চাঁদাবাজি ও নাশকতা মামলায় সাংবাদিক গ্রেপ্তার

চাঁদাবাজি ও নাশকতা মামলায় সাংবাদিক গ্রেপ্তার

সাতক্ষীরায় সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁকে আটক করেছে পুলিশ। দেবহাটা থানার একটি চাঁদাবাজি ও একটি নাশকতা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। ঘের ব্যবসায়ী কাজী সুরুজ ওয়ারেশের দায়ের করা চাঁদাবাজি ও দেবহাটা থানার এসআই চাঁদ আলীর দায়ের করা বিস্ফোরক ও নাশকতা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এই মামলায় সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁ ছাড়াও কালিগঞ্জ থানার মোতাকাব্বিরের ছেলে ফারুক হোসেন ও দেবহাটা থানার টেপুখালি গ্রামের ফজর আলী গাজীর ছেলে রেজাউল করিম এবং দেবহাটা থানার চালতেতলা গ্রামের নওশের হালদারের ছেলে লুৎফর রহমানসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২০/২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁ সাতক্ষীরার সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বিঞ্চুপুর গ্রামের মদনমোহন খাঁর ছেলে। রঘুনাথ খাঁ দীপ্ত টেলিভিশন ও প্রজন্ম একাত্তর পত্রিকার সাতক্ষীরা প্রতিনিধি।

এদিকে মঙ্গলবার সাতক্ষীরা প্র্রেসক্লাবে এসে রঘু নাথ খাঁর স্ত্রী সুুপ্রিয়া রাণী খাঁ ও তার আত্মীয় সস্বজনরা আভিযোগ করে সাংবাদিকদের জানান, রঘুু নাথ খাঁকে ডে নাইট কলেজ মোড় এলাকা থেকে সাদা পোশাকধারী পুলিশ উঠিয়ে নিয়ে গেছে। তাকে পাওয়া যাচ্ছে না বলেও অভিযোগ করেন।

সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের দেওয়া প্রেসনোট ও দেবহাটা থানার ওসি শেখ ওবায়েযদুল্লাহ জানান, দেবহাটা উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের গোলাম ওয়ারেশের ছেলে কাজী সুরুজ ওয়ারেশ একজন ঘের ব্যবসায়ী। তার কাছে চাঁদাবাজ রঘুনাথ খাঁ, আনারুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম ও রফিকুল ইসলামসহ অন্য আসামিরা ওই ব্যবসায়ীর নিকট পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। দুই দিনের মধ্যে টাকা না দিলে ওই মৎস্য ঘের লোক দিয়ে জবর দখল করে নেবে।

পুুলিশ প্রেসনোটে আরও জানায় রঘুনাথ খাঁ, কালিগঞ্জ থানার মোতাকাব্বিরের ছেলে ফারুক হোসেন ও দেবহাটা থানার টেপুখালি গ্রামের ফজর আলী গাজীর ছেলে রেজাউল করিম এবং দেবহাটা থানার চালতেতলা গ্রামের নওশের হালদারের ছেলে লুৎফর রহমান সোমবার সন্ধ্যায় দেবহাটার খলিসাখালি গ্রামের সামারা খালের ব্রিজের উপর গাছের গুড়ি ও বাঁশ দিয়ে অবরোধ করে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় এবং মাছের ঘের দখলের চেষ্টা করে। বিষয়টি জানার পর দেবহাটা থানা-পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে ককটেল ও বিস্ফোরক দ্রব্য সহ রঘুনাথ খাঁকে গ্রেপ্তার করে। এসময় অন্য আসামিরা পালিয়ে যায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে বোমা সাদৃশ্য ৫টি ককটেল উদ্ধার করে। এঘটনায় দেবহাটা থানায় ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩)ধারা ও ২৫-ডি তৎসহ ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক উপাদানাবলি আইনে মামলা হয়েছে।

সোমবার সন্ধ্যায় তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) দুপুরে তাকে আদালতে পাঠান। পুুুলিশ আরও জানায় চাঁদাবাজি ও বিস্ফোরক দ্রব্য মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে রঘুনাথ খাঁ এর বিরদ্ধে। ২০০৭ সালের ১৪ মে যৌথ বাহিনীর অভিযানে সাতক্ষীরা ফুড অফিস মোড় থেকে তৎকালীন তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের গাড়ি চালক ইমান আলীর নিকট থেকে চাঁদার টাকা নেওয়ার সময় হাতে নাতে গ্রেপ্তার হয়। এ ঘটনায় রঘুনাথ খাঁর বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর থানায় দ্রুত বিচার আইনে ঘটনার দিনেই মামলা হয়।

এই মামলায় সাতক্ষীরা আদালত সাংবাদিক রঘুনাথ খাঁকে চার বছর কারাদণ্ড প্রদান করেন। এছাড়া রঘুুনাথ খাঁ তার মা ও বাবাকে মারপিট করে হত্যার চেস্টাসহ বাড়ি থেকে মালামাল নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় গর্ভধারিনী মা শ্রীমতী ঝরনা রানী বাদি হয়ে ২০০৭ সালে ২৪ মার্চ রঘু নাথের বিরুদ্ধে কালিগঞ্জ থানয় মামলা দায়ের করেন।

এছাড়া রঘুনাথ খাঁর বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি ও কালিগঞ্জ থানায় চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ব্যক্তির দায়ের করা আরও ৩টি মামলা রয়েছে।

news24bd.tv/তৌহিদ