জালিয়াতির অভিযোগে সাবিহা সাইকি ফ্যাশনের পণ্য রপ্তানি স্থগিত

সংগৃহীত ছবি

জালিয়াতির অভিযোগে সাবিহা সাইকি ফ্যাশনের পণ্য রপ্তানি স্থগিত

অনলাইন ডেস্ক

চট্টগ্রামে ‘সাবিহা সাইকি ফ্যাশন’ নামের একটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ১৫টি বিল অব এক্সপোর্টের রপ্তানি কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত দলিলাদি পর্যালোচনায় রপ্তানি জালিয়াতির প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর, ঢাকা অফিস এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।  

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাবিহা সাইকি ফ্যাশন নামে একটি প্রতিষ্ঠান রপ্তানি দলিলাদি জালিয়াতির মাধ্যমে বিদেশে পণ্য রপ্তানি করছে এবং পণ্যের রপ্তানি মূল্য (বৈদেশিক মুদ্রা) দেশে প্রত্যাবাসিত হচ্ছে— এমন গোপন সংবাদ পেয়ে গত ৩১ জানুয়ারি চট্টগ্রামের উত্তর পতেঙ্গার কাঠগড় এলাকায় অভিযান চালায় কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর, আঞ্চলিক কার্যালয়, চট্টগ্রামের একটি গোয়েন্দা দল।

তারা ওই প্রতিষ্ঠানের ১৫টি বিল অব এক্সপোর্ট সংক্রান্ত দলিলাদি পর্যালোচনায় রপ্তানি জালিয়াতির প্রাথমিক সত্যতা পায় এবং তাৎক্ষণিক প্রতিষ্ঠানটির ১৫টি বিল অব এক্সপোর্টের রপ্তানি কার্যক্রম সাময়িক স্থগিত করে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ১৫টি বিল অব এক্সপোর্টের রপ্তানি সংক্রান্ত দলিলাদি যাচাই করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিল অব এক্সপোর্টে উল্লিখিত অগ্রণী ব্যাংকে চিঠি পাঠায় কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। তবে অগ্রণী ব্যাংক জানায়, সাবিহা সাইকি ফ্যাশন নামে অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান শাখায় কোনো গ্রাহক নেই। ওই বিল অব এক্সপোর্ট সংশ্লিষ্ট ইএক্সপিগুলো অগ্রণী ব্যাংকের প্রধান শাখার অন্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের নামে ইস্যু করা।

এতে প্রমাণিত হয়, অন্য রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের এক্সপোর্ট এবং ভূয়া এলসি কিংবা সেলস কন্ট্রাক্ট ব্যবহার করে পণ্য রপ্তনি করা হয়েছে এবং হচ্ছিল।  
 
এতে আরও বলা হয়, যেহেতু জালিয়াতির মাধ্যমে রপ্তানি সম্পন্ন হয়েছে, সে কারণে এই পণ্যচালানগুলোর বিপরীতে কোনো বৈদেশিক মুদ্রা বৈধ পথে দেশে প্রত্যাবাসিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাই এ ক্ষেত্রে মানিলন্ডারিং সংঘটিত হয়েছে।  

এ পণ্যচালানগুলোর বিষয়ে রপ্তানিকারকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এই পণ্যচালানগুলোর সঙ্গে তিনি সংশ্লিষ্ট নন এবং এ বিষয়ে তিনি উত্তরা-পশ্চিম থানায় একটি জিডি করেন এবং জিডির কপি এ দপ্তরে সরবরাহ করেন।  
উল্লেখ্য, গত ৩২ জানুয়ারি কাস্টম গোয়েন্দা কর্তৃক পরিচালিত অভিযানের পরপরই উত্তরা পশ্চিম থানায় জিডি করা হয়। ওই পণ্যচালান কায়িক পরীক্ষায় সহযোগিতা করার জন্য সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট লিম্যাক্স শিপার্সকে চিঠি দেওয়া হলেও তারা কোনো সহযোগিতা করেনি। উল্লিখিত ১৫টি পণ্যচালানের মধ্যে ৯টি পণ্যচালান সংশ্লিষ্ট ডিপোতে পাওয়া যায়। বাকিগুলো ইতোমধ্যে রপ্তানি হয়েছে। আটক পণ্যচালানসমূহ কায়িক পরীক্ষা করা হলে ঘোষণাবহির্ভূত একাধিক পণ্য পাওয়া যায়। রপ্তানিকারকের ঘোষণা মোতাবেক টি শার্ট এবং লেডিস ড্রেস রপ্তানির কথা থাকলেও কায়িক পরীক্ষায় বেবি ড্রেস, জিন্স প্যান্ট, শার্ট, লেগিন্স, শালসহ ঘোষণা-বহির্ভূত অসংখ্য পণ্য পাওয়া যায়।  

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, একই রপ্তানিকারকের ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ৯৪টি পণ্যচালানের সন্ধান পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৮৫টির রপ্তানি সম্পন্ন হয়েছে। রপ্তানি সম্পন্ন ৮৫টি চালানে পণ্যের পরিমাণ ৮৮২ মেট্রিক টন এবং ঘোষিত মূল্য ২২ কোটি টাকা। আটক ৯টি চালানে পণ্যের পরিমাণ ১১৮ মেট্রিক টন এবং ঘোষিত মূল্য ৩ কোটি টাকা। তবে আটক পণ্যের নমুনা দৃষ্টে প্রকৃত বিনিময় মূল্য বেশি হবে বলে মনে হচ্ছে।  

এতে আরও বলা হয়, সবগুলো রপ্তনি চালানের বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। এরূপ আরও কিছু সংখ্যক রপ্তানিকারকের বিষয়ে গোপন সংবাদ থাকায় সেগুলোর বিষয়েও তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সার্বিক অনিয়মের বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ের যুগ্ম পরিচালক সাইফুর রহমানকে আহ্বায়ক করে ৮ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

news24bd.tv/ইস্রাফিল