এবার কুড়িগ্রামে শিক্ষককে পেটালেন বিএনপি নেতা

সংগৃহীত ছবি

এবার কুড়িগ্রামে শিক্ষককে পেটালেন বিএনপি নেতা

অনলাইন ডেস্ক

কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে জেলার এক বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত বিএনপির ওই নেতার নাম মো. মাসুদ রানা (৪৮)। তিনি কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সহছাত্রবিষয়ক সম্পাদক। এক শিক্ষার্থীর নামে একাধিক ভর্তির আবেদন বাতিল করার ঘটনায় বিএনপি নেতা মাসুদ রানা কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক আবদুল হাই সিদ্দিকীকে (৫৩) পিটিয়েছেন বলে থানায় করা অভিযোগে বলা হয়েছে।

পুলিশ ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, একই শিক্ষার্থীর নামে একাধিক আবেদন পড়ায় বিএনপি নেতা মাসুদ রানার ছেলেসহ ৪২ জনের ভর্তি বাতিল হয়। এ বিষয়ে জানতে সাংবাদিক এবং ভর্তি বাতিল হওয়া কয়েকজন অভিভাবক নিয়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে যান তিনি। সেখানে প্রধান শিক্ষক, আবদুল হাই সিদ্দিকীসহ অন্য শিক্ষকেরা সরকারি পরিপত্র অনুযায়ী ভর্তি বাতিল করা হয়েছে বলে জানালে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন মাসুদ রানা ও অন্য অভিবাবকরা। একপর্যায়ে আবদুল হাই সিদ্দিকীকে ধাক্কা দিয়ে কক্ষের এক কোনায় নিয়ে তাঁকে কিলঘুষি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করেন মাসুদ রানা।

তাৎক্ষণিকভাবে অন্য শিক্ষকেরা এগিয়ে তাঁকে রক্ষা করেন। এ ঘটনার দৃশ্য সিসিটিভির ফুটেজেও দেখা গেছে।

শারীরিক লাঞ্ছনার শিকার শিক্ষক আবদুল হাই সিদ্দিকী বলেন, মাসুদ রানা তাঁকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে কক্ষের একটি কোনায় নিয়ে কিলঘুষি মেরে বিভিন্ন স্থানে জখম করেন। এতে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

এ ঘটনায় শিক্ষক আবদুল হাই সিদ্দিকী গতকাল কুড়িগ্রাম সদর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযুক্ত বিএনপি নেতা মাসুদ রানা বলেন, আমার সন্তানসহ ৪২ জনের  ভর্তি কেন বাতিল হয়েছে তা জানতে প্রধানশিক্ষকের সঙ্গে দেখা করতে যাই।  সেখানে তাঁদের সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়েছে। আমি কোনো শিক্ষকের গায়ে হাত তুলিনি।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিয়াসমিন আরা হক বলেন, ‘একই শিক্ষার্থীর নামে একাধিক আবেদন পড়ায় মন্ত্রণালয় থেকে ৪২ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করে দেওয়া হয়। সে বিষয়ে কথা বলতে কয়েকজন অভিভাবক আমার কক্ষে আসেন এবং আমার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এর প্রতিবাদ করায় বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আবদুল হাই সিদ্দিকীর ওপর তাঁরা চড়াও হন এবং ধাক্কাতে ধাক্কাতে এক কোনায় নিয়ে গিয়ে তাঁকে কিলঘুষি মারেন। ’

তিনি আরও জানান, বিদ্যালয়ের সভাপতি কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের নির্দেশে মাসুদ রানাসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন আহত শিক্ষক আবদুল হাই সিদ্দিকী।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়টির সভাপতি কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, শিক্ষককে মারধর ও লাঞ্ছনার বিষয়টি জেনেছেন। গতকাল কুড়িগ্রাম সদর থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। আজ এডিসি জেনারেল ও কুড়িগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আহত শিক্ষককে আইনি সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

কুড়িগ্রাম সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খান মো. শাহরিয়ার বলেন, অভিযোগ পেয়ে বিদ্যালয় পরিদর্শন করে সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে আসা হয়েছে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিত পুলিশ তদন্তকাজ শুরু করেছে।

news24bd.tv/আজিজ