এত অপমানের পর তাদের সঙ্গে কীসের বৈঠক?

সংগৃহীত ছবি

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী

এত অপমানের পর তাদের সঙ্গে কীসের বৈঠক?

অনলাইন ডেস্ক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ১৫ আগস্ট আমার বাবা-মাকে হত্যা করা হয়েছে। গ্রেনেড হামলা, বোমা হামলা করে আমাকেও হত্যার চেষ্টা করা হয়। এরপরও তাদের সাথে বৈঠকে বসেছি শুধু দেশের স্বার্থে। কিন্তু তারা একের পর এক অপমান করে গেল।

এত অপমানের পরও তাদের সঙ্গে কীসের বৈঠক?

সদ্য সমাপ্ত কাতার সফর নিয়ে সোমবার (১৩ মার্চ) বিকেলে গণভবনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে উপস্থিত এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, গত নির্বাচনে সংলাপ করেছি, রেজাল্টটা কি, নির্বাচনটাকে প্রশ্নবিদ্ধ ছাড়া কিছুই করেনি। ৩০০ আসনে ৭০০ নমিনেশন দিয়ে টাকা খেয়েছে।

এরপর নিজেরা নিজেরা নির্বাচন থেকে সরে গিয়ে নির্বাচনটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে সরকারপ্রধান বলেন, যে দল বেশি লাফায় সে দলের দুই নেতাই হচ্ছে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা না পারবে ইলেকশন করতে, না পারবে ক্ষমতায় আসতে।

তিনি বলেন, বিএনপি নিজের গঠনতন্ত্র নিজেরা ভঙ্গ করছে। কারণ, তাদের গঠনতন্ত্রে আছে সাজাপ্রাপ্ত আসামি দলের নেতা হতে পারে না। এখন সেই সাজাপ্রাপ্ত আসামিকেই দলের নেতা বানিয়ে রেখে দিয়েছে। এখন এই দলের কাছে কী আশা করবেন।

তিনি আরও বলেন, ‘১৫ আগস্ট আমার বাবা-মায়ের হত্যাকারী, গ্রেনেড হামলা, বোমা হামলা করে আমাকে হত্যার চেষ্টা- তাদের সাথে বসেছি শুধু দেশের স্বার্থে। শুধু তাই নয় খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে মারা গেল, আমি গেলাম দেখতে বা একজন সন্তানহারা মাকে সহানুভূতি জানাতে, আমাকে কীভাবে অপমানটা করলো, আমার গাড়ি ওই বাড়ির মধ্যে ঢুকতে দিল না, বড় গেইট বন্ধ। টেলিফোন নিয়ে সময় নেয়া হয়েছিল, আমি এইসময় আসব, তারা কি করল বড় গেইট বন্ধ করে দিল, পরে ছোট গেইটে গেলাম, আমার গাড়ি যাওয়ার পর সেটাও বন্ধ করে দিল। এতো অপমানের পর তাদের সঙ্গে কীসের বৈঠক।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার পরিষ্কার কথা, যারা এইটুকু ভদ্রতা জানে না তাদের সাথে বৈঠকের কি আছে। কেউ পারবেন বাবা-মায়ের হত্যাকারীদের সাথে এইভাবে বসে বৈঠক করতে। যেটুকু সহ্য করেছি, দেশের স্বার্থে জনগণের স্বার্থে, নিজের স্বার্থে না। ’

তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়ার ভাই এসে, বোন এসে আমার কাছে আকুতি করল। এরপর আমি তার সাজাটা স্থগিত করে তার বাসায় থাকা, চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। এটুকু যে করেছি সেটাই যথেষ্ট। এতো অপমানের পর তারা যে সহানুভূতি পেয়েছে, সেটা শুধু আমার কারণে। ’

নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করে দিয়েছি
আওয়ামী লীগ সরকার প্রথম নির্বাচন কমিশন করার জন্য আইন করে দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই আইনের ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন সবসময় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সঙ্গে ছিল, আওয়ামী লীগই প্রথম নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করে দিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) স্বাধীন করে দিয়েছি। আর্থিক সচ্ছলতা এনে দিয়েছি।

নির্বাচনকে সামনে রেখে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির চেষ্টা চলছে
নির্বাচনকে সামনে রেখে অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরির চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতির স্থিতিশীলতার জন্য অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন আর ভোট কারচুপির সুযোগ নেই। আমরা ছবিসহ ভোটার তালিকা করে দিয়েছি। এনআইডি যুক্ত করা হয়েছে। ভুয়া ভোটার দিয়ে নির্বাচন করার সুযোগ নেই। আমরা ইভিএমে ভোট করতে চেয়েছিলাম, অনেকে আপত্তি করেছেন। নির্বাচন কমিশন যতটা সম্ভব ইভিএম ব্যবহার করবে। ভোটাররা আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে ভোট দেবেন।

রমজানে দ্রব্যমূল্যের কষ্ট লাঘবে যথাযথ ব্যবস্থা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ে মানুষের যেন কষ্ট না হয় সেজন্য সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছে। আর আমরা এখন আর পরনির্ভরশীল নই। আমরা নিজেরাই এখন উৎপাদন করছি। আমাদের পর্যাপ্ত খাদ্য মজুত আছে। আশা করি রমজানে কোনো অসুবিধা হবে না। তবে কেউ খাদ্যপণ্য মজুত করে পচিয়ে ফেললে আমাদের তো কিছু করার থাকবে না। সেদিকে সাংবাদিকদেরও একটু নজর রাখতে হবে।

দ্রব্যমূল্য নিয়ে তিনি বলেন, খাদ্যদ্রব্য নিয়ে সমস্যাটা হচ্ছে, দাম বেশি কমালে উৎপাদকদের লোকসান হবে, আবার দাম বেশি বাড়ালে ভোক্তাদের কষ্ট হয়। এ জায়গায় সবসময় ব্যালেন্স করতে হয়। তিনি আরও বলেন, আমরা বিরোধীদলে থাকার সময়ও বসে থাকিনি। তখন আমরা ভবিষ্যতের কর্মপরিকল্পনা ঠিক করতে কাজ করেছি।
news24bd.tv/AA