ইংলিশদের ‘বাংলাওয়াশ’ করলো টাইগাররা

সংগৃহীত ছবি

ইংলিশদের ‘বাংলাওয়াশ’ করলো টাইগাররা

অনলাইন ডেস্ক

দাবিদ মালান ও জস বাটলারের ব্যাটিংয়ে হাত ফসকে বেরিয়ে যাচ্ছিল ম্যাচ। সেখান থেকে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরালেন পেসাররা। সেই পেসারদের অনবদ্য বোলিংয়েই টি২০ সিরিজে ইংল্যান্ডকে ‘বাংলাওয়াশ’ করলো টাইগাররা। আজ মঙ্গলবার মিরপুরে সিরিজের শেষ টি২০ ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ১৬ রানে হারিয়ে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ শেষ করলো বাংলাদেশ।

টি২০ ফরম্যাটে এ নিয়ে চতুর্থবার কোনো দলকে হোয়াইটওয়াশ করলো বাংলাদেশ। আয়ারল্যান্ড, জিম্বাবুয়ে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের পর বাংলাদেশের কাছে ধবলধোলাই হওয়ার লজ্জায় পড়লো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড।

সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ হেরে আগেই সিরিজ খোয়ানো ইংল্যান্ড আজ ছিল জয়ের পথেই। অভিষিক্ত তানভীর ইসলাম তার প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই তুলে নিয়েছিলেন ফিলিপ সল্টকে।

খালি হাতে এই ইংলিশ ওপেনারকে সাজ ঘরে ফেরান তানভীর। শুরুতে উইকেট হারালেও ১৫৯ রান তাড়া করা ইংল্যান্ড হারায়নি পথ। বাটলার-মালান জুটিতে সান্ত্বনার জয়ের পথে হাঁটছিল সফরকারীরা।

তবে বিপত্তি বাঁধে ১৪তম ওভারে। ওই ওভারের প্রথম বলে ফিফটি তুলে নেওয়া মালানকে (৫৩) ফিরিয়ে দেন মুস্তাফিজুর রহমান। পরের বলেই মেহেদী হাসান মিরাজের দুর্দান্ত এক থ্রোয়ে রানআউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন বাটলার। ৪০ রান করে বাটলার ফিরতেই পথ হারায় ইংলিশরা। এরপরই শুরু হয় ইংলিশ ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিল। যেখানে সামিল হন মঈন আলী, বেন ডাকেট, স্যাম কারানরা।

পরপর দুই বল মালান-বাটলার ফেরার পর ইংল্যান্ডকে লড়াইয়ে রাখার চেষ্টা করেছিলেন মঈন-ডাকেট। তবে আরেক পেসার তাসকিন আহমেদ বাধ সাধেন সেখানে। ১৭তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মঈনকে (৯) ফেরানোর পর নিজের শেষ বলে ডাকেটকে (১১) দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন তাসকিন। তাতেই ম্যাচের পাল্লা ঝুঁকে পড়ে বাংলাদেশের দিকে। ১৯তম ওভারে সাকিব আল হাসানও যোগ দেন উইকেট নেওয়ার তালিকায়। প্রথম বলেই তিনি ফেরান মারকুটে স্যাম কারানকে (৪)।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ২৭ রান। হাসান মাহমুদের করা ওই ওভারের প্রথম দুই বলে চার মারেন ক্রিস ওকস। তবে দুই চার হজমের চাপ সামলে শেষ চার বলে হাসান খরচ করেন আর মাত্র ২ রান। ফলে ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জয় নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের।

এর আগে, টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ওপেনার লিটন দাসের ৭৩ এবং নাজমুল হোসেন শান্তর অপরাজিত ৪৭ রানের সুবাদে নির্ধারিত ওভার শেষে ২ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ১৫৮ রানের পুঁজি দাঁড় করায় বাংলাদেশ। অথচ বাংলাদেশের শুরুটা ছিল দারুণ। ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশের মিশনে নেমে পাওয়ারপ্লেতে কোনো উইকেটই হারায়নি বাংলাদেশ। ৬ ওভারে রান ওঠে ৪৬।

পাওয়ারপ্লে শেষে রানের গতি বাড়াতে গিয়েই নিজের বিপদ ডেকে আনেন রনি তালুকদার। আদিল রশিদকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে ব্যাটে-বলে হয়নি তার। বল চলে যায় রশিদের হাতেই। ২২ বলে ২৪ রান করে ফেরেন এই ওপেনার। সাজঘরে ফেরার আগে একবার জীবনও পেয়েছিলেন রনি। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে জফরা আর্চারের বলে থার্ড ম্যাচে ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন তিনি। তবে বল তালুবন্দি করতে পারেননি রেহান আহমেদ।

জফরা আর্চারের কপাল মন্দ। তার বলে ক্যাচ ছোটে আরও একটি। এবার লিটন দাসের ক্যাচ ছাড়েন বেন ডাকেট। জীবন পাওয়ার আগে ৪১ বলে ফিফটি তুলে নেন লিটন। ৫৩ রানে জীবন পান এই ওপেনার। এরপরই রান তোলার গতি বাড়ান তিনি। উইকেটের অন্য প্রান্তে নাজমুল হোসেন শান্ত এদিন শুরু থেকে ছিলেন আগ্রাসী। এ জুটির ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল স্কোরকার্ডে আজ ১৮০ এমনকি ১৯০ পর্যন্ত তুলে ফেলতে পারে বাংলাদেশ।

তবে শেষ পাঁচ ওভারে ইংলিশ পেসারদের খেলতে বেগ পেতে হয়েছি স্বাগতিক ব্যাটারদের। শেষ পাঁচ ওভারে রান ওঠে মাত্র ২৭। এ সময় আসে মাত্র একটি বাউন্ডারি। সাজঘরে ফেরেন লিটনও। ৫৭ বলে ৭৩ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলে ক্রিস জর্ডানকে উইকেট দেন তিনি।

লিটন ফেরার পর কারান-জর্ডান-আর্চারকে খেলতে হাঁসফাঁস করতে দেখা যায় শান্ত-সাকিবকে। ফিনিশ করতে নেমে সাকিব ৬ বলে করেন মাত্র ৪ রান। দারুণ শুরুর পরেও শান্ত তুলে নিতে পারেননি ফিফটি। ৩৬ বলে ৪৭ রানের অপরাজিত ইনিংস নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় তাকে।

news24bd.tv/SHS