ইসলামে যে প্রক্রিয়ায় কৃতজ্ঞতা জানাবেন
ইসলামে যে প্রক্রিয়ায় কৃতজ্ঞতা জানাবেন

ইসলামে যে প্রক্রিয়ায় কৃতজ্ঞতা জানাবেন

মাইমুনা আক্তার

পরোপকার মুমিনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। আবার কেউ উপকার করলে তার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকাও মুমিনের কাজ। এটি রাসুল (সা.)-এর শিক্ষা। রাসুল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না সে আল্লাহর প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না।

অথবা যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞ নয়, সে আল্লাহর প্রতিও অকৃতজ্ঞ। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮১১)

তাই কারো কাছ থেকে উপকৃত হলে তার কৃতজ্ঞা জ্ঞাপন করা উচিত। কেউ কোনো উপহার দিলে সামর্থ্য থাকলে তাকেও কিছু উপহার দেওয়া উচিত। কোনো কিছু না থাকলে কমপক্ষে তার প্রশংসা করা উচিত।

তার সঙ্গে সদাচরণ করা উচিত। কিন্তু আমরা অনেক সময় কারো দ্বারা উপকৃত হলে সে যাতে এটাকে বড় করে না দেখে বা আমরা যেন তার কাছে ছোট না হয়ে যাই, এ জন্য তার সঙ্গে অদ্ভুত আচরণ শুরু করি। তার মন ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করি। তাকে বোঝানোর চেষ্টা করি, আমার উপকার করতে পারা তোমার ভাগ্য। আমার উপকার করার জন্য লাখ লাখ মানুষ আছে; কিন্তু তোমাকে উপকার করার সুযোগ দিয়ে আমি তোমার ওপর দয়া করেছি। (নাউজুবিল্লাহ!) এটা ইসলামের শিক্ষা নয়। প্রিয় নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘কাউকে যখন উপহারস্বরূপ কিছু দেওয়া হয়, তখন সে যদি এর পরিবর্তে দেওয়ার মতো কিছু পায় তাহলে যেন তা দিয়ে দেয়। আর যে এমন কিছু না পাবে সে যেন তার প্রশংসা করে। কেননা যে প্রশংসা করল সে-ও কৃতজ্ঞতা আদায় করল। আর যে লুকিয়ে রাখল সে অস্বীকার করল। (তিরমিজি, হাদিস : ২০৩৪)


তাই আমরা কারো দ্বারা উপকৃত হলে কমপক্ষে তার সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলতে পারি। মহান আল্লাহর কাছে তার জন্য দোয়া করতে পারি। সে দোয়ার ভাষা কী হবে, তাও শিখিয়েছেন রাসুল (সা.)। উসামা ইবনে জায়েদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কাউকে অনুগ্রহণ করা হলে সে যদি অনুগ্রহকারীকে বলে, ‘জাজাকাল্লাহু খইরান’ অর্থ : মহান আল্লাহ তোমাকে উত্তম প্রতিদান দিন, তবে সে উপযুক্ত ও পরিপূর্ণ প্রশংসা করল। (তিরমিজি, হাদিস : ২০৩৫)

আমাদের সমাজে অবশ্য আমরা কারো দ্বারা উপকৃত হলে তাকে থ্যাঙ্কইউ বলে থাকি। কিন্তু উপকারকারীর জন্য রাসুল (সা.)-এর ভাষায় দোয়া করাই বেশি ফজিলতপূর্ণ হবে। উপকারকারীর জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করাও এক ধরনের কৃতজ্ঞতা। আমরা কারো জন্য কিছু করতে চাইলেও কি-ই বা করতে পারব? কিন্তু মহান আল্লাহ যদি নিজ হাতে তাকে পুরস্কৃত করেন, তবে সেই পুরস্কার অবশ্যই তার শান অনুযায়ী হবে। তাই আমরা কারো দ্বারা উপকৃত হলে, বিপদ ও সংকটের সময় কাউকে কাছে পেলে তার কৃতজ্ঞতাস্বরূপ তার জন্য রাসুল (সা.)-এর ভাষায় ‘জাজাকাল্লাহ’ বলে দোয়া করতে পারি। মোনাজাতে তার জন্য মহান আল্লাহর কাছে কল্যাণ কামনা করতে পারি।