শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার মুলফৎগঞ্জ বাজারে পদ্মা নদীর ভাঙনে ৪ দিনে দুই শতাধিক দোকান ও তিন শতাধিক বাড়িঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া মুলফৎগঞ্জ বাজারের আরও ১১শ দোকানপাট চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। যে কোনো সময় নদী গর্ভে চলে যেতে পারে এ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো ও নড়িয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি।
জেলার ঐতিহ্যবাহী মুলফৎগঞ্জ মাদ্রাসা, নড়িয়া সরকারি কলেজ,নড়িয়া পৌরসভা,নড়িয়া থানা,নড়িয়া উপজেলা ভবনও ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে।
অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে নড়িয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে। পদ্মা নদী এরইমধ্যে চলে এসেছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির প্রধান গেটে। ভাঙন আতঙ্কে গতকাল হাসপাতালের একটি ভবন নিলামে বিক্রি করে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ,যার মূল্য ৩৫হাজার ৬শ ৫০ টাকা।এদিকে, হাসপাতালটির চিকিৎসা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এ এলাকার মানুষের চিকিৎসা নিতে যেতে হচ্ছে জেলা হাসপাতাল বা ঢাকায়।
নড়িয়ায় ভাঙনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ খালেক দেওয়ান বলেন,‘আমার প্রায় ১শ একর জমি ছিলো,মুলফৎগঞ্জ বাজারে চারতলা দেওয়ান ক্লিনিক ছিলো,বেশ কয়েকটি ভিটি ছিলো-তা সবই পদ্মা ভেঙে নিয়ে গেছে। এখন আমার এক শতাংশ জমিও নেই। আমি পথের ভিখেরি হয়ে গেছি। আমি এখন কোথায় থাকবো,কোথায় যাবো,কী খাবো,কিভাবে বাঁচবো- কিছুই জানিনা। সরকারের কাছে আমাদের পুনর্বাসনের দাবি জানাই। ’
এদিকে, ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ৭ কোটি টাকা ব্যয় করে জিও ব্যাগ ভর্তি বালুর বস্তা নদীতে ফেলছে। কিন্তু সেটা করেও ভাঙন ঠেকাতে পারছে না পাউবো।
ভাঙন কবলিতরা বলেন,অযথা বালু ফেলে টাকা নষ্ট করছে সরকার। তারা বলছেন, যেখানে চারতলা বিল্ডিং অনায়াসে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে,সেখানে কী করে এ বালুর বস্তা নদী ভাঙন রোধ করবে?
তারা বলেন,এ টাকা জলে না ঢেলে যদি তাদের সাহায্য করা হতো, তবে তারা কিছুটা হলেও উপকৃত হতো।
এ বিষয়ে শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী পরিচালক তারেক হাসান বলেন, জিও ব্যগ ফালানোতে কিছুটা ভাঙন রোধ করা যাচ্ছে,তা নাহলে আরও বেশি ভাঙতো।
নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা ইয়াসমিনের ভাষ্য,তিন হাজার ভাঙন কবলিতদের মাঝে ৩০ কেজি করে চাল ও ৭শ বান্ডেল টিন বিতরণ করা হয়েছে।
রতন▐ অরিন▐ NEWS24