কক্সবাজারের ডুলাহাজারায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে এশিয়াটিক এক সিংহ ‘রাসেল’ মারা গেছে। মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে পার্কের সিংহ বেষ্টনীতে ওই সিংহকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায় পার্ক কর্তৃপক্ষ। সিংহটি দুই মাস ধরে অসুস্থ ছিল। চিকিৎসাধীন রয়েছে আরেক সিংহ টুম্পা।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় পার্কের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাধায়ক মো. মাজহারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
সিংহটির ময়নাতদন্ত করেন চকরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোস্তাকিম বিল্লাহ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন হাতেম সাজ্জাত মো. জুলকার নাইন।
সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, পার্কে এখন ৪টি সিংহ আছে। এর মধ্যে ১টি পুরুষ ও ৩টি স্ত্রী।
এরপর সোহেল ও নদীর ২টি সন্তান হয়। তাদের নাম রাখা হয় টুম্পা ও সম্রাট। টুম্পার এখন বয়স ১৫ বছর ও সম্রাটের বয়স ৯ বছর।
বার্ধক্যের কারণে ২০২২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ২২ বছর বয়সে সোহেল মারা যায়। সঙ্গী সোহেলের মৃত্যুর ২ মাস পর গত বছরের ২২ এপ্রিল মারা যায় নদী। গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর থেকে সিংহ রাসেল শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আর এ বছরের শুরুতে টুম্পাও অসুস্থ হয়ে পড়ে।
৪ জানুয়ারি রাসেল ও টুম্পার অসুস্থতার খবর পেয়ে বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ চট্টগ্রামের বিভাগীয় কর্মকর্তা (ডিএফও) রফিকুল ইসলাম চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পার্ক পরিদর্শনে আসেন।
চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন ও সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক বিবেক চন্দ্রকে প্রধান করে সিংহ ২টির চিকিৎসার জন্য ৫ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। ওই বোর্ডে ছিলেন সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন হাতেম সাজ্জাদ মো. জুলকার নাইন ও চকরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোস্তাকিম বিল্লাহ।
সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি সার্জন হাতেম সাজ্জাদ মো. জুলকার নাইন , রাসেল অ্যানাপ্লাজমা ও বেবিসিয়ায় ভুগছিল। দেহে বাত, দেহের চামড়ায় ভাঁজ পড়া, খাবারে অনীহা নিয়ে ওই সিংহ মারা যায়। রাসেলের বয়স হয়েছিল ১৬ বছর।
চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারায় ২ হাজার ২৫০ একর সংরক্ষিত বনে গড়ে তোলা হয় দেশের প্রথম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক। ২০০১ সালের ১৯ জানুয়ারি এ পার্কের যাত্রা শুরু করা হয়। ১৯৮০ সালে এটি হরিণ প্রজননকেন্দ্র ছিল। বর্তমানে পার্কে বাঘ, সিংহ, জেব্রা, ওয়াইল্ড বিস্ট, ময়ূর, অজগর, কচ্ছপ, জলহস্তী, কুমির, হাতি, ভালুক, কাকধনেশ, হরিণ, লামচিতা, শকুন, রাজধনেশ, ইগল, সাদা বক, রঙিলা বক, সারস, কাস্তেচরা, মথুরা, নিশিবক, কানিবক, বনগরুসহ ৫২ প্রজাতির ৩৪১টি প্রাণী রয়েছে। এগুলো আবদ্ধ অবস্থায় আছে।
উন্মুক্তভাবে আছে ১২৩ প্রজাতির ১ হাজার ৬৫টি প্রাণী। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো গুইসাপ, সজারু, মার্বেল ক্যাট, বাগডাশ, গোল্ডেন ক্যাট, খ্যাঁকশিয়াল, ফিশিং ক্যাট ও বনরুই।
news24bd.tv/হারুন
