ওয়ার্ড বয় দিয়ে খৎনা করানোর অভিযোগ, শঙ্কটে শিশুর জীবন

ইয়াসিন আরাফাত।

ওয়ার্ড বয় দিয়ে খৎনা করানোর অভিযোগ, শঙ্কটে শিশুর জীবন

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের ওয়ার্ড বয়ের অপচিকিৎসায় ইয়াসিন আরাফাত (৪) নামে এক শিশুর জীবন হুমকির মুখে পড়েছে। অসুস্থ ওই শিশু শহরের ব্যাপারী পাড়া এলাকার ইমাজ উদ্দিনের ছেলে। এ ঘটনায় দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়েছে অসুস্থ ওই শিশুর স্বজনরা।

জানা গেছে, গত ২১ নভেম্বর সদর হাসপাতালে ছেলে আরাফাতকে সুন্নতে খৎনা করাতে নিয়ে যান পিতা ইমাজ উদ্দিনসহ স্বজনরা।

তখন হাসপাতালে ওয়ার্ড মাস্টার আনোয়ারুল ইকবাল পিকুলের নির্দেশে জরুরি বিভাগে কর্মরত ওয়ার্ড বয় প্রদীপ কুমার অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে গিয়ে সুন্নতে খৎনা করান।

তার দুইদিন পরে ওই শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে। এরপর শিশুর পরিবার ফের হাসপাতালে নিয়ে গেলে জানতে পারে তাদের সন্তানকে চিকিৎসকের পরিবর্তে ওয়ার্ড বয় দিয়ে খৎনা করানো হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে ওই শিশুর জন্য ব্যবস্থাপত্রে কিছু ওষুধের নাম লিখে দেয় ওয়ার্ড বয় প্রদীপ।

ওই শিশুর অবস্থা ক্রমেই অবনতি হতে থাকলে উপায় না পেয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ওই শিশুকে ঢাকায় নিয়ে যায় পরিবার। সেখানে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়ে জানতে পারে শিশুকে ভুল অপারেশন করানো হয়েছে ফলে কিডনি জনিত সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

অসুস্থ ওই শিশুর চাচা জাফর হোসেন জানান, আমাদেরকে ভুল বুঝিয়ে ওয়ার্ড মাস্টার পিকুল সুন্নতে খৎনা করাতে নিয়ে যান সদর হাসপাতালে। তারা সুন্নতে খৎনা করানোর পর আমাদের কাছ থেকে সাড়ে ৮ হাজার টাকা নেয়। কিন্তু আমার ভাতিজাকে ভুলভাবে সুন্নতে খৎনা করে তার জীবন বিপন্ন করে তুলেছে। আমরা বিভিন্ন দপ্তরে মৌখিকভাবে বিষয়টি জানিয়েছি। যাতে করে আর কোন শিশুর আমার ভাতিজার মতো পরিণতি না হয়।

খৎনা করানোর বিষয়টি স্বীকার করে ওয়ার্ড বয় প্রদীপ কুমার জানান, আমিতো প্রতিদিন দুই একটা করে খৎনা করিয়ে থাকি। তবে শিশু আরাফাতের খৎনা করিয়েছি ওয়ার্ড মাস্টার পিকুলের নির্দেশে। এ ব্যাপারে জানতে ওয়ার্ড মাস্টার আনোয়ারুল ইকবাল পিকুলকে একাধিকবার মোবাইলে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

মাগুরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাহিদ হোসেন জানান, শিশুটির ভুল জায়গায় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে খৎনা করানো হয়েছিল। এতে করে ইনফেকশন হয়ে শিশুটির প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যায়। সেকারণে কিডনিতে সমস্যা দেখা দিয়েছে।

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক সৈয়দ রেজাউল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে খোঁজখবর নিয়ে পরবর্তীতে জানাতে পারবো।

news24bd.tv/FA