ইন্টারপোলের রেড নোটিশের পর ফাঁকা আরাভ জুয়েলার্স

সংগৃহীত ছবি

ইন্টারপোলের রেড নোটিশের পর ফাঁকা আরাভ জুয়েলার্স

অনলাইন ডেস্ক

পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পরিদর্শক মামুন ইমরান হত্যা মামলার আসামি দুবাইয়ের বিতর্কিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলামের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি করা হয়েছে। গতকাল ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এ তথ্য জানিয়েছেন।  

সম্প্রতি ব্যপক ঢাকঢোল পিটিয়ে দুবাইয়ে একটি স্বর্ণের দোকান চালু করেন আরাভ। তার সেই দোকান উদ্বোধন করতে যান বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলমসহ বেশ কয়েকজন তারকা।

এরপর থেকে তুমুল আলোচনায় আরাভ খান।

অনুসন্ধানে পুলিশ নিশ্চিত হয় ‘আরাভ খান’ নাম ধারণ করে দুবাইয়ে পাড়ি জমানো এই ব্যক্তিই পুলিশ কর্মকর্তা মামুন ইমরান খান হত্যা মামলার আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আপন। এরপরই তার বিরুদ্ধে কীভাবে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যায় তা নিয়ে তৎপর হয় পুলিশ। ইন্টারপোলের কাছে রেড নোটিশ জারির আবেদন করা হয়।

যোগাযোগ করা হয় ভারত ও দুবাইয়ের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গেও। দ্রুত তাদের সাড়াও মেলে। এরপরই আলোচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ, ভারত ও দুবাইয়ের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ শুরু করেছে। এরইমধ্যে তাকে দেশে ফেরাতে রেড নোটিশ জারি করেছে ইন্টারপোলও।

এদিকে, হত্যা মামলার আসামি আরাভ খান চাপের মুখে হঠাৎ তার সোনার দোকান ‘আরাভ জুয়েলার্স’ ফাঁকা করে ফেলেছেন। সেখানে নেই কোনো স্বর্ণালংকার। এমন কিছু ছবি প্রকাশিত হয়েছে গণমাধ্যমে। ছবিগুলোতে দেখা যাচ্ছে, তার সেই সোনার দোকানটি পুরোপুরি ফাঁকা। সেখানে নেই কোনো স্বর্ণালংকার। দোকানের সামনে পড়ে আছে কথিত ৬০ কেজি সোনা দিয়ে বানানো বাজপাখি ও বাঘের লোগো।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পুলিশ কর্মকর্তা মামুন ইমরান খান হত্যা মামলার তদন্ত সংস্থা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে পুলিশ সদরদপ্তর আরাভ খানের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে রেড এলার্ট জারির আবেদন করে। রেড এলার্ট জারির পর নড়েচড়ে বসেছে দুবাইয়ের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও।

সূত্র জানায়, রেড এলার্ট জারির পর থেকে দুবাইয়ের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। তারা আরাভ খানের মামলার এজাহার, অভিযোগপত্র, আদালতে জমা দেওয়া আসামিদের ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি, আদালত থেকে জারি করা বিভিন্ন মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ও জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিয়েছেন। আরাভ যে বাংলাদেশের নাগরিক, তা নিশ্চিত করতে তার বাবা ও মায়ের জাতীয় পরিচয়পত্রসহ সব কিছু বাংলা ভাষার পাশাপাশি ইংরেজিতে রূপান্তর করে পাঠানো হয়েছে। এসব নথিপত্র পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কাজ শুরু করেছে দুবাইয়ের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বন্দি বিনিময় চুক্তি রয়েছে। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের জেরে ভারতীয় একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা বাংলাদেশের বিভিন্ন সংস্থার লোকজনের সঙ্গে কথা বলছেন। আরাভ ভারতে কীভাবে ও কার সহযোগিতায় ভারতীয় পাসপোর্ট করেছে, দেশটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তা খতিয়ে দেখছে।

জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন উর রশীদ বলেন, ‘আরাভ খানের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে রেড এলার্ট জারি হয়েছে। এটা তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অন্যতম। এর আগে থেকেই দুবাই ও ভারতের সঙ্গে আমাদের কথা চলছিল। ’

news24bd/ARH