আওয়ামী লীগ থেকে এ্যাড. কামরুলকে অপসারণের দাবিতে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের আল্টিমেটাম

সংগৃহীত ছবি

আওয়ামী লীগ থেকে এ্যাড. কামরুলকে অপসারণের দাবিতে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের আল্টিমেটাম

অনলাইন ডেস্ক

আওয়ামী লীগ থেকে প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলামের অপসারণের দাবিতে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। বিদেশে পলাতক আসামি তারেক জিয়ার এপিএস নুর উদ্দিন আহমেদ অপুর পক্ষে তার আইনি লড়াইয়ের ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচিতে এ আল্টিমেটাম দেয় মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘর সামনে এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করা হয়। সংগঠনের সাধারণ আল মামুনের সঞ্চালনায় উক্ত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল।

অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের ‍সপক্ষের শক্তির মানুষদের হৃদয়ে চরম আঘাত দিয়েছেন দাবি করে বক্তারা আওয়ামী লীগ থেকে তার বহিষ্কার চান। অন্যথায় আরও বড় ও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা হবে বলেও জানান তারা।

এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের উপদেষ্টা ও আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনালের সাক্ষী মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন জালাল, মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন মজুমদার, বিশিষ্ট নাট্য অভিনেতা ও মুক্তিযোদ্ধা আহসানুল হক মিনু, মুক্তিযোদ্ধা বাহারউদ্দীন বাহার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কানিজ ফাতেমাসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘সম্প্রতি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য এ্যাড. কামরুল ইসলাম বিদেশে পলাতক আসামি খুনি তারেক জিয়ার এপিএস নুর উদ্দিন আহমেদ অপুর পক্ষে আইনি লড়াইয়ের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।

আওয়ামী লীগের পদে থেকে তিনি খুনি তারেক জিয়ার এপিএস অপুর পক্ষে আইনি লড়াই করতে পারেন না। ’

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার নিকট আমিনুল ইসলাম বুলবুল আহ্বান রাখেন অবিলম্বে কামরুল ইসলামকে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কার করা হোক। তিনি বলেন, ‘খুনি তারেক জিয়ার এপিএসের অর্থের কাছে তিনি তার আদর্শ বিক্রি করেছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা কখনোই তার এ ধরণের কর্মকাণ্ড মেনে নিবে না। আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে আওয়ামী লীগ থেকে তাকে বহিষ্কার করতে হবে। অন্যথায় কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। ’

আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনালের সাক্ষী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা জহির উদ্দিন জালাল বলেন, ‘একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মূলহোতা খুনি তারেক জিয়ার এপিএস নুর উদ্দিন আহমেদ অপুর জামিনের পক্ষে আইনি লড়াই চালিয়ে এ্যাড. কামরুল ইসলাম বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে বেঈমানি করেছেন। খুনি তারেক জিয়ার এপিএস অপুর সাথে যোগাযোগ দেখে আমাদের সন্দেহ হচ্ছে। বিদেশে পলাতক আসামি খুনি তারেক জিয়ার সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ আছে কি-না বিষয়টি খতিয়ে দেখার দাবি জানাচ্ছি। দলের ভিতর ঘাপটি মেরে থাকা অপশক্তিরা বঙ্গবন্ধু কন্যার বিরুদ্ধে নানাবিধ ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। এদেরকে রুখে দিবে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। ’

বিশিষ্ট নাট্য অভিনেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আহসানুল হক মিনু বলেন, ‘জঙ্গি ও সন্ত্রাসের মদদদাতা খুনি তারেক জিয়ার এপিএস অপুর জামিনের পক্ষে আইনি লড়াই চালিয়ে এ্যাড. কামরুল ইসলাম প্রমাণ করেছেন তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে বিচ্যুত হয়েছেন। আওয়ামী লীগের মধ্যে ঘাপটি মেরে থেকে তিনি খুনি তারেক জিয়ার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করেছেন। দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার অপরাধে তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগকে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় আমরা আরোও বড় কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবো। ’

বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন মজুমদার বলেন, ‘খুনি তারেক জিয়ার এপিএস অপুর জামিনের পক্ষে আইনি লড়াই করে এ্যাড. কামরুল ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির মানুষদের হৃদয়ে চরম আঘাত দিয়েছেন। অর্থের জন্য তিনি এ ধরণের দলীয় আদর্শ পরিপন্থী কর্মকাণ্ড করবেন তা কখনোই কাম্য নয়। এ্যাড. কামরুল ইসলামের উচিত দ্রুত আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করা। অন্যথায় বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাকে পদত্যাগ করাতে বাধ্য করবে। ’

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার মাস্টারমাইন্ড খুনি তারেক জিয়ার এপিএস নূর উদ্দিন আহমেদ অপুর জামিনের পক্ষে আইনি লড়াই করে এ্যাড. কামরুল ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের মানুষদেরকে ব্যথিত করেছেন। আইনজীবী হিসেবে কামরুল ইসলামের আলাদা একটা পরিচিতি আছে। আইনজীবী হিসেবে তিনি যেকোনো মামলা লড়তে পারেন। এতে আইনি কোনো বাধ্যবাধকতা নাই। তবে আদর্শ বলে একটা ব্যাপার থাকে, দৃষ্টিভঙ্গিগত একটা ব্যাপার থাকে। দৃষ্টিভঙ্গিগত ব্যাপারটা সবসময় পেশাগত নৈতিকতার মধ্যে পড়ে না। বা পড়লেও অনেকে অনেকভাবে মানিয়ে নেন। কিন্তু আদর্শগত ব্যাপারটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ’

তিনি আরও বলেন, ‘এ্যাড. কামরুল ইসলাম আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে এধরণের দলীয় আদর্শ পরিপন্থী কর্মকাণ্ড করতে পারেন না। তিনি আওয়ামী লীগের দলীয় পদ ছেড়ে বিএনপির-জামাতের দোসরদের পক্ষে আইনি লড়াই চালালে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আওয়ামী লীগের উচিত আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে তাকে শোকজ করে জবাবদিহিতার আওতায় আনা। কারণ সে আওয়ামী লীগের দলীয় আদর্শ ও গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করেছেন। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নিকট আমাদের দাবি, দলের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। অন্যথায় বিএনপির-জামাতের দোসররা আজীবন এ ধরণের লোকদের ব্যবহার করে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করে দিবে। ’

news24bd.tv/SHS