পানের দোকান করে সংসার চালাচ্ছে ৮ম শ্রেণির রাফিয়া
পানের দোকান করে সংসার চালাচ্ছে ৮ম শ্রেণির রাফিয়া

৮ম শ্রেণির ছাত্রী রাফিয়া সুলতানা

পানের দোকান করে সংসার চালাচ্ছে ৮ম শ্রেণির রাফিয়া

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি:

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে জীবনযুদ্ধে অসুস্থ্য পিতার পানের দোকানে সহযোগিতা করছে ৮ম শ্রেণির ছাত্রী রাফিয়া সুলতানা (১৪)। রাফিয়ার পিতা রফিকুল ইসলাম (৫৮) চাঁপাইনবাবগঞ্জ শিবগঞ্জ উপজেলার উজিরপুর ইউনিয়নের মোল্লাটোলা গ্রামের বাসিন্দা হলেও সর্বনাশা পদ্মা নদীর ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে নাচোলের মুরাদপুরে ভাড়া যায়গায় বসবাস করছেন।  

এদিকে জীবন ধারণের জন্য রফিকুল ইসলাম নাচোল বাসস্ট্যান্ডে ইসলামীয়া হোটেলের সামনে পানের দোকান দিয়ে ৪ মেয়েকে নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন। সম্প্রতি স্ট্রোকে অক্রান্ত হন তিনি।

পরে মেয়েদের সহযোগিতায় কিছুটা সুস্থ্য হলেও বাধ্য হয়ে স্কুলের লেখাপড়া শেষে অসুস্থ্য পিতাকে সহযোগিতা করতে পিতার পানের দোকানে দু’বেলা বসতে হচ্ছে ছোট মেয়ে রাফিয়া সুলতানাকে। মা-বাবার ছোট মেয়ে রাফিয়া সুলতানা নাচোল খুরশেদমোল্লা সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে ৮ম শ্রেণিতে পড়া-লেখা করছে। রাফিয়ার কোন ভাই নেই সংসারে তারা ৪ বোন। এরমধ্যে বড় বোন রাফিজা সুলতানা বিবাহিত।
 

তবুও সে মেধা ও অদম্য মনোবল নিয়ে স্বামী ও পিতার আশ্বাসে গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়ো টেকনোলজি এণ্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ালেখা করছে। মেজো বোন ফাওজিয়া খাতুন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সরকারি কলেজে বিএসসি পড়ছে এবং সেজো বোন রিজিয়া সুলতানা এ বছর নাচোল খুরশেদ মোল্লা সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে নাচোল মহিলা কলেজে এইচএসসিতে ভর্তি হয়েছে।  

এ বিষয়ে ছোট মেয়ে রাফিয়া সুলতানা নিউজ টোয়েন্টিফোরকে বলেন, মেয়েদের লেখাপড়া ও সংসার খরচ চালাতে হিমশিম খেয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়েছেন তার পিতা রফিকুল ইসলাম। তাই বাধ্য হয়ে লেখা-পড়ার পাশাপাশি অসুস্থ্য পিতাকে পানের দোকানে নিয়মিত সহযোগিতা করে অসছেন তিনি। জীবন সংগ্রামী কিশোরী রাফিয়া সুলতানা পিতাকে ছেলের অভাব বুঝতে দিতে চায় না। তাই পান দোকানে সহযোগিতা ও মনোবল জুগিয়ে সেও ভালো ফলাফল করে ভালো মানুষ হতে চায়। অসুস্থ্য পিতাকে সহযোগিতা করতে জীবন সংগ্রামে নেমেছে কিশোরী রাফিয়া সুলতানা।  

অসুস্থ রফিকুল ইসলাম নিউজ টোয়েন্টিফোরকে জানান, সম্প্রতি স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে ছোট মেয়ে রাফিয়া আমাকে ছেলের মত করে পানের দোকানে সহযোগিতা করছে। পান দোকানের আয় দিয়েই এখন আমার সংসার ও চিকিৎসা চলছে।    

news24bd.tv/কামরুল

সম্পর্কিত খবর