ইন্দোনেশিয়ায় গভীর সাগরে নোঙর করে কাঠের তৈরি ভেলায় বাতি জ্বালিয়ে রাতে মাছ ধরার চল বহুদিন ধরে। সেখানে এ ধরনের ভেলাকে বলা হয় রমপং।
প্রতি সপ্তাহে ওই ভেলায় প্রয়োজনীয় খাবার, পানি এবং জ্বালানি সরবরাহ করা হয়। একই সঙ্গে ডাঙ্গায় নিয়ে যাওয়া হয় শিকার করা মাছ।
রোদ-বৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য ভেলার ওপর ছাউনি দেওয়া একটি কুঁড়ে ঘর বানানো থাকে ওই ভেলায়। খবর বিবিসিরজুলাই মাসের মাঝামাঝি তেমনি একটি রমপংয়ে মাছ ধরছিল ইন্দোনেশিয়ার সুলাওসি দ্বীপের ১৯ বছরের তরুণ আলদি নোভেল আদিলাং।
কিন্তু ১৪ই জুলাই এক ঝড়ে তার ওই ভেলার নোঙর ছিঁড়ে গেলে চরম বিপদে পড়ে ওই তরুণ। গভীর সাগরে নিয়ন্ত্রণহীনভাবে ভাসতে থাকে তার মাছ ধরার ওই ভেলা।
ভাসতে ভাসতে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে চলে যায় আদিলাংয়ের ওই ভেলা। ৪৯ দিন পর গুয়াম দ্বীপের কাছে পানামার একটি পণ্যবাহী জাহাজ তাকে উদ্ধার করে।
এই ৪৯ দিন আদিলাং কীভাবে বেঁচে ছিল - জাকার্তা পোষ্ট পত্রিকাকে তা বলেছেন ইন্দোনেশীয় কূটনীতিক ফাজার ফিরদৌস।
ভেলার ওপর কুঁড়েঘরের কাঠ ভেঙে তা দিয়ে সাগরের মাছ ধরে সেদ্ধ করে খেয়েছে সে। জমা করা পানি ফুরিয়ে গেলে দিনে পর দিন সাগরের পানি খেয়েছে।
ভয়ে সিঁটকে থাকতো, প্রায় কান্নাকাটি করতো, জাকার্তা পোষ্ট পত্রিকাকে বলেছেন ইন্দোনেশীয় কূটনীতিক ফাজার ফিরদৌস।
জাহাজ দেখলে সাহায্যের জন্য চিৎকার করতো কিন্তু লাভ হত না।
১০টিরও বেশি জাহাজ তার ভেলার কাছ দিয়ে চলে গেছে, কিন্তু কেউ থামেনি, কিম্বা তাকে দেখেনি।
পরে ৩১শে অগাস্ট এমভি আরপিগিও নামে পানামার পতাকাবাহী একটি জাহাজ গুয়াম দ্বীপের কাছে তাকে উদ্ধার করে।
জাহাজের ক্যাপ্টেন গুয়ামের উপকূলরক্ষীদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা আদিলাংকে জাপানে নিয়ে যেতে বলা হয়।
৬ই সেপ্টেম্বর তাকে জাপানে নেওয়া হলে, ইন্দোনেশিয়ার দূতাবাসের সহযোগিতায় দুদিন পর দেশে ফিরে যায় আদিলাং।
(নিউজ টোয়েন্টিফোর/তৌহিদ)