শিক্ষককে আওয়ামী লীগ নেতার ‘হেনস্তা’, ৯৯৯ কল করে উদ্ধার

সংগৃহীত ছবি

শিক্ষককে আওয়ামী লীগ নেতার ‘হেনস্তা’, ৯৯৯ কল করে উদ্ধার

অনলাইন ডেস্ক

রাজশাহীর পুঠিয়ায় এক প্রধান শিক্ষককে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে হুমকির অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী শিক্ষক বিদ্যালয়ের টয়লেটে লুকিয়ে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।  সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার বিড়লদহ সৈয়দ করম আলী শাহ উচ্চ বিদ্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিনি জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।

 

বিলম্বে প্রাপ্ত খবরে জানা যায়, ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক কোরবান আলীর অভিযোগ, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সামাদ মোল্লা তাকে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখিয়েছেন।

অভিভাবক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সাল থেকেই বিড়লদহ সৈয়দ করম আলী শাহ (রহ:) উচ্চ বিদ্যালয় এডহক কমিটি দিয়ে চলছে। প্রধান শিক্ষক কোরবান আলী স্থানীয় সংসদ সদস্যের নির্দেশে ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন না দিয়ে বার বার এডহক কমিটি করছেন। কিন্তু সোমবার কয়েকজন অভিভাবক ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনের দাবিতে প্রধান শিক্ষক বরাবরে দরখাস্ত নিয়ে স্কুলে যান।

তাদের সঙ্গে যান জেলা আওয়ামী লীগের নেতা অ্যাডভোকেট আবদুস সামাদ মোল্লা। তারা দরখাস্ত ও ফটোকপি প্রধান শিক্ষকের হাতে দিয়ে রিসিভ করে নিতে বলেন। কিন্তু প্রধান শিক্ষক কোরবান আলী দরখাস্ত রিসিভ করে নিতে অস্বীকৃতি জানান। এ সময় দরখাস্ত রিসিভ করার জন্য চাপাচাপি করলে প্রধান শিক্ষক ভয়ে নিজের বাথরুমে গিয়ে পুলিশকে ফোন করেন।  

তবে প্রধান শিক্ষক কোরবান আলী দাবি করেন, আব্দুস সামাদ মোল্লা তাকে শার্টের কলার ধরে টানাটানি ও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। আঘাত করার জন্য তাড়া করলে তিনি ভয়ে বিদ্যালয়ের টয়লেটে আশ্রয় নেন। সেখান থেকেই তিনি জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করলে পুঠিয়া থানা পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে। এ সময় পুলিশ দেখে ওই আওয়ামী লীগ নেতাসহ অন্যরা চলে যায়। বিকালে পুঠিয়া থানায় বসে প্রধান শিক্ষক কোরবান আলী জিডি করেন। জিডিতে তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সামাদ তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন। কথা মতো কাজ না করলে বিদ্যালয়ে চাকরি করা কঠিন হবে বলেও শাসিয়েছেন।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সামাদ মোল্লা বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য ডা. মনসুর রহমানের কথা মতো সৈয়দ করম আলী শাহ (রহ:) উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ২০১৭ সাল থেকে এডহক কমিটি দিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা করছেন। এবারও খবর পেয়েছেন তিনি গোপনে আবার সংসদ সদস্যের পছন্দের লোকজন নিয়ে এডহক কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া করছেন। এটা জানার পর কয়েকজন অভিভাবক সদস্যকে নিয়ে তিনি গিয়েছিলেন।  

তিনি আরও বলেন, গোপনে কোনো কমিটি করা যাবে না। উন্মুক্ত নির্বাচন দিতে হবে। পুনঃতফসিল ঘোষণা করতে হবে। সে জন্য একজন অভিভাবক আবেদন করেন। আবেদনটি প্রধান শিক্ষককে সই করে নিতে বলা হয়। কিন্তু তিনি অভিভাবকদের আবেদন রিসিভ করতে অস্বীকার করেন। তাকে কোনো প্রকার হুমকি দেওয়া হয়নি। তিনি আবেদন নিতে গড়িমসির এক পর্যায়ে চেয়ার থেকে উঠে বাথরুমে গিয়ে পুলিশকে ফোন করে ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছেন বলেও দাবি করেন তিনি।

রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ডা. মনসুর রহমান অবশ্য দাবি করেন, ওই নেতার মনের মতো করে কমিটি না করায় তিনি প্রধান শিক্ষককে মেরেছেন।

news24bd.tv/আলী