৬৪ জেলাকে ভাগ করে দুই ভাগে ইজতেমা করা যায় কি না- সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। এ বছর শুরুর আগেই যেভাবে বিশ্ব ইজতেমা প্রাঙ্গণে যেভাবে ‘ঠাঁই নাই’ দশা হয়েছে, তাতে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই বার্ষিক সম্মিলনের বিন্যাস নিয়ে নতুন করে ভাবার কথা বলেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী।
জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, ‘ইজতেমায় জনসমাগম যেভাবে বাড়ছে, তাই ইজতেমা নিয়ে অবশ্যই নতুনভাবে চিন্তা করার সময় এখন এসেছে। আমরা অবশ্যই নতুন করে ভাববো, যাতে আগামী বছর মুসল্লিদের কষ্ট না হয়।
শুক্রবার টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানের উত্তর পাশে হামদর্দ ল্যাবরোটরিজের ফ্রি-মেডিকেল ক্যাম্পের উদ্বোধন করতে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
তিরি বলেন, ‘আগের মতো করে ৬৪ জেলার অর্ধেক এক পর্বে বাকি অর্ধেক জেলার মুসুল্লিদের জন্য আরেক পর্বে করা যায় কি-না তা নিয়ে ইজতেমার দুই পক্ষের মুরুব্বীদের সঙ্গে নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করবো। কিন্তু ইজতেমায় দুই গ্রুপ এবং দুই পর্বেই সকল জেলার মুসল্লিদের অংশগ্রহণের ফলে স্থান সংকুলান হচ্ছে না, আমাদের কার্যক্রমও সুচারুভাবে করা যাচ্ছে না।
শুক্রবার সকালে আম বয়ানের মধ্য দিয়ে এবারের ইজতেমার প্রথম পর্বের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। রোববার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে ইজতেমার প্রথম পর্ব শেষে ২০ থেকে ২২ জানুয়ারি হবে দ্বিতীয় পর্ব।
তীব্র শীতের মধ্যেই এবার ইজতেমা শুরুর দুই-তিন দিন আগে থেকে টঙ্গীর পথে মানুষের ঢল নামলে সড়কে যানজট সৃষ্টি হয়। বৃহস্পতিবারই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় ইজতেমা ময়দান।
মাঠে জায়গা না হওয়ায় অনেকে রাস্তার পাশে ও ফুটপাতে ত্রিপল বা পলিথিনের সামিয়ানা টাঙিয়ে তার নিচে অবস্থান নিয়েছেন। শুক্রবারও বাস, ট্রাক, ট্রেনের চড়ে, অনেকে পায়ে হেঁটে গাজীপুরের টঙ্গীতে এসেছেন ইজতেমায় যোগ দিতে।
প্রতিবছর বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেয় কয়েক লাখ মানুষ। তাদের মধ্যে তাবলিগ জামাতের বিদেশি অনুসারী থাকেন ৩০ থেকে ৪০ হাজার। তাবলিগ জামাতের নিয়মিত অনুসারী নন, এমন অনেকও বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাতে শামিল থাকতে চান।
বছর বছর লোক বাড়তে থাকায় ২০১১ সাল থেকেই দুই ভাগে ইজতেমার আয়োজন শুরু করেন তাবলিগের মুরুব্বিরা। সে সময় ৬৪ জেলারকে দুই ভাগ করে দুইবারে ইজতেমায় অংশ নেওয়ার সুযোগ রাখা হতো।
কিন্তু কাকরাইলের মাওলানা জোবায়ের এবং দিল্লি মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা বিভেদে জড়িয়ে পড়লে ২০১৯ সালে দুই পক্ষকে দুই ভাগে ইজতেমা করার সুযোগ দেওয়া হয়। মাঝে মহামারির কারণে দুই বছরের বিরতি শেষে এবারও সেভাবেই হচ্ছে।
এবার মাওলানা জোবায়েরের অনুসারীরা প্রথম পর্বে ১৩-১৫ জানুয়ারি এবং মাওলানা সাদ পক্ষের অনুসারীরা ২০-২২ জানুয়ারি ইজতেমা পরিচালনা করবেন।
news24bd.tv/ইস্রাফিল