ব্যাগেজ রুলসের অপব্যবহারে বাইরে যাচ্ছে বিপুল অঙ্কের ডলার

সংগৃহীত ছবি

ব্যাগেজ রুলসের অপব্যবহারে বাইরে যাচ্ছে বিপুল অঙ্কের ডলার

ফেরদৌস আরেফিন

কৃচ্ছ্রসাধন নীতি ঘোষণার পরও ব্যাগেজ রুলসের অপব্যবহার করে বিপুল অঙ্কের ডলার দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে। বিলাসী ও অপ্রয়োজনীয় পণ্যের এলসি নিয়ন্ত্রণ করা হলেও ব্যবসায়ীরা ব্যাগেজ রুলসের ফাঁকফোকড় কাজে লাগিয়ে এসব পণ্য দেশে আনছেন। এতে বাইরে চলে যাচ্ছে বিপুল পরিমাণ ডলার। এই অবস্থায় ব্যাগেজ রুলস নীতিমালা সংশোধন, পণ্য আনা সীমিতকরণ এবং নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক আরোপের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

নিয়ম অনুযায়ী, বিদেশ থেকে একজন যাত্রী ৪০ কেজি পর্যন্ত মালপত্র শুল্ক ছাড়াই বহন করতে পারেন। এই ব্যাগেজ রুলসের সুযোগ নিয়ে বিমানবন্দর ও স্থল বন্দর দিয়ে অনেকেই আনছেন বিলাসী পণ্য। যদিও ডলার সংকটের কারণে এসব পণ্য আমদানিতে নিরুৎসাহিত করছে সরকার।

গত বছরের ১৮ অক্টোবর কলকাতা থেকে ঢাকায় আসা মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনে আকস্মিক অভিযান চালায় শুল্ক গোয়েন্দা।

এ সময় বাংলাদেশ ও ভারতীয় পাসপোর্টধারী যাত্রীদের ব্যাগ তল্লাশি করে দুই কোটি ৬৫ লাখ টাকার অবৈধ পণ্য আটক করে।  

এনবিআরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শুধু বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে গত বছরে ১০ মাসে যাত্রীদের ব্যাগ তল্লাশি করে ৩০ কোটি টাকার অবৈধ পণ্য জব্দ করা হয়। বর্তমানে বিলাসী পণ্যের এলসি বন্ধ থাকায় এভাবে অবৈধ পণ্যের বাণিজ্য আরও বেড়েছে বলে জানান অর্থনীতিবিদ জামালউদ্দিন।  

হিসাব বলছে, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে বছরে প্রায় ৪০ লাখ আন্তর্জাতিক যাত্রী আসা-যাওয়া করে। ব্যাগেজ নিয়ম মেনেই বছরে প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার টন পণ্য বিনা শুল্কেই আনা সম্ভব। এছাড়া শাহ আমানত ও ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে বছরে যাওয়া আসা করে প্রায় ৩০ লাখ যাত্রী। আর চট্টগ্রাম ও সিলেট দিয়ে প্রতিবছর আনা হচ্ছে আরও এক লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন শুল্কমুক্ত পণ্য।  

দেশের ১৪টি স্থলবন্দর দিয়েও ঢুকছে অনেক শুল্কমুক্ত সুবিধার বিলাসী পণ্য। বেড়েছে স্বর্ণ ও বিলাসী পণ্য আনা। জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তর এবং এনবিআরের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এমন তথ্য। তাই ডলার সংকাট মোকাবেলায় ও বিলাসী পণ্যের প্রবেশ ঠেকাতে ব্যাগেজ রুলস পরিবর্তন ও সংশোধনের পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভার্নর সালেহ উদ্দীন।

শুল্ক গোয়েন্দার প্রতিবেদনে জানা গেছে, ২০১৫-১৬ থেকে ২০১৭-১৮ এই তিন অর্থবছরে শুল্কফাঁকি ও চোরাই পথে আনা চার হাজার ১৮৭ কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের পণ্য আটক করা হয়। ব্যাগেজ রুলস পরিবর্তন ও সংশোধনের পরামর্শ দিয়েছে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা অধিদপ্তরও।

news24bd.tv/ইস্রাফিল