শাকিবের বিষয়ে এবার যা বললেন সেই প্রযোজক

সংগৃহীত ছবি

শাকিবের বিষয়ে এবার যা বললেন সেই প্রযোজক

অনলাইন ডেস্ক

ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়ক শাকিব খানের বিরুদ্ধে ধর্ষণসহ নানা অভিযোগ তুলেছেন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী বাঙালি প্রযোজক রহমত উল্লাহ। গত ১৫ মার্চ অভিনেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার পর শাকিবও অভিযোগ নেয়ার জন্য ছুটে বেড়িয়েছেন। প্রথমে রাজধানীর গুলশান থানায় ও পরে ডিবি কার্যালয়ে হাজির হয়েছিলেন চিত্রনায়ক। অভিযোগ নিয়ে আলাদা আলাদা সময়ে নানা কথা বলছেন ওই প্রযোজক ও শাকিব।

এবার অস্ট্রেলিয়া থেকে বাংলাদেশ সময় পৌনে ৪টায় সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে শাকিবের মামলার চেষ্টা ও সংবাদমাধ্যমে দেয়া বক্তব্যসহ অন্যান্য বিষয়ে কথা বলেছেন রহমত উল্লাহ। পাঠকদের জন্য সেই স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হলো নিচে।

রহমত উল্লাহ লিখেছেন, ‘গতকাল স্থানীয় সময় রাত ৮টায় আমি অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছেছি। এখানে আসার পর জানতে পারলাম অভিনেতা শাকিব আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে প্রথমে গুলশান থানায় যান।

সেখানে অভিযোগ দায়েরে ব্যর্থ হয়ে তিনি ডিবি পুলিশের কাছে অভিযোগ দেন। তিনি বলেছেন আমি নাকি প্রযোজকদের একজন ছিলাম না। তিনি সাংবাদিকদের কাছে বলেন যে আমি চাঁদাবাজি এবং প্রতারণা করছি। এই ব্যাপারে আমার জবাব এবং বক্তব্য তুলে ধরা হল। ’

‘বিগত ছয় বছর ধরে আমি নানাভাবে যোগাযোগে ব্যর্থ হয়ে একরকম নিরুপায় হয়েই বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্প সমিতিতে অভিযোগ দিয়েছিলাম। আমার অভিযোগটি খুবই সিম্পল। অভিনেতা শাকিবকে অভিনয় করার জন্য অস্ট্রেলিয়াতে আনা হয়েছিল। এই জন্য তো তাকে পারিশ্রমিক দেয়া হয়েছিল। পেশাগত কাজে মনোনিবেশ না করে তিনি এমন কিছু অনৈতিক এবং অবৈধ কাজ করেছিলেন যেগুলোর কারণে ঐ চলচ্চিত্রটির কাজ আর শেষ হলো না। একটি প্রজেক্টে অর্থ লগ্নি করে যদি অন্য ব্যক্তির কারণে আমার সেই বিনিয়োগ নষ্ট হয়, তাহলে সেই ব্যক্তিকে এই ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করতে পারার নৈতিক এবং আইনি অধিকার আমার আছে। ’

তিনি লেখেন, ‘নিজের নাম, পরিচয় এবং যোগাযোগের মাধ্যম সঠিকভাবে উল্লেখ করে, প্রকাশ্য দিনের আলোয় বাংলাদেশ শিল্পী সমিতিতে সশরীরে হাজির হয়ে আমি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম। গভীর রাতের অন্ধকারে চুপিসারে এমনটি করিনি। ঐ অভিযোগে যদি একটুও মিথ্যা থাকতো, অথবা আমার যদি অসৎ কোনো উদ্দেশ্য থাকতো, তাহলে কি আমি এমন সাহস দেখাতে পারতাম বলে আপনাদের মনে হয়? আমার সঙ্গে কথা বলে কি আপনাদের কখনো মনে হয়েছে যে আমার মধ্যে মিথ্যা বলার প্রবণতা আছে? বিগত প্রায় দুই যুগের মতো সময়ে ধরে আমি অগণিতবার বাংলাদেশি শিল্পীদের অস্ট্রেলিয়ায় পারফর্ম করার ব্যাপারে স্পন্সর করেছি। কেউ কি বলতে পারবেন আমি কখনো কোনোদিন কারো সঙ্গে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছিলাম? অভিনেতা, অভিনেত্রী, গায়ক, গায়িকা, এমন কেউ কি আছেন আমার সততা নিয়ে একটি অভিযোগ করতে পারবেন?’

‘আমি অভিযোগ জমা দিয়েছিলাম ১৫ মার্চ ২০২৩ তারিখ দুপুর বেলা। সেদিন ছিল বুধবার। এটি ছিল একটি কার্যদিবস। এর পরদিন, বৃহস্পতিবারও একটি কার্যদিবস ছিল। শাকিব একজন বুদ্ধিমান ব্যক্তি। তার তো লিখিত অভিযোগ দেখেই বুঝে যাওয়ার কথা এখানে কোনো মিথ্যা বলা হয়েছিল কিনা। যদি শাকিবের সেই সৎ সাহস থাকতো, এই দুটি কার্যদিবসের মধ্যেই তিনি আমার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারতেন। ’ 

আইনের আশ্রয় না নিয়ে শাকিব চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাসকে পাঠিয়েছিলেন উল্লেখ করে রহমত উল্লাহ লিখেন, ‘অপু আমাকে জানালেন, শাকিব মধ্যস্থতা করতে চায়। আমি সরল বিশ্বাসে শাকিবের সঙ্গে দেখা করতে রাজি হলাম। ১৬ মার্চ ২০২৩ তারিখে গুলশানের একটি রেস্তরাঁয় শাকিবের সঙ্গে আমার দেখা হয়। তিনি আমাকে লগ্নিকৃত অর্থ ফিরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবার প্রস্তুতি দেন। শাকিব ছাড়াও সেই আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির প্রাক্তন সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু, অপু বিশ্বাস, শাকিবের চাচাত ভাই মনির এবং অন্য একজন ব্যক্তি, যার নাম আমার জানা নেই। ’ 

সবশেষ তিনি আরও লেখেন, ‘১৬ মার্চের সেই মিটিংয়ে আমি শাকিবকে জানাই যে ১৯ মার্চ ২০২৩ তারিখ রাত ১টা বাজে আমি ক্যাথে প্যাসিফিক এয়ার লাইনের ফ্লাইটে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে বাংলাদেশ ত্যাগ করছি। আমি পালিয়ে যাইনি। সেই প্রয়োজনও আমার নেই। প্রয়োজনে আমি আবার দেশে আসব। আমাকে যারা সহযোগিতা করেছেন আমি তাদের সবার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই। ’
news24bd.tv/আলী