ঈদ যাত্রায় ২৬ স্পটে দুর্ভোগের শঙ্কা

সংগৃহীত ছবি

ঈদ যাত্রায় ২৬ স্পটে দুর্ভোগের শঙ্কা

অনলাইন ডেস্ক

এবারের ঈদ যাত্রায় রাজধানী থেকে সড়কপথে ঘরে ফেরা মানুষদের অন্তত ২৬টি স্পটে ভোগান্তির শিকার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সবচেয়ে বেশি ভুগতে হতে পারে উত্তরাঞ্চলের যাত্রীদের। ময়মনসিংহ অঞ্চলের যাত্রীদেরও ভোগাবে গাজীপুরের কিছু অংশ। দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের জন্যও রয়েছে দুর্ভোগের আভাস।

সে হিসাবে তুলনামূলক স্বস্তি রয়েছে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ও সিলেটের পথে।

সারা দেশে দুর্ঘটনাসহ তীব্র যানজটের আশঙ্কা রয়েছে এমন ২৬টি স্পট চিহ্নিত করেছে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ। দুর্ভোগের কারণ হিসেবে সড়ক সংস্কারের কাজ, সড়কের পাশে অস্থায়ী দোকানপাট ও মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচলকে চিহ্নিত করেছেন অনেকেই। ঘরমুখো মানুষের ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে গুরুত্বপূর্ণ এসব স্পটে ঈদের আগে ও পরে সাত দিন নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে বলে জানা গেছে।

সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের ঈদ প্রস্তুতির কার্যপত্রের নথির তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের যাত্রীদের ভোগাবে হেমায়েতপুর, সাভার বাজার, নবীনগর ও আরিচা ঘাট এলাকা। ঢাকা থেকে গাজীপুর হয়ে ময়মনসিংহের পথে ভোগাবে টঙ্গীর স্টেশন রোড, এরশাদনগর, ভোগড়া বাইপাস ও জয়দেবপুর চৌরাস্তা। ঢাকা থেকে গাজীপুর ও টাঙ্গাইল হয়ে বগুড়ার পথে সাভারের বাইপাইল, চন্দ্রা, চান্দিনা, এলেঙ্গা, বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব ও পশ্চিম প্রান্ত এবং সিরাজগঞ্জের কড্ডার মোড়ে তীব্র যানজটের আশঙ্কা রয়েছে। সড়ক ও জনপদ সূত্রে জানা গেছে, টঙ্গীর স্টেশন রোড, বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম প্রান্তে ও এলেঙ্গা এলাকায় সড়ক নির্মাণ ও সংস্কার কাজ চলছে।

এদিকে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ও সিলেট যাওয়ার পথে মদনপুর, শিমরাইল বাসস্ট্যান্ড, কাচপুর সেতু ও মেঘনা টোল প্লাজা এলাকায় যানজট সৃষ্টি হতে পারে। ঢাকা থেকে তিন শ ফিট এলাকা হয়ে নরসিংদী যেতে কাঞ্চন সেতু ও ভুলতা গাউছিয়া মোড়ে যাত্রীদের দুর্ভোগের আশঙ্কা রয়েছে।

দক্ষিণের পথে বড় যানজট হতে পারে পদ্মা সেতুর দুই পারে। ঢাকা থেকে মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে প্রবেশ অংশে, ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের পদ্মা সেতুসংলগ্ন মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুর ও ভাঙ্গা অংশে যানজটের আশঙ্কা রয়েছে।

গতকাল রবিবার রাজধানী বনানীতে অবস্থিত বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়ে ঈদুল ফিতর উদযাপন উপলক্ষে সড়কপথে যাত্রীদের যাতায়াত নিরাপদ করতে মতবিনিময়সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সড়কে ঈদ যাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে করণীয় সম্পর্কে একটি কার্যপত্র উপস্থাপন করা হয়।

সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বেশ কিছু সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে ঈদের সাত দিন আগেই সড়কের চলমান মেরামতের কাজ শেষ করা, ঢাকায় প্রবেশ ও বের হওয়ার মুখে বিশেষ পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা করা, মহাসড়কের পাশে অস্থায়ী ও ভাসমান বাজার অপসারণ করা, সড়কে ফিটনেসবিহীন ও ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি চলাচল বন্ধ করা, মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল বন্ধ করা, ঈদের আগের তিন দিন পণ্যবাহী যান চলাচল বন্ধ রাখা এবং পণ্য পরিবহনের যানে যাত্রী পরিবহন না করা। পাশাপাশি গার্মেন্ট কারখানার শ্রমিকদের কয়েক ধাপে ছুটি প্রদানের পরামর্শ দেওয়া হয়। যানজটের হটস্পটগুলোতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে বলেও সভায় জানানো হয়।

সভায় পরিকল্পনা ও প্রস্তাবের কথা জানিয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এখানে সবাই পরিকল্পনার কথা বললেন, কিন্তু গার্মেন্ট মালিকরা কি সেটা শুনবেন? প্রতিবারই নির্দেশনা দেওয়া হয়। কিন্তু পালন করেন কয়জন?’

মন্ত্রী বলেন, ‘সড়কের কিছু জায়গায় সমস্যা আছে ঠিকই, কিন্তু আমাদেরও শৃঙ্খলার অনেক অভাব। ঈদের সময় আমাদের অনেক ভিআইপি—তাঁরা রাস্তার রং সাইডে চলাচল করেন। একটু জটলা দেখলেই তাঁরা রং সাইডে চলে যান। এখন অসাধারণ মানুষ যদি আইন না মানে, সাধারণ মানুষের দোষ কী? প্রথমে অসাধারণদের আইন মানতে হবে। ’ যানজটের প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এই কষ্টটা দূর করতে পারছি না। এই কষ্ট আমারও আছে। ’

জানতে চাইলে যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শামছুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সব গাড়ির চাপ সড়কে একসঙ্গে হলে ভোগান্তি কমানো যাবে না। অতীতেও এর বেশির ভাগ জায়গায় ভয়াবহ যানজটের অভিজ্ঞতা রয়েছে। সড়কে ভোগান্তি কমাতে সুশৃঙ্খল ট্রাফিক ব্যবস্থার বিকল্প নেই। ’

news24bd.tv/আইএএম

এই রকম আরও টপিক