যুক্তরাষ্ট্রে ক্যান্সারে মৃত্যুহার কমেছে ৩৩ শতাংশ
যুক্তরাষ্ট্রে ক্যান্সারে মৃত্যুহার কমেছে ৩৩ শতাংশ

সংগৃহীত ছবি

যুক্তরাষ্ট্রে ক্যান্সারে মৃত্যুহার কমেছে ৩৩ শতাংশ

অনলাইন ডেস্ক

মরণব্যাধি ক্যান্সার। এই ঘাতক ব্যাধির ছোবলে প্রতি মুহূর্তে হারিয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার সম্ভাবনাময় প্রাণ। হৃদরোগজনিত জটিলতার পর ক্যান্সারই আধুনিক সময়ে মানুষের সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর কারণ। তবে, সুখবর এসেছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে।

দেশটিতে ক্যান্সারে মৃত্যুর হার ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত কমে এসেছে, এমনটা জানাচ্ছে নতুন এক গবেষণা।

গবেষণা অনুযায়ী, ১৯৯১ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ক্যান্সারে মৃত্যুর হার কমেছে ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত। মরণব্যাধি থেকে রক্ষা পেয়েছেন অন্তত ৩৮ লাখ মার্কিনি।  এই গবেষণাটি চালিয়েছে আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটি।

তাদের মতে, তিন দশকে উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে মৃত্যুর সংখ্যা। এর জন্য তিনটি কারণ দেখিয়েছে সংস্থাটি। সেগুলো হল, প্রাথমিক অবস্থায় ক্যান্সার শনাক্ত হওয়া, ধূমপান কমে যাওয়া ও চিকিৎসার উন্নতি। এছাড়া এইচপিভি টিকা নেওয়ায় ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী কমেছে বলেও জানিয়েছে তারা।

আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির প্রধান নির্বাহী কারেন নুদেসেন বলেন, ‘মৃত্যুর সংখ্যা কমে যাওয়া সত্যিই আশাব্যঞ্জক। প্রাথমিক অবস্থায় শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা বিজ্ঞানের নতুন উদঘাটনের ফলে ২০০ প্রকারেরও বেশি ক্যান্সারের চিকিৎসা হচ্ছে দেশটিতে। ’

গবেষণা অনুসারে, ২০১৯-২০২০ সালে ক্যান্সারে মৃত্যুহার কমেছিল মাত্র দেড় ভাগ। এর জন্য কোভিডকে দায়ী করা হয়েছে। তারা বলছে, মহামারির সময়ে ক্যান্সার পরীক্ষা ও জটিল রোগীদের চিকিৎসায় ব্যাঘাত ঘটেছিল; যার জন্যই মৃত্যু বেড়েছিল।

গত বৃহস্পতিবার মেডিকেল জার্নালে প্রকাশ পাওয়া প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, ক্যান্সারে মৃত্যুর হার কমলেও বিভিন্ন জনগোষ্ঠীতে ব্যাপকভাবে রোগটি হানা দিচ্ছে।  মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি কমেছে ২০১২ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত। এই সাত বছরে মৃত্যুর হার কমেছিল ৬৫ শতাংশ পর্যন্ত। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সুস্থ হয়েছে জরায়ু ক্যান্সারে আক্রান্ত নারীরা।

এই গবেষণার প্রধান লেখক রেবেকা সিয়েগেল এক বিবৃতিতে বলেন, ‘জরায়ু ক্যান্সারে মৃত্যুর হার কমা সত্যিই আশা দেখাচ্ছে। সম্ভবত এইচপিভি টিকার জন্যই এমনটা হচ্ছে। ’

তবে ক্যান্সারের বিভিন্ন ধরণ ফের বাড়ছে বলে গবেষণায় বলা হয়। উদহারণস্বরুপ বলা যায়, দুই দশক কমার পর ২০১৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত পুরুষদের প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্তের হার বেড়েছে ৩ শতাংশ।

প্রতিবেদনে শ্বেতাঙ্গ ও কৃষাঙ্গদের বৈষ্যম্যের চিত্র ফুটে উঠেছে। গবেষণা অনুযায়ী, প্রোস্টেট ক্যান্সারে শ্বেতাঙ্গ পুরুষদের তুলনায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে কৃষ্ণাঙ্গরা। তাদের আক্রান্তের পরিমাণ অন্যদের তুলনায় ৭০ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে শ্বেতাঙ্গ নারীদের স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি। তবে কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের এই ধরণের ক্যান্সারে মারা যাওয়ার আশঙ্খা বেশি।

গত বছর ক্যান্সারে মৃত্যুর হার কমাতে ‘ক্যান্সার মুনশ্যুট’ নামে একটি ক্যাম্পিংয়ের উদ্বোধন করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আগামী ২৫ সালের মধ্যে ক্যান্সারে মৃত্যুর হার ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমানোর লক্ষ্য এই ক্যাম্পিংয়ের। গত বৃহস্পতিবার ক্যান্সার মুনশ্যুটের সমন্বয়কারী ডা. ড্যানিয়েল কার্নিভাল এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ক্যান্সার সোসাইটির নতুন প্রতিবেদন আমাদের অগ্রগতিকে প্রদর্শন করেছে। ’

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান 

news24bd.tv/মামুন