‘কিডনি বিক্রি করে আইফোন কেনা’- এমন কথা তো নিশ্চই শুনেছেন। বাস্তবে কেউ কিডনি বিক্রি করে আইফোন কিনুক বা নাই কিনুক; বাড়িতে তৈরি রুটি বিক্রি করে আইফোন কিনে ফেলেছেন ১২ বছরের কিশোরী বিয়াংকা জেমি ওয়ারিয়াভা। রুটি বিক্রির ছয় সপ্তাহের আয় দিয়ে আইফোন ১৪ মডেলের ফোনটি কেনেন তিনি।
ভারতীয় বাবা ও ফিলিপিনো মায়ের সন্তান বিয়াংকা থাকেন দুবাইয়ে।
তার মনে পড়ে, একদিন তার মা স্কুলের টিফিন হিসেবে কিছু রুটি বানিয়ে দিয়েছিলো। সেগুলো বন্ধুদের সঙ্গে ভাগাভাগি করেই খেয়েছিল সে। তুলতুলে রুটি ও মজাদার স্বাদের কারণে বন্ধুরা খুব মজা করেই খেয়েছিল। তারা এতটা মজা পেয়েছিলো যে তাকে আরও রুটি নিয়ে যেতে অনুরোধ করে। রুটিগুলো বিনামূল্যে দেওয়ার পরিবর্তে বিক্রি করার পরামর্শ দেয় তার এক বন্ধু। সে চিন্তা করে রুটি বিক্রির টাকা দিয়ে আইফোন কিনতে পারবে সে।
বিয়াংকার বাবা-মা দুজনেই ফাইভ স্টার হোটেলের বেকারিতে কাজ করেন। বিয়াংকার পরিকল্পনার কথা জানতে পেরে তাকে সাহায্য করেন তারা। বিয়াংকার বাবা তাকে প্রাথমিক ১০০ দিরহাম মূলধন দেন। আর তার মা তাকে রুটি বানাতে সাহায্য করেন।
প্রথমদিন মাত্র দুটি রুটি বিক্রি হয় বিয়াংকার, তবে সে থেকে যায়নি। চারটি রুটি ১০ দিরহাম করে বিক্রি করতেন তিনি। ক্রমেই তার রুটির চাহিদা বাড়তে থাকে। একসময় গড়ে দৈনিক ৬০টির মত রুটি বিক্রি হতে থাকে তার।
বিয়াংকা জানান, নানান ফ্লেভারের রুটি বানাতেন তিনি। প্লেইন সফট রোল, ওরিও, উবে, পনির, এবং চিকেন ফ্র্যাঙ্কসের মত ফ্লেভারের রুটি বানাতেন তিনি। তার সহপাঠী ও শিক্ষকরা এই রুটির প্রেমে পড়ে যায়।
প্রতিদিন সন্ধ্যায় পড়াশোনা শেষ করে রুটি বানাতেন তিনি। আর আগের দিন পাওয়া অর্ডার অনুযায়ীই রুটি বানাতেন। ফেব্রুয়ারিতে শুরু করে মার্চ নাগাদ ৩ হাজার দিরহামের বেশি টাকা জমা হয়ে যায় তার। ১২ বছরের বিয়াংকার বাড়িতে যেদিন আইফোন ১৪ মডেলের স্মার্টফোনটির ডেলিভারি আসলো, সেদিনের কথা হয়তো কখনোই ভুলতে পারবেন না তিনি।
তিনি জানান কাজটি মোটেই সহজ ছিলো না। সহপাঠীদের অনেকেই তার এই কাজের জন্য টিপ্পনি কাটতেন। এমনকি তার পরিবারের আর্থিক অবস্থা নিয়েও প্রশ্ন তুলতেন অনেকে। এখানেই থেমে যেতে চান না ক্ষুদে এই উদ্দোক্তা। নিজের বেকারি ও কফি শপ দিতে চান।
সূত্র: খালিজ নিউজ।
news24bd/ARH