ওষুধ না পেয়ে কর্মচারীকে ছাত্রলীগের মারধর

সেবা ফার্মেসির আহত কর্মচারী শুভ

ওষুধ না পেয়ে কর্মচারীকে ছাত্রলীগের মারধর

নিউজ টোয়েন্টিফোর ডেস্ক

ওষুধ না পেয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের সামনের এক ফার্মেসির কর্মচারীকে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে মাথা ফাটিয়ে দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রলীগের দুই নেতা।  

এ ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগের দুই নেতাকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে সুপারিশ করেছে ঢাবি ছাত্রলীগ। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত কেন্দ্রীয় কমিটি তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

বহিষ্কারের সুপারিশপ্রাপ্ত ছাত্রলীগের দুই নেতা হচ্ছেন- শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমির হামজা ও তার সহযোগী সলিমুল্লাহ মুসলিম হল শাখা ছাত্রলীগের স্কুল ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন ঝন্টু।

 

এদের মধ্যে আমির হামজার বিরুদ্ধে পলাশীতে দোকান বসিয়ে চাঁদাবাজি, বাটা সিগনাল মোড়ে কোটা আন্দোলনকারীদের মারধর, লাইব্রেরির সামনে চাপাতি হাতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতা নুরের ওপর হামলা, মাদক ব্যবসায় জড়িত থাকাসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার সন্ধ্যায় ঢামেক হাসপাতালের সামনে অবস্থিত সেবা ফার্মেসিতে ওষুধ আনতে যায় আমির হামজা ও তার সহযোগী দেলোয়ার হোসেন ঝন্টু। দোকানে ওষুধ না থাকায় ক্ষেপে যায় আমির হামজা। এ নিয়ে শুরু হয় বাকবিতণ্ডা।

 

এ সময় শুভ (২৮) নামে ওই ফার্মেসির এক কর্মচারীকে বেধড়ক মারধর শুরু করে আমির হামজা ও দেলোয়ার। এক পর্যায়ে হাতের কাছে পাওয়া লোহার পাইপ দিয়ে শুভর মাথায় আঘাত করে হামজা। এতে তার মাথা ফেটে যায়।  

পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তার মাথায় ৮টি সেলাই দেয়া হয়েছে।  

এদিকে, ওই ছাত্রলীগ নেতাকে ফেরাতে গিয়ে লাঞ্ছিত হয়েছেন সেবা ফার্মেসির মালিক ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. শহীদুর রব পেনু।  

এ বিষয়ে শহিদুর রব পেনু বলেন, ‘আমির হামজা ও দেলোয়ার হোসেন তার দোকানে কিছু ওষুধ কিনতে আসেন। ওই ওষুধগুলো তার দোকানে ছিল না। তখন আমির হামজা অন্য জায়গা থেকে ওষুধগুলো নিয়ে আসতে বলেন। শুভ তা আনতে অপরাগতা প্রকাশ করলে তিনি ক্ষেপে যান। এক পর্যায়ে মাথায় লোহার পাইপ দিয়ে উপর্যপুরি আঘাত করতে থাকেন। তাকে ফেরাতে গেলে আমাকেও সে লাঞ্ছিত করে। ’

তিনি বলেন, ‘আমার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ততার (মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক) কথা বললেও সে থামেনি। ’ 

তবে ছাত্রলীগ নেতা আমির হামজার দাবি, তিনি ওষুধ কিনতে গেলে ওই কর্মচারী গালিগালাজ করলে তার সঙ্গে হাতাহাতি হয়।

ঘটনার একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, হামলা শেষে আমির হামজা ও দেলোয়ার দোকানে তালা লাগিয়ে দেন। আর এই তালার চাবি দেয়া হয় এস এম হল ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি মেহেদী হাসানের কাছে। এর আগে মেহেদীর বিরুদ্ধে নানা অপকর্মে জড়ানোর অভিযোগ রয়েছে।  

এদিকে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস। তারা গিয়ে দোকানের তালা খোলার ব্যবস্থা করেন এবং ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

এদিকে, এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আমির হামজা ও দেলোয়ার হোসেন ঝন্টুকে সংগঠন থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে ঢাবি ছাত্রলীগ। ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।



অরিন▐ NEWS24

সম্পর্কিত খবর