আরেক দফা বাড়ছে বিদ্যুতের দাম

সংগৃহীত ছবি

আরেক দফা বাড়ছে বিদ্যুতের দাম

অনলাইন ডেস্ক

গ্রাহক পর্যায়ে আরও ৫ শতাংশ বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ঈদুল ফিতরের ছুটির পর সরকারের নির্বাহী আদেশে এই দাম বাড়ানোর ঘোষণা আসতে পারে বলে বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে। ভর্তুকির চাপ কমাতে গত জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি দুই মাসে গ্রাহক পর্যায়ে তিন ধাপে ৫ শতাংশ করে ১৫ শতাংশ বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়।

সর্বশেষ গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিদ্যুতের খুচরা দাম ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়, যা মার্চ থেকে কার্যকর হয়েছে।

এর আগে গত ৩০ জানুয়ারি বিদ্যুৎ বিভাগ পাইকারি পর্যায়ে ৮ শতাংশ এবং গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ৫ শতাংশ বাড়ানোর প্রজ্ঞাপন জারি করে। ওই দাম ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হয়। এরও আগে ১২ জানুয়ারি নির্বাহী আদেশে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ৫ শতাংশ বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

তিন ধাপে গ্রাহক পর্যায়ে ১৫ শতাংশ বাড়ানোর পর এখনো ইউনিটপ্রতি বিদ্যুৎ সরবরাহে লোকসান হচ্ছে বলে বিদ্যুৎ বিতরণ কম্পানিগুলোর কর্মকর্তারা জানান।

এ ছাড়া বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গত ২১ নভেম্বর বিদ্যুতের পাইকারি দাম ১৯.৯২ শতাংশ বাড়িয়েছিল, যা গত ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়।

গত ১৮ জানুয়ারি শিল্প, বাণিজ্যিক ও বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে গ্যাসের দাম প্রতি ঘনমিটারে সর্বোচ্চ ১৭৯ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। গ্যাসের বর্ধিত দরও ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হয়। গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি এই দুই মাসের মধ্যে চার দফায় গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘটনা ঘটল, যা দেশের ইতিহাসে বিরল। আগে কখনো এত কম সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়েনি বলে খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান।

ফের বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়ে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন করে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর বিষয়ে এরই মধ্যে বিদ্যুৎ বিভাগ অর্থ বিভাগের সঙ্গে কাজ শুরু করেছে। ঈদুল ফিতরের ছুটির পরপরই নতুন দাম ঘোষণা করা হতে পারে।

গ্রাহক পর্যায়ে দাম বাড়লেও আপাতত আর পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কোনো চিন্তা নেই বলেও কর্মকর্তারা জানান।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে ভোক্তারা এমনিতেই অনেক চাপের মধ্যে আছে, তার ওপর একের পর এক বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির চাপ ভোক্তার পক্ষে বহন করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। লাগাতার বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির প্রভাবে নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে, সামনে আরো বেড়ে যেতে পারে। নতুন করে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির চাপে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে দেশের শিল্প-কারখানাও।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সরকার বাজেট সহায়তা হিসেবে আইএমএফ’র ঋণ নিচ্ছে। সেখানে আইএমএফ ভর্তুকি সংস্কারের জন্য বলেছে।

জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে সরকার সবচেয়ে বেশি ভর্তুকি দেয়। সেই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গ্যাস ও বারবার বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে।

বিদ্যুৎ বিতরণ কম্পানিগুলোর কর্মকর্তারা বলছেন, বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) কাছ থেকে পাইকারি বিদ্যুৎ কিনে গ্রাহক পর্যায়ে বিক্রি করে এখনো তাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো না হলে লোকসানের পরিমাণ আরো বাড়বে।

ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী বিকাশ দেওয়ান বলেন, ‘যে হারে পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে, সেই হারে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়নি। ’

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ম. তামিম বলেন, ‘এভাবে একের পর এক গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি নিশ্চিতভাবেই বলা যায় বাজারে পণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে। এতে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। ’

news24bd.tv/আইএএম