ইতিহাস গড়ে সিরিজ জয় বাংলাদেশের

সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড ওয়ানডে সিরিজ

ইতিহাস গড়ে সিরিজ জয় বাংলাদেশের

অনলাইন ডেস্ক

ইতিহাস গড়ে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ। আজ বৃহস্পতিবার সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে আইরিশদের ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে স্বাগতিকরা। ওয়ানডে ক্রিকেটে ইতিহাসে উইকেটের হিসেবে এটাই সবচেয়ে বড় জয় টাইগারদের।

আজ বৃহস্পতিবার সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে আয়ারল্যান্ডের ইনিংস গুটিয়ে যায় মাত্র ১০১ রানেই।

ছোট সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় কোনো উইকেট না হারিয়েই। লক্ষ্য ছোট বলেই কি-না, ম্যাচ দ্রুত শেষ করার বড্ড তাড়া ছিল তামিম-লিটনের। দুজনে ১৩ ওভার ১ বলে শেষ করে আসেন ম্যাচ।  জয় নিশ্চিত হওয়ার সময় ইনিংসে বাকি ছিল ২২১ বল।
রানতাড়ায় বল বাকি থাকার হিসেবে এটি দ্বিতীয় বৃহত্তম বাংলাদেশের জন্য।

জয় এই জয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-০ ব্যবধানে নিজেদের করে নিয়েছে টাইগাররা। সিলেটে প্রথম ওয়ানডেতে ১৮৩ রানে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। পরের ম্যাচে স্বাগতিকরা রেকর্ড স্কোর করলেও বৃষ্টির কারণে বাতিল হয় ম্যাচটি।

শেষ ওয়ানডেতে রান তাড়ায় নেমে প্রথম ওভার থেকেই আগ্রাসী ছিলেন দুই বাংলাদেশি ওপেনার। প্রথম ওভারে তামিম ইকবাল নেন ৬ রান। দ্বিতীয় ওভারে লিটন দাস সংগ্রহ করেন ৮ রান। তৃতীয় ওভারে তামিম ছিলেন বিস্ফোরক। ১২ রান তুলে নেন তিনি। চতুর্থ ওভারে মাত্র ২ রান এলেও, পরের ওভার থেকে ৬ এর কমে রান নেয়নি বাংলাদেশ। এর মধ্যে পঞ্চম ওভারে ১০, সপ্তম ওভারে ১১, অষ্টম ওভারে ১৫ রান করে নেন তামিম-লিটন জুটি।

দুজনের মধ্যে ফিফটি পেয়েছেন কেবল লিটন। ৩৭ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের নবম ফিফটি তুলে নেন লিটন। তিনি অপরাজিত থাকেন ৩৮ বলে ৫০ রান করে। অপরদিকে, তামিমের ব্যাট থেকে আসে ৪১ বলে ৪১ রান।

এর আগে, সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আগে বোলিংয়ে নেমে তাসকিন-হাসান-এবাদতরা তুলে নেন উইকেটের ফায়দা। কন্ডিশনকে কাজে লাগিয়ে টপাটপ তুলে নিতে থাকেন উইকেট। অ্যালান ডোনাল্ডের শিষ্যরা রীতিমতো তাণ্ডব চালান অতিথি ব্যাটারদের ওপর। সেই তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে আইরিশদের ব্যাটিং ইনিংস গুঁড়িয়ে যায় মাত্র ১০১ রানেই। ২৮ ওভার ১ বল স্থায়ী হয় সফরকারীদের ব্যাটিং ইনিংস।  

বাংলাদেশের পেসারদের সামনে আজ মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেননি কোনো আইরিশ ব্যাটারই। তাদের সবকটি উইকেটই গেছে পেসারদের পকেটে। এর মধ্যে হাসান মাহমুদ একাই নিয়েছেন পাঁচ উইকেট। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথমবার ফাইফার পেলেন তিনি।  তাসকিন আহমেদ নিয়েছেন তিনটি উইকেট। অন্য দুই উইকেটের মালিক এবাদত হোসেন।

শুরুর দিকে উইকেট থেকে পেসাররা সহায়তা পাবেন বলে সতর্ক শুরু ছিল আয়ারল্যান্ডের। তবে পঞ্চম ওভারে আঘাত হানেন হাসান মাহমুদ। তার অফ স্টাম্পের বাইরে গুডলেংথের বলটা শেষ মুহুর্তে ঘুরে যায়। ব্যাট বাড়িয়ে খেলতে গিয়ে আউটসাইড-এজড হয়ে উইকেটের পেছনে থাকা মুশফিকুর রহিমকে ক্যাচ দেন স্টেফেন ডোহেনি।

নবম ওভারের প্রথম বলে আবারও আঘাত হানেন হাসান। এবার তার শিকার আরেক ওপেনার পল স্টার্লিং। হাসানের লেংথ থেকে ভেতরের দিকে ঢোকা বলের লাইন মিস করে এলবিডব্লু হন ৭ রান করা স্টার্লিং। ২ বল পর হ্যারি টেক্টর ধরেন তারই পথ। তিনিও এলবিডব্লুর ফাঁদে পা দিয়ে ফেরেন শূন্য হাতেই। পরের ওভারে সাফল্য পান তাসকিনও। এই পেসার ফেরান ৬ রান করা আইরিশ অধিনায়ক বালবার্নিকে।

দুই ওভারের মধ্যে তিন উইকেট হারিয়ে বসা আয়ারল্যান্ড এরপর চেষ্টা করে ধরে খেলে ইনিংস বড় করার। লরকান টাকার এবং কার্টিস ক্যাম্ফার উইকেটে টিকেও যান। তবে ঘরের ছেলে এবাদত হোসেন বাধ সাধেন তাতে। ১৯তম ওভারের শেষ দুই বলে দুই ব্যাটারকে ফেরান তিনি। পঞ্চম বলে ২৮ রান করা টাকারকে এলবিডব্লু করার পর জর্ড ডকরেলকে বোল্ড করেন তিনি। খালি হাতেই ফেরেন ডকরেল।

এরপর নিয়মিত বিরতিতে বাকি চার উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড। দ্বিতীয় স্পেলে বোলিংয়ে এসে তাসকিন একই ওভারে তুলে নেন অ্যান্ডি ম্যাকব্রায়ান (১) ও মার্ক অ্যাডায়ারের উইকেট। আর শেষ দুই উইকেট পকেটে পুরে ফাইফার পূরণ করেন হাসান। আইরিশদের হয়ে ইনিংস সর্বোচ্চ ৩৬ রান করে ক্যাম্ফারকে ফেরানোর পর গ্রাহাম হিউমকে এলবিডব্লু করে ৫ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন তিনি।

পেসারদের দুরন্ত বোলিংয়ের দিনে তামিম ইকবাল আজ স্পিনারদের দিয়ে বোলিং করিয়েছেন মোটে ৪ ওভার। এর মধ্যে নাসুম আহমেদ করেন ৩ ওভার। চোট কাটিয়ে দলে ফেরা মেহেদী হাসান মিরাজ করেছেন হাত ঘুরিয়েছেন এক ওভার। দলের সেরা স্পিনার অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে এদিন ব্যবহারই করেননি তামিম।

news24bd.tv/SHS