যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে বিতর্ক 

সংগৃহীত ছবি

মাসব্যাপী বিতর্ক প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরণ

যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে বিতর্ক 

অনলাইন ডেস্ক

আজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সংস্কৃতি চর্চা নেই, খেলাধুলা নেই, বিজ্ঞান চর্চা নেই, বিনোদন নেই। আছে শুধু পড়া পড়া আর পড়া। এতে শিশু কিশোরদের জিপিএ-৫ পাওয়ার আসক্তির দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। যা শিশু কিশোরদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে।

বিতর্ক হচ্ছে এমন একটি সহপাঠ্যক্রম যা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দক্ষতা ও চিন্তার প্রসার ঘটায়। যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। তাই শুধু ভালো ফলাফল নয়, ভালো মানুষ হিসেবেও নিজকে গড়ে তুলতে হবে।  

আজ মঙ্গলবার (২১ মার্চ) নওগাঁর মান্দা উপজেলা আয়োজিত মাসব্যাপী বিতর্ক প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফাইনাল ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।

উপজেলার মুক্তমঞ্চ সোপানে অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মান্দা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবু বাক্কার সিদ্দিক।

সভাপতির বক্তব্যে মো. আবু বাক্কার সিদ্দিক বলেন, সৎ মানুষ হতে হবে। কারণ সততাই পারে মানুষকে বড় করতে। সুস্থ্য-সংস্কৃতির চর্চা শিক্ষার্থীদের সুন্দর জীবন গড়ে দিতে পারবে। প্রন্তিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের সময়োপযোগী করতে বিতর্কের মত প্রতিযোগিতা আরও বেশি বাড়াতে হবে। যেন ধীরে ধীরে উপস্থাপনার ভয় কাটে, দক্ষতা বাড়ে তরুণ প্রজন্মের।

কিশোর অপরাধ বৃদ্ধির কারণ নিয়ে চুড়ান্ত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বিতার্কিকদের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে আশঙ্কাজনক হারে কিশোর অপরাধ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ বা তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহারের কারণে এই অপরাধের মাত্রা আরো বাড়ছে। বিশেষ করে টিকটক, লাইকি, ইমু, ফেসবুক, স্ট্রিমকার, মাইস্পেস, হাইফাইভ, বাদু ইত্যাদি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার কিশোর-তরুণদের বিপথগামী করে তুলছে।

তিনি বলেন, সন্তানের প্রতি অনাদর, সন্তানকে সময় না দেয়া, মাদকের সহজলভ্যতা, সুশাসনের অভাব, রাজনৈতিক প্রতিহিংসাও কিশোর অপরাধ বৃদ্ধির জন্য দায়ী সামাজিক অবক্ষয়, পারিবারিক বন্ধনের ঘাটতি, বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ ইত্যাদি। এজন্য কিশোর অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি অভিভাবক ও শিক্ষকসহ সমাজের বিভিন্ন পেশার মানুষকে সমন্বিত ভাবে কাজ করতে হবে। বিশেষত পরিবারে সন্তানদের প্রতি বাবা মায়ের নজরদারি বাড়াতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।  

যুক্তির আলোয় খুঁজি মানুষের মুক্তি এই শ্লোগানে এবারের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় মাধ্যমিক পর্যায়ের ৭৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছে। তথ্যপ্রযুক্তির অপব্যবহারের কারণেই কিশোর অপরাধ বাড়ছে শীর্ষক বিষয়ে চুড়ান্ত প্রতিযোগিতায় পরানপুর হাই স্কুলকে পরাজিত করে মান্দা থানা আদর্শ বালিকা বিদ্যালয় বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় শ্রেষ্ঠ বক্তা হবার গৌরব অর্জন করে মান্দা থানা আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়ের বিতার্কিক নুসরাত জাহান নওমি। প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন ও রানার আপ দলকে মেডেল, ট্রফি, সনদপত্র সহ ২৫ হাজার টাকা করে ৫০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। শ্রেষ্ঠ বক্তাকে ট্রফি ও ১০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।  

অনুষ্ঠানে সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাকির মুন্সী, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: শাহ আলম, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোসা. মাহবুবা সিদ্দিকা, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল বাশার শামসুজ্জামান, প্রকল্প বাস্তাবায়ন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিমসহ মান্দা উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।