নানা সংকটে রাঙামাটি স্বাস্থ্য বিভাগ

নানা সংকটে রাঙামাটি স্বাস্থ্য বিভাগ

জরাজীর্ণ কমপ্লেক্স, নেই পর্যাপ্ত ওষুধ

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

নানা সমস্যা আর সংকটে পড়েছে রাঙামাটি স্বাস্থ্য বিভাগ। চিকিৎসক সংকটের পাশাপাশি রয়েছে নার্স, কেটনোলজিস্ট, ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীর। এসব পদ দীর্ঘ বছর শূন্য থাকায় চিকিৎসা সেবায় বেগ পেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। জেলা সিভিল সার্জন বলছেন, জেলা সদর হাসপাতালের চেয়ে এ সমস্যা মারাত্মক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি জেলা জুড়ে রয়েছে একটি মাত্র জেনারেল হাসপাতাল। উপজেলাগুলোতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থাকলেও নানা সংকটের কারণে মিলছে না ভালো মানের কোন চিকিৎসা। তাই বাধ্য হয়ে উপজেলার বেশিরভাগ রোগি এখন সদর হাসপাতাল মুখি। দীর্ঘ বছরের পুরোণ জেনারেল হাসপাতালেও রোগী রাখার ধারণক্ষমতা মাত্র ১০০ শয্যার।

কিন্তু প্রতিদিনই রোগি ভর্তি হচ্ছে ২০০ থেকে ৩০০জন।

তারমধ্যে নেই পর্যাপ্ত শর্য্যাসহ পর্যাপ্ত কর্মকর্তা কর্মচারী। তাই চিকিৎসা সেবা দিতে বেগ পেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও কর্মচারীদের।

রাঙামাটি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, রাঙামাটি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগে ১০৯জনের চিকিৎসকের বিপরীতে পদ শূন্য রয়েছে ৬৫জন।

২৩২জন নার্সের বিপরীতে শূণ্য পদ ১৫৬জন। ৮৬জন মেডিকেল টেকনোলজিস্টের বিপরীতে শূণ্য পদ ৩২জন। ৩৬জন উপ-সহকারী কমিউনিটি ও মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) বিপরীতে শূন্য পদ ৩০জন। ৮জন স্বাস্থ্য পরিদর্শক বিপরীতে শূন্য পদ ৫জন। ২৩জন সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক বিপরীতে শূন্য পদ ১৪জন। ১৫৫জন স্বাস্থ্য সহকারীর বিপরীতে শূন্য পদ ৩০জন। ১৩৪জন সিএইচসিপি’র বিপরীতে শূন্য পদ ২২জন। ২২০জন ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণি কর্মচারীর বিপরীতে শূন্য পদ ১৭৬জন।

রাঙামাটি জেলার সব হাসপাতালে পর্যাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারী না থাকায় অতিরিক্ত রোগীর চিকিৎসা সেবায় বেগ পেতে হচ্ছে বলছেন রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের আর এমও ডা. মো. সওকত আকবর।

তিনি বলেন, যতদিন পর্যন্ত রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালটি ২৫০শয্যার হবে না ততদিন এ বেগ পেতে হবে। এছাড়া অতিরিক্তি রোগী ভর্তি হলে অতিরিক্ত শয্যা ওষুধ ও খাবার প্রয়োজন হয়। কিন্তু রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতাল এখনো ১০০ শয্যা। তাই অনেক সময় রোগীদের মেঝেতেও জায়গা হয় না। তার মধ্যে নেই পর্যাপ্ত কর্মচারী।

সবমিলে নানামুখী সংকট লেগে আছে। তবে রাঙামাটির উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে উন্নয়ত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা গেলেও জেলা সদর হাসপাতালের রোগির চাপ কমে আসবে।

তবে এ সংকটের কথা স্বীকারে রাঙামাটি জেলা সিভিল সার্জন ডা. বিপাস খীসা বলেন, এসমস্যা রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের চেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে মারাত্মক। বিশেষ করে উপজেলাগুলোতে চিকিৎসকদের আবাসন সমস্যা রয়েছে। তাই সেখানে অনেকেই থাকতে চাই না। এছাড়া জেলার ৪টি উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলো একেবারে জরাজীর্ণ। সেগুলো হচ্ছে- জুরাছড়ি, বরকল, বাঘাইছড়ি ও নানিয়ারচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

তবে চলতি বছরে এসব কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ শুরু হবে। এসব স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নতুন করে ৫০ শয্যা করা হবে। এছাড়া চিকিৎসকদের আবাসনের ব্যবস্থাও করা হবে।

news24bd.tv/তৌহিদ