দেহ ব্যবসা করতো র‌্যাম্প মডেল কান্তা

র‌্যাম্প শো মডেল কান্তা আক্তার স্বপ্না

দেহ ব্যবসা করতো র‌্যাম্প মডেল কান্তা

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে ইয়াবাসহ আটক শর্টফিল্ম নির্মাতা ও র‌্যাম্প শো মডেল কান্তা আক্তার স্বপ্নাকে (২৪) কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত। গতকাল (১৩ সেপ্টেম্বর)তাকে কক্সবাজার আদালতে তোলা হলে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।  

এর আগে বুধবার ২শ পিস ইয়াবাসহ জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিসের চৌকস টিমের হাতে ধরা পড়ে কান্তা। এ সময় তার কাছ থেকে নিজের নামে করা একটি ভুয়া পাসপোর্টের ফটোকপি ও বেশ কিছু কাগজপত্রও জব্দ করা হয়।

 

এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মাদকদ্রব্য আইনে মামলা করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কক্সবাজার অফিসের ইন্সপেক্টর আব্দুল মালেক তালুকদার। মামলা নং-জিআর ৭৩৭।

জানা যায়, মডেল তারকা কান্তা আক্তার স্বপ্না একটি বেসরকারি বিমানের যাত্রী ছিল। তার গ্রামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের নয়াপাড়া।

সে ওই এলাকার মুহাম্মদ হাসানের মেয়ে এবং ঢাকার মোহাম্মদপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী।

অনুসন্ধান করে জানা গেছে, শুটিংয়ের আড়ালে নিয়মিত ইয়াবা ও দেহ ব্যবসা করতো কান্তা আক্তার স্বপ্না। ইয়াবাসহ ধরা পড়ার পর উন্মোচিত হয় তার আসল চেহারা।  

কক্সবাজারের একটি তারকা মানের হোটেলের সিসি ক্যামেরায় পাওয়া ফুটেজে দেখা গেছে, গেল ২৫ আগস্ট ওই হোটেলের ৪২৫ নম্বর কক্ষে বয়ফ্রেন্ডসহ রাত্রি যাপন করেন কান্তা। এর আগে একই কক্ষে ‘রিসি’ (হোটেলের রেজিস্ট্রার অনুযায়ী) নামে এক নারীকে নিয়ে রাত্রি যাপন করে তৈয়বুর রহমান নামে আরেক যুবক।  

তবে তৈয়বুর রহমান হোটেল ভাড়া না দিয়ে কৌশলে পালিয়ে যায় বলে হোটেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। রহস্যজনকভাবে হোটেলের একই কক্ষে ওঠেন কান্তা। তাকে অনেকবার হোটেলে যাতায়াত করতে দেখেছেন বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার বিমানবন্দরে কর্মরত নিরাপত্তাকর্মীরা।  

কান্তা নিজেকে ‘র‌্যাম্প শো মডেল তারকা’ পরিচয় দেয়ায় সম্মান দেখিয়ে এতদিন চুপচাপ ছিলেন বিমানবন্দরে কর্মরতরা।

news24bd.tv

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর কক্সবাজার অফিসের ইন্সপেক্টর আব্দুল মালেক তালুকদার বলেন, ‘কান্তা আক্তার স্বপ্না শুটিংয়ের আড়ালে মাদক ব্যবসায় জড়িত বলে আমাদের কাছে প্রাথমিক তথ্য এসেছে। সে নিয়মিত কক্সবাজারে আসা-যাওয়া করতো। ২৫ আগস্ট কলাতলির একটি তারকা হোটেলে রাত্রি যাপন করেছে। একইভাবে ১১ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারে থেকে পরের দিন বিমানে উড়াল দেয়ার আগেই কক্সবাজার বিমানবন্দরে ২০০ ইয়াবাসহ ধরা পড়ে। ইয়াবার পরিমাণ যাই হোক, সে যে একজন মাদক ব্যবসায়ী, তা অনেকটা স্পষ্ট। ’

আটক হওয়ার পরে মাদকদ্রব্য অফিসে কান্তা আক্তার স্বপ্না স্বীকারোক্তি দেন যে, তিনি ২০১৩ সালে নারায়নগঞ্জ গার্লস স্কুল থেকে ‘এ’ গ্রেডে এসএসসি পাশ করেন। এরপর একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হন ঢাকার  মোহাম্মদপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজে। পড়ালেখার পাশাপাশি নাটক, শর্ট ফিল্মের শুটিং, র‌্যাম্প শোর শুটিংসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মডেল হিসেবে কাজ করতে থাকেন।  

কান্তা আরও জানান, তার মা গার্মেন্টসে চাকরি করেন। ছোট কালেই বাবা মুহাম্মদ হাসান তাদের সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান।

কান্তার ভাষ্য, তিনি শাহজাহান সম্রাট, নুর আলম আতিকসহ অনেকের সাথে শুটিং করেছেন। ‘আমিও মানুষ’, ‘সাউন্ড বক্স’, ‘সমান সমান’ ইত্যাদি তার অভিনীত নাটক। ১১ সেপ্টেম্বর তিনি একাই ঢাকা থেকে কক্সবাজার আসেন। সুজন নামে এক বয়ফ্রেন্ডের সাথে হোটেলে রাত কাটান।

এ বিষয়ে কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলনের যুগ্ম-আহবায়ক এইচএম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ফিল্ম নির্মাণ, শুটিং ইত্যাদির আড়ালে উঠতি বয়সি মেয়েদের অপব্যবহার করছে এক শ্রেণির নির্মাতা ও পরিচালকেরা। শুধু কান্তা নয়, কক্সবাজারে যারা শুটিং করতে আসে, তাদের অনেকেই মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধ কর্মে জড়িত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। ’

তাদের ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও সজাগ ও কঠোর হওয়ার আহবান জানিয়েছেন নাগরিক আন্দোলনের এই নেতা।


অরিন▐ NEWS24

সম্পর্কিত খবর