পাহাড় ধসে রাঙামাটি সড়কের বেহাল দশা

রাঙামাটি সড়কের এখন এমনই হাল!

পাহাড় ধসে রাঙামাটি সড়কের বেহাল দশা

ফাতেমা জান্নাত মুমু  • রাঙামাটি

দেড় বছরেও সংস্কার হয়নি রাঙামাটিতে পাহাড় ধসে বিধ্বস্ত সড়কগুলো। এরই মধ্যে পাহাড় ধসের বিপর্যয় কাটলেও ঝুঁকিমুক্ত হয়নি শহরের বিভিন্ন সড়ক। ক্ষতিগ্রস্ত সে সড়কগুলো এখন যেন মৃত্যুর ফাঁদ! দীর্ঘদিন যাবত মেরামত না করায় এসব সড়ক এখন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তবুও ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে ভারি, মাঝারি ও ছোট-বড় সব ধরনের যানবাহন।

 

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কগুলোর বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। কোনো কোনো সড়কের দু’পাশ ভেঙে ভারি যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। তবুও সড়ক উন্নয়নে দৃশ্যমান কোনো প্রদক্ষেপ নেয়নি সংশ্লিষ্টরা। তাই ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষকে প্রতিনিয়ত চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে,২০১৭সালের ১৩জুন প্রাকৃতিক দুর্যোগে তছনছ হয়ে যায় পুরো রাঙামাটি। পাহাড় ধসে বিধ্বস্ত হয়ে যায় রাঙামাটির বিভিন্ন সড়কের ১৪৫টি স্থান। তার মধ্যে ১১৩টি স্থানে সড়কে একেবারেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে  যায়।  

news24bd.tv

এছাড়া শহরের ৩টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সড়ক ধসে সারা দেশের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় রাঙামাটির। সে সময় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাঙামাটি-চট্টগ্রাম, রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি-বান্দরবান ও রাঙামাটি-আসামবস্তি-কাপ্তাই সড়ক। সে ক্ষত শুকাতে না শুকাতেই চলতি বছর বর্ষায় নতুন করে ভেঙে পড়ে সড়কের আরও ৬টি স্থানে। যার মোট পরিসংখ্যন দাঁড়ায় ১৫১টিতে। কিন্তু সংস্কার হয়নি একটিও। তাই ক্ষতিগ্রস্ত সড়কে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে বিভিন্ন যানবাহনের হাজার হাজার যাত্রী।  

রাঙামাটি অটোরিক্সা (সিএনজি) চালক সমিতির নেতা মো. বাবুল হোসেন বলেন, ‘আকাঁ-বাকাঁ পাহাড়ি সড়কগুলো ভেঙে গিয়ে মারাত্মক রূপ ধারণ করেছে। প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। সড়কের  প্লাস্টার, ইট, কংক্রিট উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তে পরিণত হয়েছে। আবার কোথাও ভেঙে পড়েছে সড়কের বিরাট অংশ। এসব সড়কে বালির বস্তা দিয়ে কোনো রকম যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু রাখা হলেও এড়ানো যাচ্ছে না দুর্ঘটনা। তাই পর্যটন শহর হিসেবে পরিচিত রাঙামাটির সড়কগুলো দীর্ঘ দিন ধরে বেহাল অবস্থায় থাকায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। ’

এ ব্যাপারে রাঙামাটি সড়ক ও জনপদ বিভাগ নির্বাহী প্রকৌশলী মো. এমদাদ হোসেন বলেন, ‘গেল বছর ও চলতি বছর অতিবৃষ্টির কারণে ব্যাপক পাহাড় ধস হয়েছে। ভেঙেছে বেশির ভাগ সড়ক। আমরা আপতত বালির বস্তা দিয়ে সড়কগুলো ধরে রাখার চেষ্টা করছি। তবে স্থায়ী কাজ করা না হলে এ সড়কগুলো ধরে রাখা সম্ভব না। ’

news24bd.tv

‘তাই ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের স্থায়ী কাজের জন্য ১৫১টি স্থানের নকশা তৈরি করে ২৩০ কোটি টাকার প্রকল্প সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় ৫হাজার ২৭০ মিটার রিটার্নিং ওয়াল নির্মাণ করা হবে’- যোগ করেন প্রকৌশলী মো. এমদাদ।

অভিযোগ রয়েছে, রাঙামাটিতে পাহাড় ধসে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের সংখ্যা বাড়লেও কাজের অগ্রগতি বাড়েনি। প্রকল্প অনুমোদনের আশায় ঝুলে আছে সড়ক উন্নয়ন কাজ। যার দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে জনসাধারণকে। তাই এ সমস্যা দ্রুত নিরসনে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন রাঙামাটিবাসী।  


মুমু▐ অরিন▐ NEWS24

সম্পর্কিত খবর