খালেদার কী অসুখ জাতি জানতে চায়: যুবলীগ চেয়ারম্যান

শুক্রবার রাজধানীর মুগদা থানার মান্ডা ইউনিয়ন যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

খালেদার কী অসুখ জাতি জানতে চায়: যুবলীগ চেয়ারম্যান

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

যুবলীগ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী বলেছেন, অসুখ বিষয়টিকে বিএনপি সব সময় ষড়যন্ত্রের সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করেছে। রাষ্ট্রপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েমকে অসুস্থ দেখিয়ে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করেছিল। আর এখন বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া অসুখের ভান ধরে লন্ডনে বসে পুত্র তারেক রহমানকে সঙ্গে নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন।  

বিএনপি নেতারা প্রধান বিচারপতির অসুস্থতার খবর নেওয়ার আগে বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা কী সেটা বলুন।

জাতি খালেদার অসুখের খবর জানতে চায়।

শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর মুগদা থানার মান্ডা ইউনিয়ন যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মান্ডায় আয়োজিত এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট। ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম সেলিমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ।

এতে বক্তব্য রাখেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা, কেন্দ্রীয় নেতা কাজী আনিসুর রহমান আনিস, মিজানুর রহমান, মনিরুল ইসলাম হাওলাদার, মহানগরের মাইনুদ্দিন রানা, সারোয়ার হোসেন মনা, আনোয়ার হোসেন সান্টু, নাজমুল হোসেন টুটুল, এনামুল হক আরমান, মোরসালিন আহমেদ, জাফর আহমেদ রানা, ফারুক হোসেন, মিজানুর রহমান বকুল, কাজী ইব্রাহিম খলিল মারুফ, আরমান হক, এমদাদুল হক এমদাদ প্রমুখ।

যুবলীগ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী আরো বলেন, প্রধান বিচারপতি অসুস্থতার কারণে ছুটিতে যাওয়ায় হয়ত বিএনপির স্বপ্নভ্ঙ্গ হয়েছে। সে কারণে তারা নানা ধরনের কথাবার্তা বলছে।

তারা অসুখকে ষড়যন্ত্রের সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে। ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল সেনা প্রধান জিয়াউর রহমান বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির শয়নকক্ষে ঢুকে বললেন, 'মি. প্রেসিডেন্ট ইউ আর সিক'। প্রেসিডেন্ট সায়েম তখন বুঝতে পারলেন না। তিনি বললেন, 'নো, আই এম ফাইন'। জিয়া চিৎকার করে বললেন, 'অফ কোর্স ইউ আর সিক; ইউ উ্ইল রিজাইন নাও'। তার ক্ষমতা দখল করলেন জিয়াউর রহমান।

তিনি বলেন, বিএনপি প্রধান বিচারপতির অসুস্থতা নিয়ে এখন কথা বলছেন, সন্দেহ করছেন। এসব সন্দেহ না করে খালেদা জিয়া অসুস্থতার কথা বলে বিদেশে গেলেন, তিনি কী এখনো সুস্থ হননি? কী রোগে তিনি আক্রান্ত জাতি জানতে চায়। আমাদের কাছে খবর আছে, খালেদা জিয়া লন্ডনে বসে ছেলে তারেক রহমানকে নিয়ে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছেন। এ ব্যাপারে যুবলীগকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশিদ বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে। এই নির্বাচনকে ঘিরে এখন ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। সম্প্রতি জামায়াতের নেতারা খালেদা জিয়ার নির্দেশে উত্তরাতে গোপন বৈঠক করেছে। আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে-দেশ স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির হাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকবে নাকি স্বাধীনতা বিরোধীদের হাতে যাবে। যদি স্বাধীনতা-গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে চাই তাহলে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনতে হবে।

সম্মেলনের উদ্বোধক যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে। দেশকে এগিয়ে নিতে এবং রাষ্ট্রীয় নায়ক শেখ হাসিনার ঘোষিত 'মধ্যম আয়ের দেশ' গড়ে তুলতে আগামীতেও আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে হবে। এ জন্য যুবলীগের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে ভ্যানগাড হিসেবে কাজ করতে হবে। আমরা কেউই নেতা নই, সবাই রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার কর্মী। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে দেশ এগিয়ে যাবে। বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাড়াবে। অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসলে দেশে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের উত্থান হবে। দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হবে। কাজেই আগামীতে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনতে হলে যুবলীগের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

মান্ডা ইউনিয়নের সম্মেলনে হাজার হাজার নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ও সুশৃঙ্খল পরিবেশ বজায় রাখায় নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে দক্ষিণের সভাপতি সম্রাট বলেন, দক্ষিণের ওয়ার্ড, ইউনিয়ন এবং থানার নেতাকর্মীদের সহযোগিতায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আজকে শ্রেষ্ঠ জেলা সংগঠনে পরিণত হয়েছে। আমি নেতা নই, রাষ্ট্রীয় নায়ক শেখ হাসিনার কর্মী হিসেবে যুবলীগ চেয়ারম্যানের নির্দেশে যে কর্মসূচি দেই, তা আপনারা পালন করেন।

তিনি বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সংগঠনকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। আমরা চাই একটি ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী সংগঠন। যার মাধ্যমে আগামী দিনে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনতে সক্ষম হবো।

দ্বিতীয় অধিবেশনে মান্ডা ইউনিয়নের কমিটি বিলুপ্ত করে ৭১ ও ৭২ নম্বর ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা হয়। ৭১ নম্বর ওয়ার্ডে হাজী মোহাম্মদ বিপ্লবকে সভাপতি, সৈয়দ আহমেদ সেলিমকে সাধারণ সম্পাদক এবং ৭২ নম্বর ওয়ার্ডে শেখ সেলায়মান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৭২ নম্বরের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনের প্রক্রিয়া চলছিল।  

সম্পর্কিত খবর