একমাত্র আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক চর্চা করে: শেখ হাসিনা

সংগৃহীত ছবি

একমাত্র আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক চর্চা করে: শেখ হাসিনা

অনলাইন ডেস্ক

দেশে একমাত্র আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক চর্চা করে এবং আওয়ামী লীগের সময়ই দেশে সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা থাকে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) স্থানীয় সন্ধ্যায় টোকিও’র একটি হোটেলে জাপানে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের সংবর্ধণা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একমাত্র আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক চর্চা করে। আর আওয়ামী লীগের সময় সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা থাকে।

দেশে গণতন্ত্র নেই এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, তারা বলছে গণতন্ত্র নাই, তো মিলিটারি ডিকটেটর থাকলে গণতন্ত্র থাকে? ভোট চুরি করলে গণতন্ত্র থাকে? হ্যাঁ-না ভোট গণতন্ত্র? কারচুপি করা সেটা গণতন্ত্র?

তিনি বলেন, আর আওয়ামী লীগ আমরা ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরি করা, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, আইডি কার্ড, ভোটের একটা সুস্থ ব্যবস্থা করেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগের সরকার আমলে যতগুলো উপ-নির্বাচন হয়েছে, যতগুলো স্থানীয় সরকার নির্বাচন হয়েছে। স্থানীয় নির্বাচনে আপনারা জানেন নিজেদের মধ্যে ওই ওয়ার্ড বা কমিশনার তাদের মধ্যে কিছু ঘটনা ঘটে, কিন্তু প্রত্যেকটা নির্বাচন আমরা সুষ্ঠুভাবে করতে পেরেছি। কিন্তু এর আগের নির্বাচনগুলো কি হতো?

সম্প্রতি নতুন রাষ্ট্রপতির কাছে পুরাতন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহামান্য রাষ্ট্রপতি হামিদ সাহেব আমাদের দুই টার্ম রাষ্ট্রপতি ছিলেন।

বাংলাদেশে এটা একটা ইতিহাস। বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো রাষ্ট্রপতি এতদিন ক্ষমতায় থাকতে পারেননি, সুষ্ঠুভাবে বিদায় নিতে পারেননি। জাতির পিতাকে তো হত্যা করেই ফেললো। এরপর যারা আসলো তাদেরকে একে একে অস্বাভাবিকভাবেই বিদায় নিতে হয়েছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, একমাত্র আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক চর্চা করে। আর আওয়ামী লীগের সময় সুষ্ঠু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা থাকে। আর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা থাকে বলেই আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে আমরা একেবারে রাজকীয় সম্মান দিয়ে বিদায় দিয়েছি। নতুন রাষ্ট্রপতিকেও আগে আমরা নির্বাচন করিয়েছি। তারপরে তারা একই জায়গায় বসে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছে।

তিনি বলেন, আজ পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা হস্তান্তর, বিদায়ী রাষ্ট্রপতি বা নতুন রাষ্ট্রপতি এত সুন্দর ব্যবস্থাপণা কোনো দিন হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আছে বলেই এই ইতিহাসটা আমরা তৈরি করতে পারলাম।

শেখ হাসিনা বলেন, এটাই গণতান্ত্রিক চর্চা, এটাই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা। এটাকে গণতন্ত্র বলে। পোটলা দিয়ে বের করে দেওয়া এটা কিন্তু গণতন্ত্র নয়।

জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া এবং বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, জাতির পিতাকে হত্যার পর ক্ষমতা পরিবর্তন হয়েছে বারবার, কিভাবে? গণতন্ত্র তো ছিলই না। ভোট, ওই হ্যাঁ-না বাক্সে ভোট, না বাক্স খুঁজে পাওয়া না, সব হ্যাঁ বাক্স সেটা জিয়াউর রহমানের আবিস্কার। ভোট নিয়ে খেলা, মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া এই কাজটা তো শুরু করে দিল বিএনপি। ক্ষমতা দখল করেই রাজনৈতিক নেতা বনে গেলো।

তিনি বলেন, জিয়ার আমলের নির্বাচন, নির্বাচন তো না মানুষকে ধোকা দিয়ে, মানুষের ভোট চুরি করে ক্ষমতায় থাকার কালচার শুরু করে জিয়াউর রহমান। তাকে অনুসরণ করে মিলিটারি শাসক এরশাদ এবং খালেদা জিয়া।

শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতাকে হত্যার পর স্বাধীনতার ৫০ বছরের মধ্যে ২৯ বছর দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ছিল না। কোনো গণতন্ত্র ছিল না এবং গণতান্ত্রিক শাসক ছিল না।

দেশে গণতন্ত্র নেই এমন অভিযোগের জবাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি পাল্টা প্রশ্ন ছুঁড়ে বলেন, কেন? বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি বলে। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট মাত্র ৩০টি সিট পেয়েছিল, যেখানে বাকি সিটগুলো আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট পেয়েছে।

বিএনপির নির্বাচনে না প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পরবর্তীতে তারা আগুণ সন্ত্রাস করেছে। আর আওয়ামী লীগ সরকার তো দেশের উন্নয়ন করেছে। ওরা কোন মুখে নির্বাচন করবে, কোন মুখে মানুষের কাছে ভোট চাইবে। যার কারণে বিএনপি ২০১৪ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি।

প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে সবাইকে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান এবং দেশকে এসব থেকে মুক্ত রাখতে সচেতন হওয়ার অনুরোধ করেন।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার আমন্ত্রণে মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) দ্বিপক্ষীয় সফরে টোকিও আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।