১০ হাজার টাকায় ভাতিজাকে হত্যা করালো চাচা

গ্রেপ্তারকৃত ঘাতকদের একজন

১০ হাজার টাকায় ভাতিজাকে হত্যা করালো চাচা

অনলাইন ডেস্ক

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে আপন ভাতিজা কামরুল ইসলামকে (৩৫) হত্যার পরিকল্পনা করেন সাইফুল ইসলাম। এজন্য ১০ হাজার টাকা দেন নজিবুল হক ও দিদার আলীকে। তাঁরা কৌশলে কামরুল ইসলামকে ডেকে নিয়ে গলায় মাফলার পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।  নিহত কামরুল ইসলাম তেঁতুলিয়া উপজেলার তিরনই হাট ইউনিয়নের যুগিগছ এলাকার আব্দুল জব্বারের ছেলে।

আজ সোমবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার এস, এম সিরাজুল হুদা এসব তথ্য দেন।  এ সময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) এস, এম শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) কনক কুমার দাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. রাকিবুল ইসলাম, তেঁতুলিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আবু সাঈদ চৌধুরী, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. আব্দুল লতিফসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তা ও বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।

পঞ্চগড় পুলিশ সুপার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলন

পুলিশ জানায়, গত ২৫ জানুয়ারি বিকেলে দেবনগর এলাকার একটি চা বাগানের পরিত্যক্ত নালা থেকে মাছ ব্যবসায়ী কামরুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থলে ফেলে যাওয়া আলামত এর সূত্র ধরে পঞ্চগড় জেলা পুলিশ সুপার এস, এম সিরাজুল হুদা পিপিএম এর নির্দেশনায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) কনক কুমার দাসের সার্বিক তত্বাবধানে এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. রাকিবুল ইসলামের সার্বিক সহযোগীতায় তেঁতুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আবু সাঈদ চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি চৌকস টিম তদন্ত শুরু করে।

 পরে ওই রাতেই দিদার হোসেনকে গ্রেপ্তার করে তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশ।  

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে কামরুলকে হত্যার কথা স্বীকার করে দিদার। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে (রিমান্ডে) থাকা অবস্থায় সে জানায়, ভিকটিম কামরুল ইসলামের হত্যাকাণ্ডে সে সরাসরি অংশগ্রহণ না করলেও হত্যাকাণ্ডের সময় সে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল এবং হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা আগে থেকেই জানত।  এ হত্যাকাণ্ডে তার সঙ্গে নজিবুল হক নামে এক ব্যক্তিও ছিলেন। উভয়ের বাড়ি তেঁতুলিয়া উপজেলায়।  ঘটনার পর থেকে মূল পরিকল্পনাকারী সাইফুল ইসলাম ও নজিবুল হক পলাতক ছিলেন। রোববার রাতে ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাংগী সীমান্ত এলাকা থেকে সাইফুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গত সোমবার মাছ ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম বাড়ি থেকে বের হয়ে শালবাহান হাটে গেলে রাতে আর ফিরে আসেননি। নিখোঁজের তিন দিন পর বুধবার দুপুরে কামরুলের ছোট ভাই কাবুল হোসেন তেঁতুলিয়া মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। ডায়েরি করার তিন ঘন্টার মধ্যেই প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে দেবনগর ইউনিয়নের ধানশুকা এলাকার একটি চা বাগানের ড্রেন থেকে ভিকটিমকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশ।

অপরাধীদের উদ্দেশ্যে হুশিয়ারী প্রদান করে পঞ্চগড় পুলিশ সুপার এস এম সিরাজুল হুদা পিপিএম বলেন, ‌‍'অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। গ্রেপ্তার আসামিদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামি নজিবুল হককে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আসামিদের রিমান্ডে নিলে এবং মরদেহের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পেলে আরও বিস্তারিত জানা যাবে। ‌‍'

তেঁতুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আবু সাঈদ চৌধুরী বলেন, ‌‍'প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করে হত্যাকান্ডে সরাসরি অংশগ্রহণকারী ঘাতকদের দ্রুত গ্রেপ্তার করি। হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত অপর আসামি নজিবুল হক পলাতক রয়েছে। আশাকরি, শিগগিরই গ্রেপ্তার করতে পারব। ‌‍'

news24bd.tv/কামরুল

এই রকম আরও টপিক