মাদারীপুরে ৩ কারণে বাস দুর্ঘটনা: তদন্ত প্রতিবেদন

মাদারীপুরে ৩ কারণে বাস দুর্ঘটনা: তদন্ত প্রতিবেদন

মাদারীপুর প্রতিনিধি 

মাদারীপুরে বাস দুর্ঘটনার ঘটনায় তিনটি কারণ চিহ্নিত ও তা বন্ধে ১৪টি সুপারিশ করে জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তদন্ত কমিটি। আজ বুধবার সকালে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়।

তদন্ত কমিটির প্রধান পল্লব কুমার হাজরা জানিয়েছেন, এই দুর্ঘটনার পরের দিন থেকে তারা তদন্ত কাজ শুরু করেন। গত রাতে (মঙ্গলবার) তা শেষ করেন।

এই সময়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন, স্থানীয়দের সাক্ষাতকার গ্রহণ, বাসটির নিহত চালক, হেলপার ও সুপারভাইজারের পরিবারের সদস্য ও বাসটির মালিকপক্ষের সাক্ষাতকারের ভিত্তিতে তারা এই প্রতিবেদনটি তৈরী করেছেন।

প্রতিবেদনে দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ির রেজিষ্ট্রেশন সাময়িক স্থগিত রাখার পরও ফিটনেসের মেয়াদ উত্তীর্ণ থাকায় তা এক্সপ্রেসওয়েতে চালানো, চালকের ভারী যান চালানোর লাইসেন্স না থাকা ও বৃষ্টি বিঘ্নিত পিচ্ছিল রাস্তায় গাড়িটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

তিনি আরও বলেন, হাইওয়ে এক্সপ্রেসওয়েটিতে গাড়ি খুব দ্রুতগতি চলাচল করে। তাই এই সড়কে দুর্ঘটনা বন্ধে দ্রুতগতি সম্পন্ন গাড়ির যাত্রীদের সিটবেল্ট পরিধান নিশ্চিত, গতিসীমা নিয়ন্ত্রণ করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নজরদারি, প্রতিটি গাড়িতে এবং মহাসড়কে জিপিএস ট্রাকার রাখা, সিসি ক্যামেরা স্থাপন ও অনলাইনে মনিটরিং করার ব্যবস্থা রাখাসহ ১৪টি সুপারিশ করে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।

গত রোববার খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের একটি বাস পদ্মা সেতুর আগে এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত নারীসহ ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার পর মাদারীপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়।

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হলেন, মাদারীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিএম) পল্লব কুমার হাজরা। কমিটির সদস্যরা হলেন- মাদারীপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মনিরুজ্জামান ফকির, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সহকারী অধ্যাপক শাহনেওয়াজ হাসানাত-ই-রাব্বি, মাদারীপুর বিআরটিএর সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নুরুল হোসেন।

এ ছাড়া বাস কোম্পানিকে অভিযুক্ত করে শিবচর থানায় মামলা করেছে হাইওয়ে পুলিশ। রোববার গভীর রাতে শিবচর হাইওয়ে থানার সার্জেন্ট জয়ন্ত সরকার বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

রোববার ভোরে খুলনা থেকে যাত্রীবোঝাই করে ইমাদ পরিবহনের একটি বাস ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসে। বাসটি গোপালগঞ্জের ঘোনাপাড়া থেকে ১৫ জন যাত্রী তুলে। পদ্মা সেতুর আগে ঢাকা-খুলনা এক্সপ্রেসওয়ের মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর সীমানায় এলে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিচে পড়ে যায়। বাসটি এক্সপ্রেস হাইওয়ের নিচের আন্ডারপাসের গাইড ওয়ালের সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ১৪ জন নিহত হন। হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও তিনজনের মৃত্যু হয়। এ ছাড়া ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।

news24bd.tv/রিমু