সোমবার ভোর। ঘড়ির কাঁটায় সময় ৪টা। সবাই ঘুমে বিভোর। সেই মুহূর্তে ভয়াবহ আকারে কেঁপে ওঠে তুরস্ক এবং সিরিয়ার অধিকাংশ এলাকা।
রিখটার স্কেলে মাত্রা ছিল ৭.৮। তখন আমরা গভীর ঘুমে নিমজ্জিত। হঠাৎ প্রচণ্ড ঝাঁকুনি শুরু হলো। আমার স্ত্রী ও ছেলে-মেয়েরা লাফিয়ে উঠল।
খানিকটা উদ্ভ্রান্তের মতো চোখমুখ নিয়ে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার আজমারিন গ্রামের বাসিন্দা ওসমান আবদেল হামিদ এভাবেই ভূমিকম্পের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিচ্ছিলেন।
আবদেল হামিদ জানান, চারতলা ভবনে আরও যে কয়টি পরিবার ছিল, তাদের কেউ জীবিত নেই। তারা নিজেরাও পুরো পরিবার ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছিল। কিন্তু তার এক ছেলে কোনোমতে বের হয়ে যায় এবং চিৎকার করতে করতে প্রতিবেশীদের জড়ো করে। কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় আবদেল হামিদের পুরো পরিবার জীবিত উদ্ধার হয়।
আরও পড়ুন : ৮০ বছর আগে এভাবেই কেঁপেছিল তুরস্ক
উদ্ধারের পর আবদেল হামিদকে স্থানীয় শহর দারকুশের একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। তুরস্ক সীমান্তের কয়েক মাইল দূরে এই হাসপাতালে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আহত ও নিহতের সংখ্যা বাড়তে থাকে বলে উল্লেখ করা হয়েছে এএফপির এক প্রতিবেদনে। নিহতদের বড় একটা সংখ্যা শিশু।
সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে তুরস্কের সিরিয়া সীমান্তের গাজিয়ানতেপ প্রদেশের কাহরামানমারাস শহরে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে। এটির ঢেউ গিয়ে লাগে প্রতিবেশী সিরিয়ায়।
প্রথমটির ৯ ঘণ্টার মাথায় ৭ দশমিক ৫ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে তুরস্কে। সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ২৪ মিনিটের দিকে দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে এটি আঘাত হানে। এতে নতুন করে আরও কিছু ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে। প্রথম ভূমিকম্পটি সিরিয়ার বাইরের লেবানন, ইসরায়েল ও সাইপ্রাসেও অনুভূত হয়েছে।
আরও পড়ুন : লাশের স্তূপ, কাঁদার লোকও নেই অনেক পরিবারে!
তুরস্ক ও সিরিয়ায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দুই হাজারের বেশি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আহত উদ্ধার করা হয়েছে আরও কয়েক হাজার। নিহত ও আহতের সংখ্যা মিনিটে মিনিটে বাড়ছে।
সূত্র : এএফপি।
news24bd.tv/আলী