দুই শিক্ষার্থী খুন, ঘাতক দুই কিশোর গ্রেপ্তার

দুই শিক্ষার্থী খুন, ঘাতক দুই কিশোর গ্রেপ্তার

পটুয়াখালী প্রতিনিধি:

তুচ্ছ ঘটনার জেরে পটুয়াখালীর বাউফলের ইন্দ্রকূল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির দুই শিক্ষার্থী খুনের ঘটনায় (নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী) কিশোর গ্যাংয়ের দুই ঘাতককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ঘটনার মূলহোতা রায়হান আহমেদসহ অন্য আসামিরা এখনও পলাতক রয়েছেন।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, উপজেলার সূর্যমনি ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের ইন্দ্রকূল গ্রামের দুলাল হাওলাদারের ছেলে সাইদুর রহমান সৈকত (১৪) ও একই গ্রামের আব্দুল জলিল ফরাজীর ছেলে সিফাদ হোসেন (১৪)।

জোড়া খুনের ঘটনায় শুক্রবার দুপুরে রায়হান আহমদেকে প্রধান আসামি করে মোট ৬ জনের নামোল্লেখসহ আরও ৪/৫ জনকে অজ্ঞাতনামা করে মামলা দায়ের করেছেন নিহত নাফিসের মা নার্গিস বেগম।

 

মামলায় উল্লেখিত আসামিরা হলো, রায়হান আহমেদ, সাইদুর রহমান সৈকত, মো. হাসিব, সিফাদ হোসেন, নাঈম (১) ও নাঈম (২)। এদের সবার বাড়ি পাশাপাশি ইন্দ্রকূল ও পাংগাশিয়া গ্রামে। তারা একই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র।

বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন জানান, দুই শিক্ষার্থী খুনের ঘটনায় জড়িত থাকায় শুক্রবার ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন নিহত শিক্ষার্থী নাফিসের মা নার্গিস বেগম।

এর আগে শুক্রবার ভোর রাতে অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িত দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।  

পুুলিশের একটি সূত্র জানায়, গভীর রাতে ঘাতক সৈকত বাউফলের কালাইয়া থেকে ট্রলারযোগে ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন পালিয়ে যাওয়ার সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় ট্রলার থেকে সৈকতকে গ্রেপ্তার করা হয়। সৈকতের দেয়া তথ্য মতে ইন্দ্রকূল গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে অপর এক ঘাতক সিফাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সম্প্রতি ইন্দ্রকূল গ্রামের পার্শ্ববর্তী পাঙ্গাশিয়া গ্রামের একটি মাহফিল বসে কথাকাটাকাটির জের ধরে গত বুধবার স্কুল চলাকালীন সময়ে নবম শ্রেণির ছাত্র রায়হান, সৈকত, হাসিব গংরা দশম শ্রেণির ছাত্র মারুফকে ধাক্কা দেয়। এর প্রতিবাদ করার পরই ওঁৎ পেতে থাকে রায়হান, সৈকত, হাসিবসহ কিশোর গ্যাংয়ের একদল কিশোর। পরে ৪টার দিকে স্কুল ছুটি হলে দশম শ্রেণির নাফিস, মারুফ, সিয়ামসহ কয়েকজন ছাত্র বাড়িতে যাওয়ার সময় বিদ্যালয়ের অদূরে ব্রীজের কাছে পৌঁছালে ছুড়ি দিয়ে হামলা চালিয়ে পালিয়ে যায়। এতে দশম শ্রেণির তিন ছাত্র রক্তাক্ত জখম হয়।  

পরে স্থানীয়রা গুরুতর রক্তাক্ত আহতবস্থায় শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে বাউফল উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ৭টায় ইন্দ্রকূল গ্রামের মিরাজ মোস্তফার ছেলে নাফিস (১৫) ও বাবুল হাওলাদারের ছেলে মারুফ (১৫) মারা যায়। এছাড়াও এনামুল মৃধার ছেলে মো. সিয়াম (১৫) বর্তমানে আশঙ্কামুক্ত অবস্থায় বাউফল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।  

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে নিহত দুই শিক্ষার্থীর জানাজার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।  

news24bd.tv/কেআই