হোটেলের বাথরুমে তিন দিন ধরে পড়ে ছিলো তরুণীর মরদেহ

হোটেলের বাথরুমে তিন দিন ধরে পড়ে ছিলো তরুণীর মরদেহ

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি

ময়মনসিংহ নগরীর বড় বাজার এলাকায় নিরালা রেস্ট হাউজের ২০৯ নম্বর কক্ষের বাথরুমে পড়ে ছিল অজ্ঞাত (২০) এক তরুণীর ক্ষত বিক্ষত লাশ। শনিবার দুপুর দুইটার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বাথরুম থেকে লাশটি উদ্ধার করে।

সিআইডি জানায়, তাদের ক্রাইম সিনের একটি টিম সেখানে গিয়ে আলামত সংগ্রহের চেষ্টা চালায়। যাবার আগেই লাশ বাথরুম থেকে বের করে এনে কক্ষের মেঝেতে রাখা হয়।

এতে করে অনেক আলামত নষ্ট হয়ে গেছে।

সিআইডির ওসি মো. ইউসুফ জানান, এটা পূর্ব পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, এটা স্পষ্ট। মেয়েটির বয়সও কম। হোটেল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই অপরাধী হত্যাকাণ্ডের সুযোগ নিয়েছে।

তবে ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে। সেখানে দেখা যায়, বুধবার দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে তারা কক্ষটি ভাড়া নেয়। ছেলেটি মুখে মাস্ক পরা ছিল। তবুও নিজেকে সিসি ক্যামেরা থেকে লুকাতে বারবার হাত দিয়ে চোখ ঢাকার চেষ্টা করছিল।

তিনি আরও জানান, আমরা ফরেনসিকের জন্য আলামত সংগ্রহ করেছি। ডিএনএ টেস্ট করার জন্য নমুনা পেয়েছি। তবে হোটেল রেজিস্টারে মেয়েটির নাম শাহিদা (২০) লিখলেও সানজিদা নাম দিয়ে সই করেছে মেয়েটি। তার আঙ্গুলের ছাপ পরীক্ষার জন্য নমুনা নিলেও তা মেলেনি। কারণ তার বয়স ১৬ থেকে ১৭’র মধ্যেই। তাই এনআইডি কার্ডও হয়নি।

পৈশাচিক কায়দায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে জানিয়ে সিআইডির ওসি বলেন, প্রায় ১০ ইঞ্চির মত জবাই করা হয়েছে। দুই হাতের কব্জিতেও প্রায় তিন ইঞ্চি করে কোপানো হয়েছে। এমনকি দুই গালেও দুইটি করে কোপের দাগ আছে।

নগরীর এক নং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, এর আগে শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে গেস্ট হাউজের ওই কক্ষটি পরিষ্কার করতে যায় এক পরিচ্ছন্ন কর্মী। কিন্তু তিনদিন ধরেই কক্ষটি তালাবন্ধ থাকায় শনিবারও ওই কক্ষ পরিষ্কার করতে পারেনি হোটেল কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি সন্দেহ হলে পুলিশকে খবর দেয়া হয়। পরে পুলিশ গিয়ে লাশটি হেফাজতে নেয়।

কোতোয়ালী মডেল থানার ওসি শাহ কামাল আকন্দ জানান, আলামত সংগ্রহ শেষে লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেলে পাঠানো হয়। গত ১৪ মার্চ শাহিদা (২০) ও রাকিব (৩০) নাম ব্যবহার করে ওই কক্ষটি গত মুন্সিগঞ্জ সদরের সার্কিট হাউজের ঠিকানা উল্লেখ করে বুধবার চার দিনের জন্য কক্ষটি ভাড়া নেয় তারা। ধারণা করা হচ্ছে ওই রাতেই তরুণীকে গলা কেটে হত্যা করে পরদিন সকালে পালিয়ে যায় ওই যুবক। লাশটি অর্ধগলিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।

ওসি আরও জানান, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রেস্ট হাউজ মালিক মো: মূসাকে আটক করা হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুত এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হবে। ইতোমধ্যে আমরা বেশ কয়েকটি ক্লু পেয়েছি।

news24bd.tv/FA

এই রকম আরও টপিক