শার্ট-প্যান্ট পরা স্মার্ট চা ওয়ালা

সংগৃহীত ছবি

শার্ট-প্যান্ট পরা স্মার্ট চা ওয়ালা

অনলাইন ডেস্ক

পরনে শার্ট-প্যান্ট, হাতে ঘড়ি আর পায়ে সু। চলা ফেরায় বেশ পরিপাটি। সব সময় থাকেন ফরমাল ড্রেসে। অনবরত বানাচ্ছেন চা।

 মাঝে মধ্যেই গান গেয়ে উঠেন মনের আনন্দে। হঠাৎ যে কারো চোখ পড়লেই মনে হবে এ যেন কোনো শ্যুটিং দৃশ্য। না; এটা কোনো শ্যুটিংয়ের দৃশ্য নয়। তিনি একজন সামান্য চা বিক্রেতা।
নাম মো. হান্নান। যাকে সবাই স্মার্ট চা ওয়ালা বলেই চেনে।  

রাজধানীর পান্থপথ সিগলালে ফুটপাতে তিনি চা বিক্রি করেন। আর এই চা বিক্রি করেই নিজ ছোট ভাইকে করিয়েছেন এমবিএ। স্ত্রীকে পড়া লেখা করিয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। জানা গেছে, গত ১০ বছর ধরে তিনি চা বিক্রি করে আসছেন। তার গ্রামের বাড়ি ভোলার দৌলতখাঁন উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নে।

তার চায়ের দোকানে গেলেই মিলবে হরেক রকমের সুস্বাদু চা। তেঁতুল দিয়ে বানানো চায়ের নাম দিয়েছেন রোমান্টিক টি। একটু টক, একটু মিষ্টি আসলেই রোমান্টিক। দুধ দিয়ে বানানো এক কথায় দুধ চায়ের নাম দিয়েছেন প্রোটিন টি। এছাড়াও রয়েছে মালটা চা, রং চাসহ আরও নানান রকমের চা।

জানা গেছে, পরিবারের দৈন্যদশায় পড়শোনাটা ঠিক মতো করতে পারেননি হান্নান। পারিবারিক অসচ্ছলতা, দারিদ্রতা আষ্টে পিষ্টে এমনভাবে জড়িয়ে গেছে যে, উপায়ন্ত না পেয়ে জীবিকার তাগিদে আসেন রাজধানীতে। অচেনা এই নগরীতে এসেও কি করবেন, কিভাবে চলবেন, পড়ে গেলেন গভীর চিন্তায়। কিন্তু পরিবারের হাল ধরতে হবে। তাই রাজধানীর পান্থপথে ফুটপাতে একটি চায়ের দোকানের পরিকল্পনা করেন। যেই পরিকল্পনা সেই কাজ। দেখতে দেখতে কেটে গেল ১০ বছর। আর এই দশ বছরে নিজের উপার্জনের অর্থ দিয়ে পড়াশোনা করালেন ছোট ভাই ও স্ত্রীকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে মাস্টার্স শেষ করে স্ত্রী কোন চাকরি না করলেও ছোট ভাই এমবিএ শেষ করে একটি বেসরকারি ব্যাংকে চাকরি করেন। পরিবারে সদস্যদের মুখে একটু ভালো খাবার তুলে দিতে এখনও দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তিনি। খুব বড় কিছু হতে না পারলেও স্ত্রী সন্তান ও যৌথ পরিবার নিয়ে বেশ ভালোই আছেন।

news24bd.tv/রিমু

সম্পর্কিত খবর