ক্ষতিপূরণ পেল ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজা ‘বাংলার সমৃদ্ধি’
ক্ষতিপূরণ পেল ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজা ‘বাংলার সমৃদ্ধি’

সংগৃহীত ছবি

ক্ষতিপূরণ পেল ক্ষতিগ্রস্ত জাহাজা ‘বাংলার সমৃদ্ধি’

অনলাইন ডেস্ক

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের ক্ষতিপূরণ বাবদ ২ কোটি ২৪ লাখ ৮০ হাজার ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি)। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এ ধরনের বিমা দাবি প্রথমবার নিষ্পত্তি শুরু করেছে বিমাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের বিমাকারী সাধারণ বিমা করপোরেশনের (এসবিসি) পর্ষদে অনুমোদনের পর পুনঃবিমাকারী প্রতিষ্ঠান ইংল্যান্ডের লয়েডস অব লন্ডন ইন্স্যুরার বিজলি এবং টাইজার ইন্স্যুরেন্স ব্রোকারস লিমিটেডের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে বিমা দাবি নিষ্পত্তি করা হয়েছে।  

২০২২ সালের ২ মার্চ ইউক্রেনের কৃষ্ণসাগরের অলভিয়া বন্দরে নোঙর করা বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজটিতে রকেট হামলা হলে আগুন ধরে যায়।

এতে ঘটনাস্থলেই জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান নিহত হন। আহত হন বেশ কয়েকজন। ঘটনার পর জাহাজটি ঘটনাস্থলেই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয় এবং নাবিকসহ সব সদস্যকে উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।  

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, যুদ্ধ চলমান থাকায় বিদেশি জাহাজের জন্য কোনো নিরাপদ পথের নিশ্চয়তা দেয়নি রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ।

ফলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বিধ্বস্ত জাহাজটি এখনো অলভিয়া বন্দর এলাকাতেই রয়ে গেছে। জাহাজটি ওই এলাকা থেকে বের করে আনা যায়নি। ঘটনার ১২ মাস পার হয়ে গেছে। তাই বিমাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বিমা আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জাহাজটির মোট ক্ষতি নির্ধারণ ও বিক্রি করে দিয়েছে। একই সঙ্গে পরবর্তী আনুষ্ঠানিকতা শেষে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনকে বিমা দাবির অর্থ প্রদান করেছে।  

সাধারণ বিমা করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, জাহাজটি নির্মাণের মোট ক্ষতি ঘোষণার পর মার্শাল আইল্যান্ডের স্টর্ক শিপিং কোম্পানির কাছে ১২ লাখ ৭৫ হাজার ডলারে বিক্রি করা হয়েছে। এই অর্থের মধ্যে সাধারণ বিমা করপোরেশন পেয়েছে ৩৩ হাজার ৭৪৭ ডলার এবং বাকি ১২ লাখ ৪১ হাজার ডলার পেয়েছে পুনঃবিমাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। পুনঃবিমাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষতিপূরণের ৯৭ দশমিক ৫ শতাংশ এবং সাধারণ বিমা করপোরেশন ২ দশমিক ৫ শতাংশ দায় পরিশোধ করেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাধারণ বিমা করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ বেলাল হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, গত সোমবার আমরা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনকে বিমা দাবির মোট ২ কোটি ২৪ লাখ ৮০ হাজার ডলার পরিশোধ করেছি।  

তিনি আরও বলেন, এই অর্থ আমরা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের বৈদেশিক মুদ্রা অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করেছি।

এর আগে সাধারণ বিমা করপোরেশন বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের নাবিকদের ক্ষতিপূরণ এবং প্রত্যাবাসনের জন্য ৮ লাখ ৫৮ হাজার ৬৩০ ডলারের দাবি নিষ্পত্তি করেছে। এই অর্থের মধ্যে থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের মৃত্যু দাবিও রয়েছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে রাশিয়া যখন ইউক্রেন আক্রমণ করে, ওই সময়ে এ ধরনের হামলার ঘটনা ঘটার আশঙ্কায় ইংল্যান্ডের পুনঃবীমা প্রতিষ্ঠানগুলো কৃষ্ণসাগরকে জাহাজ চলাচলের জন্য একটি উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল ঘোষণা করেছিল। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে ৬০টিরও বেশি জাহাজ ইউক্রেনের জলসীমায় আটকা পড়েছিল এবং এক বছর অতিবাহিত হওয়ার পর এখন বিমা দাবিকারীরা কোটি কোটি ডলারের দাবি পেতে শুরু করেছে। ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে ৩৮ হাজার ৮৯৬ ডেড ওয়েট টনের ধারণ ক্ষমতার জাহাজটি চীনের এক্সিম ব্যাংকের অর্থায়নে কিনেছিল বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।

news24bd.tv/আইএএম