার নেতৃত্বে একদল পুলিশ কাশিয়ানী থানায় অবস্থান করে আসামির লোকেশন ট্যাকিং করেন। তারপর তাঁকে গ্রেপ্তারে এসআই দেওয়ান সাদেকুল ইসলামের নেতৃত্বে ঢাকায় অভিযানরত কাশিয়ানী থানা পুলিশের টিমকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। ’
লিয়াকতকে রাতেই কাশিয়ানী থানায় আনা হয়। বুধবার তাকে গোপালগঞ্জের আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।
news24bd.tv/ইস্রাফিল