বাংলাদেশে কয়েক ধরনের শিক্ষাব্যবস্থা চালু আছে। মৌলিকভাবে এগুলো তিন ভাগে বিভক্ত। সাধারণ শিক্ষাব্যবস্থা, সরকারি মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থা ও কওমি মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থা। প্রতিটি শিক্ষাব্যবস্থারই কিছু শাখা-প্রশাখা আছে।
মুসলমানদের আগমনের আগে ভারতবর্ষে শিক্ষার প্রধান কেন্দ্র ছিল বৌদ্ধ ভিক্ষুদের প্যাগোডা, ভিক্ষুশালা, মনাসটারি, ব্রাহ্মণদের আশ্রম, মঠ ও টোল। পাশ্চাত্য দেশগুলোতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল গির্জাকেন্দ্রিক।
ইসলামের প্রথম যুগে ধর্মীয় শিক্ষা ছিল মসজিদকেন্দ্রিক। মিসরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় ছিল মসজিদকেন্দ্রিক। উপমহাদেশের প্রথম হাদিসচর্চাকেন্দ্র শায়খ শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামা (রহ.)-এর স্মৃতিধন্য সোনারগাঁ মাদরাসাও ছিল মসজিদকেন্দ্রিক। মুসলমানরা ভারতবর্ষে আনুষ্ঠানিক মাদরাসাভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা চালু করে। মুসলিম রাজত্বকালে পাক-ভারত উপমহাদেশে বহুসংখ্যক মাদরাসা স্থাপিত হয়। মাদরাসাগুলো পরবর্তী সময়ে মসজিদ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। বাংলাদেশ জাতীয় জ্ঞানকোষ ‘বাংলাপিডিয়া’র তথ্য মতে, ‘বঙ্গদেশে মাদরাসা শিক্ষাব্যবস্থা চালু হয় সুলতানি আমলে (১২১০-১৫৭৬)। এ সময় বঙ্গদেশে বহু মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে মহিসন্তোষে মওলানা তকিউদ্দীন আরাবির মাদরাসা প্রাচীনতম। ১২৪৮ সালে সুলতান নাসিরউদ্দিন, বদরউদ্দিন ইসহাক, মিনহাজউদ্দিন, নিজামউদ্দিন দামিস্কি ও শামসউদ্দিন খাওয়ারিজমি একটি মাদরাসা শিক্ষা কারিকুলাম তৈরি করেন, যা এক শতাব্দীকাল কার্যকর ছিল।
শায়েখ আবু তাওয়ামা (রহ.) ১২৭৮ সালে সোনারগাঁয় একটি মাদরাসা স্থাপন করেন এবং এটি ছিল তৎকালীন বাংলায় সর্ববৃহৎ মাদরাসা। সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ (১৪৯৩-১৫১৯) গৌড় ও মালদহে বহু মাদরাসা স্থাপন করেন। সুলতানি আমলে মাদরাসার পাঠ্যসূচিতে ছিল আরবি, নাহু, সরফ, বালাগাত, মানতিক, কালাম, তাসাউফ, সাহিত্য, ফিকাহ ও দর্শন। ’ (বাংলাপিডিয়া, ‘মাদরাসা শিক্ষা’)
news24bd.tv/ইস্রাফিল