নিপাহ ভাইরাসের ঝুঁকিতে সারাদেশ

সংগৃহীত ছবি

নিপাহ ভাইরাসের ঝুঁকিতে সারাদেশ

অনলাইন ডেস্ক

এ বছর দেশে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১০ জন। রোগটির সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা না থাকায় এর মধ্যে ৭ জনই মারা গেছেন। বেশকিছু দিন ধরে ভাইরাসটি ভয়বহতার কথা উল্লেখ করে মানুষকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। সারাদেশই নিপাহ ভাইরাসের ঝুঁকিতে জানিয়ে কাঁচা খেজুরের রস পানে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

দেশে চলতি বছর নিপাহ ভাইরাস শনাক্ত হওয়া প্রত্যেকের খেজুরের রস পানের ইতিহাস রয়েছে। অনলাইনের মাধ্যমে এই রস বিক্রি হচ্ছে বলে এটি সহজলভ্য হয়ে উঠেছে এবং সারা দেশে  রোগটি ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বেড়েছে।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের  (আইইডিআর) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর এ পর্যন্ত ১০ জনের দেহে নিপাহ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে চারজনের বাড়ি রাজবাড়ী।

এ ছাড়া শরীয়তপুর, রাজশাহী, নওগাঁ, পাবনা, নাটোর ও ঢাকায় একজন করে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত বলে শনাক্ত হয়েছে। শনাক্ত হওয়া রোগীদের মধ্যে রাজবাড়ীতে তিনজনসহ মারা গেছে সাতজন। যে তিনজন বেঁচে আছে, তাদের জীবনও ঝুঁকিতে।

আইইডিআর পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন গণমাধ্যমকে বলেন, এখন ঝুঁকিপূর্ণ সারাদেশ। কারণ এখন অনলাইনে খেঁজুরের রস বিক্রি হয়। অনেকে এই রস কিনে উৎসব করে। ’

আইইডিসিআরের উপদেষ্টা মোশতাক হোসেন বলেন, বাদুড় নিপাহ ভাইরাস বহন করলেও আক্রান্ত হয় না। এ টেরোপাস বা ফ্রুট ব্যাট প্রজাতির ফল খাওয়া বাদুড় এই ভাইরাসের বাহক। তিনি বলেন, ‘আমাদের মূল সমস্যা হলো আমরা বনজঙ্গল কেটে ফেলছি। আগে বনজঙ্গলের বুনো ফল খেয়ে বাদুড় জীবন ধারণ করত। এখন বিকল্প খাদ্যের সন্ধানে খেজুরের রসে মুখ দিচ্ছে। যেখানে-সেখানে প্রস্রাবসহ বিষ্ঠা ছড়াচ্ছে।  এ থেকে ভাইরাস ছড়ানোর ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। কিছুতেই খেজুরের কাঁচা রস খাওয়া যাবে না। গুড় বানিয়ে বা সিদ্ধ করে পায়েশ বানানো যেতে পারে। ’ 

মোশতাক হোসেন আরও বলেন, ‘যারা গাছ থেকে খেজুরের রস সংগ্রহ করে, তাদের সাবধান হওয়া খুব জরুরি। কারণ রস খাওয়ার সময় বাদুড় প্রস্রাব বা মল ত্যাগ করলে গাছের গায়ে লেগে থাকতে পারে। এ জন্য রস আহরণ করার পর সাবান দিয়ে গোসল করা ও কাপড় ধুয়ে ফেলা নিরাপদ। ’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে এর কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। অনেক স্টাডি হচ্ছে, ডায়াগনসিস পদ্ধতি নিয়ে কাজ হচ্ছে। একই সঙ্গে আইইডিসিআর এবং আইসিডিডিআরবি ভ্যাকসিন আবিষ্কারের চেষ্টা করছে। ’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার জুনোটিক ডিজিজ কন্ট্রোল প্রগ্রামের ডেপুটি প্রগ্রাম ম্যানেজার ডা. এস এম গোলাম কায়সার সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘হটস্পট জেলাগুলো অর্থাৎ যেসব জেলার মানুষ খেজুরের কাঁচা রস বেশি খায় এবং বিগত সময়ে আক্রান্ত বেশি হয়েছে, সেসব জেলার মানুষকে সতর্ক করার কাজ করে যাচ্ছি। ’

news24bd.tv/ইস্রাফিল

এই রকম আরও টপিক