নোবিপ্রবিতে বেঞ্চে বসা নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগ

নোবিপ্রবিতে বেঞ্চে বসা নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায় ছাত্রলীগ

শিক্ষকসহ আহত ১৫, পুলিশ মোতায়েন 

নোয়াখালী প্রতিনিধি

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসএকটি চায়ের দোকানের সিনিয়র-জুনিয়র বিরোধের জের ধরে ছাত্রলীগ সমর্থক দুই দল ছাত্রের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাতেই ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ভাষা শহীদ আবদুস সালাম হল ও বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় একাধিক শিক্ষকসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১৫-২০ জন আহত হয়েছে।

এ সময় ভাষা শহীদ আবদুস সালাম হলের কয়েকটি কক্ষে ভাঙচুর করা হয় এবং বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাতেই ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

একাধিক শিক্ষার্থী জানান, বুধবার দুপুরের দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তিনিকেতন এলাকায় একটি চায়ের দোকানের সিনিয়র-জুনিয়র বেঞ্চে বসা নিয়ে দুই গ্রুপের একাধিক শিক্ষার্থীর মাঝে কথাকাটাকাটি হয়। এরপর দুপুর আড়াইটার দিকে ওই ঘটনার জের ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের অনুসারীরা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে জড়ান।

সেখানে ছাত্রলীগ নেতা মোহাইমিনুল ইসলাম ওরফে নুহাশের গ্রুপের এক শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ নেতা নাঈম গ্রুপের মাইনুল নামে এক ছাত্রকে মারধর করে জখম করে। এর জের ধরে দু্ই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে নুহাশ গ্রুপের লোকজন আবদুস সালাম হলের সামনে শোডাউন করে শক্তি প্রদর্শন করে। সেখানে নুহাশ গ্রুপের অনুসারীরা সালাম হলের কয়েকটি জানালা ভাঙচুর করে। পুনরায় সেখানেও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা গিয়ে ছাত্রদের নিবৃত করে। দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মী, সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা জানান,একটি চায়ের দোকানে সিনিয়র-জুনিয়র বিরোধ নিয়ে বুধবার বিকেলেও দুপুরে  ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নেতা মোহাইমিনুল ইসলাম নুহাশ ও নজরুল ইসলাম নাঈমের অনুসারীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনার জের ধরে বিকেল থেকে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। এর জের ধরে বুধবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে প্রথমে উভয়পক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে পাল্টাপাল্টি হামলায় লিপ্ত হয়। এ সময় একে অপরকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে উভয় পক্ষের সাত-আটজন আহত হন। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা সেখানে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর উভয়পক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা শহীদ আবদুস সালাম হলের সামনে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, সালাম হলের সামনের ঘটনায় ইটের আঘাতে একাধিক শিক্ষকসহ অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন।

ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ইকবাল হোসেন বলেন, বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে পুনরায় উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। তারা পুলিশকে খবর দেওয়ার পর পুলিশ ক্যাম্পাসে আসে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। ইটের আঘাতে আক্তার হোসেন নামের একজন শিক্ষক আহত হয়েছেন। আবাসিক হলে ভাঙচুরের শব্দ শোনা গেছে।

সুধারাম থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মিজানুর রহমান পাঠান বলেন, একটি চায়ের দোকানে সিনিয়র-জুনিয়র বসা নিয়ে সংঘর্ষের সূত্রপাত। বিক্ষিপ্তভাবে ইটের আঘাতে উভয় পক্ষের কিছু শিক্ষার্থী আহত হতে পারে। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের আলোকে এ বিষয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ক্যাম্পাসে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

news24bd.tv/তৌহিদ