ভূমিকম্প: যেভাবে বেঁচে যায় নাইজেরীয় পরিবারটি

সংগৃহীত ছবি

ভূমিকম্প: যেভাবে বেঁচে যায় নাইজেরীয় পরিবারটি

অনলাইন ডেস্ক

তুরস্কে সোমবারের ভূমিকম্প থেকে বেঁচে যাওয়াদের একজন নাইজেরিয়ান নাগরিক ইমানুয়েল ওলাইটান জনসন। স্ত্রী-সন্তানসহ মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন এ নাইজেরিয়ান। বিবিসির এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে তার বেঁচে ফেরার গল্প।

জনসন জানান, ভবনের দেয়ালে ফাটল দেখেই বিপদ অনুভব করেছিলেন তিনি।

এরপরই স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে পড়েন।

সোমবার সূর্যোদয়ের আগ মুহূর্তে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্প ধ্বংসযজ্ঞ চালায় তুরস্কের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে। এরপর একইদিন বিকালে ৭.৭ মাত্রার আরেক ভূমিকম্পে মৃত্যুপুরীতে রূপ নেয় দেশটির অনেক শহর। ভূমিকম্পের এ ধ্বংসযজ্ঞ থেকে রক্ষা পায়নি যুদ্ধবিদ্ধস্ত সিরিয়াও।

ভূমিকম্পের আঘাত থেকে নিজের বেঁচে ফেরাকে অগ্নিপরীক্ষার সঙ্গে তুলনা করেছেন জনসন। তিনি জানান, শুধু প্যান্ট পরা অবস্থায় বাচ্চাদের কোলে নিয়ে তুষারের মধ্যে বেরিয়ে পড়েন তিনি।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘ভূমিকম্পের সময় আমি আমার ভবনে ছিলাম। এসময় লক্ষ্য করি, আমার বিল্ডিং কাঁপছে, কিন্তু আমি প্রথমে এটিকে গুরুত্ব দেইনি। কিন্তু দেয়ালে ফাটল দেখে স্ত্রী-সন্তানকে জড়িয়ে ধরে দৌড়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসি। ’

বিবিসিকে তিনি বলেন, ‘এখন আমি ও আমার পরিবার গৃহহীন অবস্থায় আছি। ’

তুরস্কের ক্ষতিগ্রস্থ শহরগুলোর একটি গাজিয়ানটেপের বাসিন্দা এই নাইজেরিয়ান। তিনি জানান, ঘটনা শুরুর আগে তিনি ৯/১১ সন্ত্রাসী হামলার তথ্যচিত্র দেখে শেষ করেছেন। এরপরই শুরু হয় ভূমিকম্প।

তিনি বলেন, ‘আমার বাড়ি সম্পূর্ণ বিদ্ধস্ত হওয়ার আগে আমি নিজের, স্ত্রী ও সন্তানদের জন্য জুতা আনতে ও গুরুত্বপূর্ণ নথি নিতে ঝুঁকি নিয়ে দুইবার ভবনের ভিতরে গিয়েছিলাম। ’

তিনি আরও বলেন, ‘ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে ঘটনার সূত্রপাত হয়। এসময় আমি একা ও বক্সার পরিহিত অবস্থায় আর আমার বাচ্চারা খালি পায়ে বরফের মধ্যে হাঁটছিল। ’

ভূমিকম্পের কবল থেকে বেঁচে ফেরা জনসন বলেন, ‘আমি যখন বিল্ডিংয়ের সিঁড়ি দিয়ে নামছিলাম, তখন আমি আমার পা হারাতে বসেছিলাম। প্রায় অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছি। ’

তিনি আরও জানান, ভূমিকম্পের সময় শক্তিশালী ভবনসহ ক্রীড়া কেন্দ্র এবং জাদুঘরে আশ্রয় নিয়েছিল অসংখ্য মানুষ।

সোমবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের শহরগুলোতে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। প্রতিবেশী দুই দেশে ভূমিকম্পের ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞে এখন পর্যন্ত ৮ হাজারের বেশি মানুষের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

ভূমিকম্পে আহত হয়েছেন আরও হাজার হাজার মানুষ। ধসে পড়েছে হাজারও বাড়িঘর। এখনও অসংখ্য মানুষ খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন। জাতিসংঘের স্বাস্থ্যবিষয়ক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, তুরস্ক এবং সিরিয়ায় আঘাত হানা ভূমিকম্পে প্রাণ হারানো মানুষের সংখ্যা শেষ পর্যন্ত ২০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।

news24bd.tv/ইস্রাফিল