চালু হওয়ার আগেই ইতিহাস মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের

মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরে কাজ চলছে

চালু হওয়ার আগেই ইতিহাস মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের

নয়ন বড়ুয়া জয়

চারদিকে ঘোলা পানির মধ্যে একটি পরিষ্কার স্বচ্ছ নীল ধারা। আর এই নীল পানি দিয়ে উপকূলের দিকে অগ্রসর হলেই পৌঁছা যাবে মাতারবাড়ি। এক মাতারবাড়ির মাধ্যমেই বাংলাদেশ প্রবেশ করবে গভীর সমুদ্রবন্দর যুগে। এক সময় যেখানে সাগরের জোয়ারের পানি আটকে লবণ চাষ করা হতো, সেই ভূমিতে বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে সোনালি স্বপ্নের মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্র বন্দর।

এক হাজার ৩১ একর জায়গা জুড়ে নির্মিত হচ্ছে এই বন্দর। যদিও চালুর আগেই মাতারবাড়িতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে দুটি জেটি। আর এই দুই জেটিতে ভিড়েছে ১১১টি জাহাজ। তা থেকে রাজস্ব আয় হয়েছে অন্তত ১০ কোটি টাকা।

আর এতেই ইতিহাস গড়ে নিয়েছে বন্দরটি।

আগামী জুন থেকেই শুরু হবে মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দরের মূল অবকাঠামো নির্মাণ কাজ। সরকারি ও জাইকার অর্থায়নে নির্মিত এ বন্দরটি ২০২৬ সালেই চালুর আশা করছে সংসদীয় কমিটির। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে বন্দরের সক্ষমতা তিন থেকে চারগুণ বাড়বে। এই বন্দর প্রতিবেশী দেশগুলোর জন্য বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র হয়ে উঠবে বলে আশা ব্যবসায়ীদের।

মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক জাহিদ হাসান বলেন, ‘জুন থেকে নির্মাণ কাজ শুরু হবে। ভৌত অগ্রগতির ফিল্ডে কোনো কাজ হয়নি। আমাদের ড্রয়িং, ডিজাইন ও টেন্ডারের কাজগুলো সম্পূর্ণ হয়েছে। ’

নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) রফিকুল ইসলাম (বীর উত্তম) বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী এই বন্দরের উন্নয়নে অনেক জোর দিয়েছেন। আসলে তিনি না হলে এতো উন্নয়ন কার্যক্রম শুরু করা ও চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হতো না। ’ 

এখন চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়তে পারে ১০ মিটার গভীরতার জাহাজ। কিন্তু এই মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দর চালু হলে ১৬ মিটার গভীরতার জাহাজ ভিড়তে পারবে।
 
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, ‘আমাদের বন্দরটাকে যদি রিজিওনাল হাব হিসেবে গড়ে তুলতে পারি, তাহলে আমরা সারা বিশ্বে একটা  ব্র্যান্ড হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে পারবো। এই বন্দরে প্রভাব আমাদের অর্থনীতিতে গভীরভাবে পড়বে। এর ফলে সারা বিশ্বে আমাদের দেশের নামটা একনামে চিনবে। ’

মাতারবাড়ি সমুদ্র বন্দরের আশার স্বপ্ন বুনছেন ব্যবসায়ীরাও। এটি চালু হলে পণ্য আমদানিতে সময় আর খরচ কমবে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র সহসভাপতি তরফদার রুহুল আমিন বলেন, ‘মাতারবাড়িটাকে যদি আমরা ঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারি তাহলে আমরা ব্যবসায়ীরা সুবিধা পাবো। সেখানে বড় বড় জাহাজ ভিড়তে পারবে। গভীর বন্দরগুলো আসলে ব্যবহৃত হয় মাদার ভেসেলের জন্য। ’

news24bd.tv/মামুন