পরকালে টাকা-পয়সা, গাড়ি-বাড়ি, প্রভাব প্রতিপত্তি কোনো কিছুই কাজে আসবে না। সেখানে টাকা-পয়সা ‘বিনিময় মূল্য’ হিসেবে ধরতব্য হবে না, এর দ্বারা কোনো কিছু লাভও করা যাবে না। ইরশাদ হয়েছে, ‘...নিশ্চয়ই তাদের কারো থেকে সমগ্র পৃথিবী ভরতি স্বর্ণও কখনোই গ্রহণ করা হবে না, যদিও সে মুক্তিপণরূপে এ পরিমাণ স্বর্ণ প্রদান করে। ’ (সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ৯১)
সেখানকার একমাত্র বিনিময় মূল্য হবে পুণ্য, যা থাকলে সব কিছু লাভ করা যাবে।
পুণ্য সঞ্চয় হয় ছোট-বড় বিভিন্ন নেক আমল দ্বারা।
১. কিছু কিছু ছোট আমল আসলেই কি ছোট?
কারো কোনো বৈধ বিষয়ে আপনার সামন্য সুপারিশ বা সম্মতি দ্বারা তার বিরাট উপকার হয়ে যায়। এতে আপনার কোনো ক্ষতিও হয় না; বরং লাভ হয়। পরোপকারে সওয়াব হয়।
২. কাঁটাযুক্ত ডাল সরানোর বিনিময়
অনেক সময় রাস্তা-ঘাটে ক্ষতিকর বিভিন্ন জিনিস পড়ে থাকতে দেখা যায়, যা ছোট হলেও তা দ্বারা মানুষের বা আল্লাহর কোনো মাখলুকের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তা রাস্তা থেকে সরিয়ে ফেলা হয়তো আমাদের জন্য তেমন কোনো কষ্টকরও নয়। কিন্তু আল্লাহর কাছে এর বিরাট প্রতিদান রয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘এক ব্যক্তি রাস্তা দিয়ে চলার সময় কাঁটাযুক্ত গাছের একটি ডাল রাস্তায় পেল, তখন সেটাকে রাস্তা থেকে অপসারণ করল, আল্লাহ তার এ কাজকে কবুল করলেন এবং তাকে মাফ করে দিলেন। ’ (বুখারি, হাদিস : ২৪৭২)
৩. জীবজন্তুর উপকারের প্রতিদান
মানুষের উপকার করা যেমন পুণ্যের কাজ, অন্যান্য জীবজন্তুর উপকার করাও সওয়াবের কাজ। এর প্রতিদান জান্নাত। নবীজি (সা.) বলেন, (পূর্ব যুগে) ‘জনৈক ব্যক্তি একটি কুকুরকে তৃষ্ণার্ত অবস্থায় ভেজা মাটি চাটতে দেখতে পেয়ে তার মোজা নিল এবং কুকুরটির জন্য কুয়া থেকে পানি এনে দিতে লাগল যতক্ষণ না সে ওর তৃষ্ণা মেটাল। আল্লাহ এর বিনিময় দিলেন এবং তাকে জান্নাতে প্রবেশ করালেন। ’ (বুখারি, হাদিস : ১৭৩)
৪. ঋণ পরিশোধে অবকাশ দেওয়ার বিনিময়
নবীজি (সা.) বলেছেন, তোমাদের আগের উম্মতের এক ব্যক্তির রুহের সঙ্গে ফেরেশতারা সাক্ষাৎ করে জিজ্ঞেস করলেন, বিশেষ কোনো সৎকাজ তুমি করেছ কি? সে বলল, না। তারা বললেন, মনে করে দেখো! সে বলল, আমি মানুষের সঙ্গে লেনদেন করতাম। তারপর অসচ্ছল ব্যক্তিদের সুযোগ দিতে ও সচ্ছল ব্যক্তিদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করতে আমি আমার লোকদের নির্দেশ দিতাম। নবী করিম (সা.) বলেন, এরপর আল্লাহ তাআলা বললেন, ওকে ছেড়ে দাও। (মুসলিম, হাদিস : ৩৮৮৫)
৫. কোনো আমল ছোট নয়
আমরা যে আমল করি তার কোনো কোনো আমল আমাদের দৃষ্টিতে ছোট হলেও মহান আল্লাহর কাছে তা ছোট নয়; বরং অনেক বড়। প্রতিদানও অনেক বেশি। হয়তো মহান আল্লাহ এই ছোট আমলটির অসিলায় আমাদের সারা জীবনের সব গুনাহ মাফ করে দেবেন! আবু জার (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন : নবীজি (সা.) আমাকে বলেছেন, ‘কোনো নেক আমলকে তুচ্ছ মনে করো না, এমনকি হোক সেটা ভাইয়ের সঙ্গে হাসিমুখে সাক্ষাৎ দেওয়া। ’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৫৮৪)।
news24bd.tv/ইস্রাফিল