পটুয়াখালীতে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, উপজেলা চেয়ারম্যান-ওসি সহ আহত ২৫

পটুয়াখালীতে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, উপজেলা চেয়ারম্যান-ওসি সহ আহত ২৫

পটুয়াখালী প্রতিনিধি:

পটুয়াখালীর বাউফলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ১০৩ তম জন্ম বার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আনন্দ র‌্যালী নিয়ে যাওয়ার সময় বাধা দেয়াকে কেন্দ্র করে উপজেলা আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।  

এতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদার, বাউফল থানার ওসি আল-মামুনসহ কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছেন।  

আজ শুক্রবার সকালে বাউফল হাই স্কুল মাঠ থেকে আনন্দ র‌্যালী শুরু হয়ে উপজেলা পরিষদ চত্বরে গিয়ে পৌঁছালে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালেব হাওলাদার গ্রুপ ও সাবেক চীফ হুইপ আ স ম ফিরোজ এমপি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।  

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রথমে লাঠি চার্জ করে ব্যর্থ হলে ২০ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।

এ সময় দু’গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিনত হয়। এতে শহর জুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত হয়ে দোকান-পাট বন্ধ করে দেয়।  

আহত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদারসহ ৬ জনকে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

বাকি আহতদের বাউফল উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।  

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী ও নেতা-কর্মী সূত্রে জানা যায়, সকালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ১০৩ তম জন্ম বার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে উপজেলা পরিষদ চত্বরে ফুল দিতে নেতা-কর্মীদের নিয়ে আনন্দ র‌্যালী সহকারে যাচ্ছিলেন সাধারণ সম্পাদক মোতালেব হাওলাদার গ্রুপ। এ সময় আ স ম ফিরোজ গ্রুপ উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে জনতা ভবনের সামনে অবস্থান নেয়।  

অন্যদিকে মেয়র জিয়াউল হক জুয়েল গ্রুপও উপজেলার কাছাকাছি অবস্থান নেয়। মোতালেব হাওলাদার গ্রুপ উপজেলা পরিষদ চত্বরে ঢুকতে চাইলে তিন গ্রুপের সংঘর্ষের আশঙ্কায় পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ সময় মোতালেব হাওলাদার তার নেতৃত্বে নেতা-কর্মীদের নিয়ে সামনে এগিয়ে গেলে প্রথমে পুলিশ লাঠি চার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়ার চেষ্টা করে। পরে মোতালেব হাওলাদার জনতা ভবনের দিকে এগিয়ে যেতেই আ স ম ফিরোজ গ্রুপের সাথে সংঘর্ষ শুরু হয়।  

এ সময় মোতালেব হাওলাদারসহ তার বেশ কিছু নেতা-কর্মীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করা হয়। পরে উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু হলে এলাকা রণক্ষেত্রে পরিনত হয়। এতে পুলিশসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছে। পরে আহতদের মধ্যে মোতালেব হাওলাদারসহ ৬ জনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকি আহতদের বাউফল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।  

বাউফল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আল মামুন বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রথমে লাঠি চার্জ করা হয়। এতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় বিশ রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়া হয়েছে। এতে তিনিসহ পুলিশের আরও সদস্য আহত হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো আল আমিন বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে কোন কথা বলা যাবে না, বললেও পরে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদার আহত হওয়ায় তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।  

এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক চীফ হুইপ আ স ম ফিরোজ এমপি বলেন, সংঘর্ষ কিছু না, সংঘর্ষ বলতে যা বুঝায়, তা না। আসলে বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার নেতা-কর্মী আসছে। এখানে একটা বাধার সৃষ্টি করা, এটা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা, নিউজ করার জন্যই বোধ হয় আজকের এই ঘটনা।  

তিনি আরও বলেন, এটা কোন ঘটনা না। আমি ছিলাম অনেক পিছনে, ওরা ছিল উপজেলা পরিষদের গেইটের সামনে। আমি তেমন কিছু জানি না। কিছু কিছু লোকে আঘাত পাইছে শুনছি। আমি এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। শুনছি একজন হাসপাতালে ট্রিটমেন্ট নিচ্ছে। আর একজনের গুলি লাগছে। বড় ধরনের কোন দুর্ঘটনা ঘটে নাই। তাইলে খবর পাইতাম। ছোট-মোটো ঘটনা ঘটছে। এই আর কি?

news24bd.tv/কেআই