রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জান-ই আলমকে বদলির খবরে ওই এলাকার জনগণ একে অপরকে মিষ্টি মুখ করাচ্ছেন। অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে মঙ্গলবার (৭ মার্চ) সিনিয়র সহকারী কমিশনার মহিদুল হক স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাকে বদলি করা হয়। জান-ই আলমকে বগুড়ার ধনুট এবং ধনুটের ইউএনও সঞ্জয় কুমার মহন্তকে গোদাগাড়ীর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৬ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল ও সিনিয়র দায়রা জজ আদালতে জান-ই আলমের বিরুদ্ধে পাঁচ কোটি টাকার দুর্নীতি মামলা করেন আইনজীবী সালাহ উদ্দিন বিশ্বাস।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, জান-ই আলম ২০২০ সালের ৩ ডিসেম্বর গোদাগাড়ী ইউএনও হিসেবে যোগ দেন। এরপর থেকে তার বিরুদ্ধে ঘুষ, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। বর্তমানে তার প্রায় পাঁচ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ রয়েছে।
মামলা সূত্রে আরও জানা যায়, আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাড়ি নির্মাণে জোরপূর্বক বিভিন্ন ইটভাটা থেকে ইট ও বালুমহাল থেকে বালু নেওয়াসহ নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে দায়সারা কাজ করেছেন জান-ই আলম। এ ছাড়া প্রকল্পের সব ঘর নির্মাণ সম্পন্ন না হলেও শতভাগ অগ্রগতির ভুয়া তথ্য প্রদর্শন করেছেন। বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের বিল-ভাউচার স্বাক্ষর করার জন্য ৯টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের থেকে অবৈধভাবে অর্থ আদায় করেছেন।
টিআর-কাবিখার উন্নয়নমূলক কাজে ১০ শতাংশ হারে কমিশনও নিয়েছেন। এ ছাড়া আদিবাসীদের জমি কেড়ে নিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করা হলেও আদিবাসীদের ঘর দেননি। টাকার বিনিময়ে বিক্রি করেছেন আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর। ঘুষ না পেলে অন্যায়ভাবে আইনের অপ্রয়োগ করে নির্যাতনের অভিযোগও করা হয়েছে।
ইউএনও জান-ই আলমের বদলির আদেশ আসার পর অ্যাডভোকেট সালাহ উদ্দিন বিশ্বাসের অনুসারী ও মামলার সাক্ষীরা গোদাগাড়ী উপজেলা সদরে মিষ্টি বিতরণ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া ছবি ও ভিডিওতে দেখা যায়, অ্যাডভোকেট সালাহ উদ্দিন বিশ্বাসের দুটি মামলার সাক্ষী গোদাগাড়ী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম ও ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শহিদুল ইসলাম নিজেরা উল্লাস করে গোদাগাড়ী পৌর সদরের বিভিন্ন দোকানদার ও রাস্তার জনসাধারণকে মিষ্টি মুখ করাচ্ছেন।
news24bd.tv/আইএএম